টেকভিশন২৪ ডেস্ক: যৌক্তিক চিন্তাভাবনার জন্য প্রোগ্রামিং শিখতে হবে। যদি কেউ প্রোগ্রামিং বা কোডিং জানে তাহলে তার কাছে পৃথিবীর কোন কাজই কঠিন না। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিয়ে আয়োজিত তিন দিনের স্ক্র্যাচ প্রোগ্রামিং ক্যাম্পে শিক্ষকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা ও সমাপনী অনুষ্ঠানে একথা বলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
শনিবার (৪ জুলাই) বিকেলে লালমাটিয়া আপন উদ্যোগ ফাউন্ডেশনে ইএমকে সেন্টার ও বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্কের যৌথভাবে আয়োজিত প্রাথমিক শিক্ষায় কোডিং শিক্ষক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম প্রণয়ন ক্যাম্পের তৃতীয় দিনের সমাপনী অনুষ্ঠানে ২১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অংশগ্রহণকারী শিক্ষকের সঙ্গে মতবিনিময় করেন মন্ত্রী।
স্ক্র্যাচ প্রোগ্রামিং নিয়ে এমন উদ্যোগে শিক্ষকদের অংশগ্রহণ করায় ধন্যবাদ জানান ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী। এসময় তিনি আরও বলেন, এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম প্রণয়নের মাধ্যমে আপনারা এমনভাবে প্রোগ্রামিং শেখানোর পদ্ধতি তৈরি করবেন, যেন শিক্ষার্থীদের প্রোগ্রামীং ভীতিটা গোড়া থেকেই দূর করে দিতে হবে। যেন তারা বড় হয়ে সফটওয়্যারভিত্তিক জটিল সব সমস্যা সমাধান করতে পারে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট লেখক ও শিক্ষাবিদ ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল। তিনি বলেন, সব কিছুর মূল সমাধান লুকিয়ে আছে শিক্ষায়। যখনই কোন সমস্যা হয়, আমি বলি, সর্বক্ষেত্রে শিক্ষা বিস্তার করো। এতেই সমাধান হয়ে যাবে। আপনারা শিক্ষার্থীদের জীবনযাপনের জন্য এই কাজটিই করছেন। উপস্থিত শিক্ষকদের হাতে তিনি সার্টিফিকেট তুলে দিয়ে একথা বলেন।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের প্রাথমিক শিক্ষাক্রম কমিটির সদস্য প্রফেসর ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, নতুন কারিকুলাম অনুযায়ী প্রাথমিক শিক্ষায় স্ক্র্যাচ প্রোগ্রামিং তৃতীয় শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে যুক্ত করা হয়েছে। নতুন কারিকুলামে পরীক্ষা পদ্ধতির মূল্যায়ন বদল করা হয়েছে। এছাড়া ধারাবাহিক মূল্যায়নের উপরে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া শেখানোর ব্যাপারে তিনি শিক্ষকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
ইএমকে সেন্টারের প্রোগ্রাম অফিসার আয়শা সিদ্দিকা বিডিওএসএন-কে ধন্যবাদ জানান এই প্রকল্প পরিচালনা করার জন্য।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন সোয়াপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পারভেজ হোসাইন। তিনি বলেন, দরিদ্র শিক্ষার্থীদের স্বল্প মূল্যে ডিজিটাল ডিভাইস দেওয়া সম্ভব হয় ইলেক্ট্রনিক যন্ত্র রিসাইকেল করার মাধ্যমে।
বাংলাবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ইসরাত জাহান বলেন, শিক্ষার্থীরা প্রোগ্রামিং বা কোডিং শব্দটাকে ভীতি তৈরি হতে পারে। প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের খেলার মাধ্যমে প্রোগ্রামিং শেখানো যেতে পারে।
ক্যাম্পে অংশগ্রহণকারী শিক্ষকরা হলেন, হাজি সদর আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের রওনক আফরোজা, ৪৫ নং মাধায়াপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের লাবনী রাণী সাহা, নামা কাতলাচাঁন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শাহ আলম, ইখারি কাতেঙ্গা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের লিপিকা পাত্র, আদবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মোসা. হানিফা সুলতানা, গোকুলনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সালমা বেগম, বোগোইর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ফানসিনা আলম, রোকুন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জোবেদা আক্তার,পিরপুর ২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাজিম উদ্দীন জুয়েল, খিদিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এ টি এম আশরাফুল আলম, নুমাগড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নুসরাত শায়লা, হাতিরদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাহবুবুল আলম, বাংলাবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ইসরাত জাহান, তেঁতুলিয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মোঃ মাসুদ রানা, শাআন্তাহার হারভি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের রতন কুমার বসাক, পল্লি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বি এম অসিউন, ওয়ারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সখীনুর আকতার, নবাব ফয়জুন্নেসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আনিসুর রহমান, কারেক্টরেটস স্কুল অ্যান্ড কলেজের মোঃ আল আমীন, কাউনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মহিমা বেগম, বনশ্রী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের রায়হানা হক।
আগামী চার মাস ক্যাম্পে অংশগ্রহণকারী শিক্ষকেরা তাঁদের স্কুলে ফিরে গিয়ে শিক্ষার্থীদের স্ক্র্যাচ প্রোগ্রামিং শেখাবেন। শেখানোর মাধ্যমে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের স্ক্র্যাচ প্রোগ্রামিং শেখানোর পদ্ধতি পরিমার্জিত হবে। পরবর্তীতে এই শিক্ষকদের নিয়ে শিখনফল থেকে একটি ক্যাম্প পুনরায় আয়োজন করা হবে। যার মাধ্যমে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্ক্র্যাচ প্রোগ্রামিং শেখানোর একটি মডেল তৈরি হবে।
স্ক্র্যাচ প্রোগ্রামিং ক্যাম্পে প্রযুক্তি উপকরণ দিয়ে সহযোগীতা করেছে রি-কমার্স প্রতিষ্ঠান সোয়াপ। আয়োজন করেছে ইএমকে সেন্টার ও বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক (বিডিওএসএন)।