বাংলাদেশেই নির্মিত হচ্ছে আইওটি নির্ভর স্মার্ট ভেন্ডিং মেশিন

টেকভিশন২৪ প্রতিবেদক: একশ বছরের পুরনো ভেন্ডিং মেশিন টেকনোলজি কেন এখনো বাংলাদেশে প্রসার পায়নি এ নিয়ে ভাবতে ভাবতে ২০১৪ সাল থেকে চিন্তা আর ২০১৯ থেকে শেষমেশ গবেষণা শুরু।

অতঃপর প্রায় ৩ বছরের বেশি গবেষণা ও সেটিকে ভাঙা-গড়ার মধ্য দিয়েই একটা সম্ভাবনার আলো দেখতে পান মোঃ শরীফ মুক্তাদির, সিইও, ভেন্ডি লিমিটেড।

ভেন্ডি লিমিটেড বাংলাদেশের সর্বপ্রথম ভেন্ডিং মেশিন প্রস্তুতকারক কোম্পানি যারা এতদিন পর্দার আড়ালে থেকে কাজ করে ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস-২০২১’ এ ‘টিম উইংস’কে একটি ‘হাইজিন ভেন্ডি’ স্পন্সরের মাধ্যমে বাজারে আসার ইঙ্গিত দেয়। ‘টিম উইংস’ বাংলাদেশ স্কাউটের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা যেখানে বিনামূল্যে সুবিধাবঞ্চিত নারী ও শিশুদের হস্তশিল্পের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। এই নারীদের মাসিককালীন তৎপরতা ও সুরক্ষা তাৎক্ষণিক ভাবে নিশ্চিত করতেই ভেন্ডি লিমিটেডের এ প্রচেষ্টা।

ভেন্ডি লিমিটেড সম্পর্কে কোম্পানির সিটিও বিদ্যুৎ দেবনাথ বলেন, “ভেন্ডিং মেশিনের মত পুরনো একটি টেকনোলজিকে সম্পূর্ণ নতুন ডিজাইনেই আমাদের দেশের জনগণের মনস্তাত্বিক চিন্তাভাবনাকে মাথায় রেখেই প্রস্তুতকৃত। চলমান ধারা থেকে বের হয়ে এসে সম্পূর্ণ আলাদা একটি ডিজাইনে আমাদের মেশিনগুলো তৈরি হচ্ছে যেটি বাংলাদেশের ডিজিটালাইজেশনে এবং মুজিববর্ষের একটি অন্যতম মাইলফলক হিসেবে সাক্ষর রাখবে।” তিনি আরও বলেন, “ আমাদের বিভিন্ন রকমের ভেন্ডিং মেশিন রয়েছে যেগুলো দিয়ে সেনিটারি ন্যাপকিন থেকে শুরু করে কনডম,মাস্ক,বাচ্চাদের ডায়াপার, চকোলেট, প্যাকেটজাত খাবার,বিস্কুট, পানি ও বেভারেজ ইত্যাদি ক্রয়-বিক্রয় সম্ভব। আরও নতুন নতুন পণ্য মাথায় রেখে আমাদের গবেষণা ও উন্নয়নের কাজ চলছে,  শীঘ্রই আমরা সারাদেশে আমাদের ব্র্যান্ড ‘ভেন্ডি’কে সবার সামনে পুরোদমে পরিচয় করিয়ে দিব।”

ভেন্ডি লিমিটেডের ভেন্ডিং মেশিন গুলো সম্পূর্ণ স্পর্শ বিহীন ও এম এফ এস পেমেন্ট সমর্থিত, অভ্যন্তরীণ ব্যবহারের জন্য যে কেউ চাইলে তাদের কর্মী কিংবা মেম্বারদের আইডি কার্ড দিয়ে পণ্য নিতে পারবেন। যেহেতু মেশিন গুলো সম্পূর্ণ বাংলাদেশেই প্রস্তুত করা হচ্ছে, ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী পরিবর্ধন করে তৈরি করে দেয়াও সম্ভব।

এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে কোম্পানির সিইও জানান, “ সবথেকে ভালো লাগছে এটা ভেবে যে, আমরা নিজেদেরকে ঠিকমত প্রমোশন না করার পরও দেশ ও দেশের বাইরে থেকে প্রতিনিয়তই সাড়া পাচ্ছি।

বরিশাল, রাজশাহী, সিরাজগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ থেকে তুরস্ক,সিঙ্গাপুর এবং অস্ট্রেলিয়া থেকেও আমাদের সাথে যোগাযোগ করছে এবং নতুন নতুন আইডিয়া শেয়ার করছে তাদের এলাকায় স্থাপনের জন্যে।

আমাদের টার্গেট এটাই যেন সামাজিক সকল ট্যাবু ভুলে মানুষ যেন ২৪/৭ তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী পণ্য কেনাকাটা করতে পারে এবং দেশের অন্তত শতকরা ২০ ভাগ শিক্ষিত বেকার যারা রয়েছে স্বল্প বিনিয়োগে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা ২০২১ সালের মধ্যে।” তিনি বাংলাদেশের সকল গার্মেন্টস-কারখানা, হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কমিউনিটি ক্লিনিক, হোটেল ও রিসোর্ট, কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান, এনজিও -এর তত্ত্বাবধানে থাকা সবাইকে আহ্বান জানিয়েছেন নারীর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ‘হাইজিন ভেন্ডি’ প্রতিস্থাপনের জন্যে।

প্রতিষ্ঠানটির পার্টনার ও বিনিয়োগকারী সাবিলা ইনুন বলেন, আমরা এক একটি ভেন্ডিং মেশিন ৩০ হাজার টাকা দামে বর্তমানে বিক্রি করছি। দেশে এবং বিদেশ থেকে ভালো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। ‌

বাংলাদেশে আইওটি ও আইটি প্রসারে ভেন্ডি লিমিটেডের এই যাত্রা আলোর পথ দেখাবে বলেই আশা করা যাচ্ছে।

 

উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন