টেকভিশন২৪ ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও আসন্ন নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গ ২০২০ সালের নির্বাচনের সময় তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিলেন। নিজের লেখা নতুন এক বইতে এমন দাবি করেছেন তিনি। খবর সময় নিউজ।
পলিটিকোর প্রতিবেদন মতে, ‘সেভ আমেরিকা’ নামে ট্রাম্পের বইটি আগামী সপ্তাহে প্রকাশিত হবে বলে জানা গেছে। ওই বইতে ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, “আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বেআইনি কিছু করলে জুকারবার্গকে আজীবন কারাগারে থাকতে হবে”।
জুকারবার্গ ও ট্রাম্পের দ্বন্দ্ব অনেকদিনের। ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ট্রাম্পের সমর্থকেরা মার্কিন পার্লামেন্ট ভবন ক্যাপিটল হিলে হামলা চালানোর পরদিনই ট্রাম্পের ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয়া হয়। অভিযোগ, ট্রাম্পের ফেসবুক পোস্টে সহিংসতায় যুক্ত থাকা লোকজনের প্রশংসা করা হয়েছে।
২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট আবার চালু করা হয়। তবে ভবিষ্যতে নীতিমালা লঙ্ঘনের হুমকির কথা বলে তার অ্যাকাউন্টের বিরুদ্ধে শাস্তি আরও বর্ধিত করা হয়। তিন বছর পর চলতি বছরের জুলাইয়ে ট্রাম্পের ওপর থেকে বিধিনিষেধ তুলে নেয়া হয়। ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট ফিরে পান ট্রাম্প।
অন্যদিকে ট্রাম্প নিয়মিত জাকারবার্গের বিরুদ্ধে গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপের অভিযোগ করে আসছেন। এবার বই লিখে তাতে আবারও ফেসবুক প্রতিষ্ঠাতার বিরুদ্ধে অভিযোগের তোপ দাগলেন তিনি।
ট্রাম্প সেখানে লিখেছেন, আমার সঙ্গে দেখা করতে ওভাল অফিসে (যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতির আনুষ্ঠানিক কাজের স্থান) আসেন। তিনি (জুকারবার্গ) তার সুন্দরী স্ত্রীকে নৈশভোজে নিয়ে আসতেন। যে কেউ যতটা সুন্দর হতে পারে, ততটা সুন্দর সাজতেন। সর্বদা প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে সত্যিকারের চক্রান্তে লজ্জাজনক লক বাক্স ইনস্টল করার ষড়যন্ত্র করতেন।
পলিটিকোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় জুকারবার্গ ও তার স্ত্রী প্রিসিলা চ্যান ট্রাম্পের নির্বাচনী অবকাঠামো তহবিলে ৪২ কোটি ডলার অনুদানের কথা উল্লেখ করেছেন। সাবেক এই প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, জুকারবার্গ সে সময় তাকে বলেছিলেন, ফেসবুকে ট্রাম্পের মতো কেউ নেই। কিন্তু একই সঙ্গে তিনি আমার বিরুদ্ধে চলে গেছেন।
বইতে ট্রাম্প সতর্ক করে বলেছেন, আমরা তাকে (জুকারবার্গ) নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। এবার যদি তিনি অবৈধ কিছু করেন, তবে তাকে বাকি জীবন কারাগারে কাটাতে হবে- যেমনটি ২০২৪ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রতারণাকারী অন্যান্যরাও করবেন।
গত জুলাইয়ে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছিলেন, নির্বাচিত হলে তিনি নির্বাচনে জালিয়াতদের এমন পর্যায়ে নিয়ে যাবেন যা আগে কখনো দেখা যায়নি এবং তাদেরকে দীর্ঘ সময়ের জন্য কারাগারে পাঠাবেন। আমরা ইতিমধ্যেই জানি আপনি কে। এটা করো না! জাকারবাকস, সাবধানে থেকো।
যদিও মেটা সাবেক প্রেসিডেন্টের অভিযোগ এবং সতর্কতার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। চলতি সপ্তাহের শুরুতে হাউস জুডিশিয়ারি কমিটির চেয়ারম্যান জিম জর্ডানকে একটি চিঠি পাঠান জুকারবার্গ। সেখানে তিনি স্বীকার করেন, জো বাইডেনের প্রশাসনের সিনিয়র কর্মকর্তারা ২০২১ সালে কোভিড-১৯ সামগ্রী ‘সেন্সর’ করার জন্য ফেসবুককে বারবার চাপ দিয়েছিলেন।
মেটা সিইও চিঠিতে আরও উল্লেখ করেন, তিনি বিশ্বাস করেন সরকারের চাপ ভুল ছিল। সে সময় এ সম্পর্কে কথা না বলার জন্য দুঃখও প্রকাশ করেন তিনি। জুকারবার্গ ঘোষণা করেছেন, উভয় দিকের প্রশাসনের চাপের কারণে তিনি ফেসবুকের সামগ্রিক মানগুলোর সাথে আপস করবেন না। নভেম্বরের নির্বাচনের আগে রাজনৈতিকভাবে তিনি নিরপেক্ষ থাকবেন।