শুরু হচ্ছে ‘বিপিও সামিট বাংলাদেশ ২০২৩’, ১ হাজার নতুন কর্মসংস্থানের প্রত্যাশা

টেকভিশন২৪ প্রতিবেদক: দেশের বিপিও/আউটসোর্সিং শিল্পের জন্য নিবেদিত একক ও কেন্দ্রীয় বাণিজ্য সংস্থা ‘বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ কনট্যাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্কো)’-এর উদ্যোগে ও বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত ‘বিজনেস প্রোমোশন কাউন্সিল’-এর সার্বিক সহযোগিতায় মে-জুলাই মাসব্যাপী দেশজুড়ে পালিত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের বিপিও শিল্পের সর্ববৃহৎ, শীর্ষ সম্মেলন “বিপিও সামিট বাংলাদেশ ২০২৩”। তার আনুষ্ঠানিক ঘোষণার উদ্দেশ্যেই আজ রবিবার ২১ মে, ২০২৩ তারিখে রাজধানীস্থ এক কনফারেন্স হলে ‘মিট দ্য প্রেস’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাক্কো।

উক্ত সংবাদ সম্মেলনে বাক্কোর কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বিপিও সামিট বাংলাদেশ ২০২৩’-এর শুভসূচনার ঘোষণা করা হয়। এসময় বাক্কো সাধারণ সম্পাদক জনাব তৌহিদ হোসেন উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, “বিপিও সামিটের মধ্য দিয়ে এবারে অন্ততঃ এক হাজার মেধাবী তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নিয়েছি আমরা। থাকছে বিভাগীয় পর্যায়ে ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং সেশন এবং চাকুরি মেলার আয়োজন। আপনাদের মধ্য দিয়ে এ খবর দেশবাসীর কাছে, তরুণ প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেয়াই আমাদের উদ্দেশ্য।”

বাক্কো সহ-সভাপতি তানভীর ইব্রাহীম বলেন- “বাংলাদেশ ২০৩৫ সালের মধ্যে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ও সর্বাধিক শক্তিশালী অর্থনীতিসমৃদ্ধ দেশগুলোর মধ্যে পঁচিশতম অবস্থানে চলে আসবে এবং ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনীতির মাইলফলক স্পর্শ করবে। আর এ অবস্থান অর্জনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাত রাখবে অন্যতম ভূমিকা! তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাত বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ঘোষিত একটি থ্রাস্ট সেক্টর (Thrust Sector); কেননা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের ক্ষেত্রে সর্বাধিক সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে তৈরি পোশাক শিল্প খাতের পরপরই এর অবস্থান।”

‘বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল’-এর সহকারী নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব মোঃ ফয়সাল খান বলেন- “বিপিও শিল্পে অনেক ধরণের চাকুরির সুযোগ রয়েছে, বিপিও মানেই শুধু কলসেন্টার নয়। আমাদের তরুণদের এ খাতের চাকুরির বৈচিত্র্য সম্পর্কে জানাতে হবে, তাদেরকে সেসমস্ত কাজের জন্য প্রশিক্ষিত করতে হবে। বাক্কোর সঙ্গে একত্রিত হয়ে বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল ইতোমধ্যেই দুইশতেরও অধিক ফ্রিল্যান্সারকে উদ্যোক্তায় পরিণত করার উদ্দেশ্যে প্রশিক্ষিত করেছে। এ প্রশিক্ষণ কর্মসূচী ভবিষ্যতেও এমন অব্যাহত রাখারই পরিকল্পনা আমাদের।”

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই বিগত বিপিও সামিটসমূহের কার্যক্রম ও অর্জনের প্রতি আলোকপাত করা হয়। এরপর বর্তমান সামিটের সম্ভাব্য কার্যক্রম ও পরিকল্পনা সম্পর্কে অবহিত করা হয় সকলকে। প্রশ্নোত্তর পর্বের মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটে সংবাদ সম্মেলনের।

তথ্যপ্রযুক্তিখাত সংশ্লিষ্ট সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মীগণের সরব উপস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলনটি ছিল পরিপূর্ণ। বাক্কো কার্যনির্বাহী কমিটি থেকে উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জনাব মোঃ তানজিরুল বাসার, অর্থ সম্পাদক জনাব মোহাম্মদ আমিনুল হক; পরিচালক জনাব আবু দাউদ খান, জনাব আহমেদুল ইসলাম বাবু, ডা. তানজিবা রহমান এবং জনাব মুসনাদ ই আহমেদ। আরও উপস্থিত ছিলেন বাক্কো-এসইআইপি প্রকল্পের প্রধান সমন্বয়ক জনাব মোঃ মাহতাবুল হক। বিশেষ অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস)-এর সাধারণ সম্পাদক জনাব কামরুজ্জামান ভূঁইয়া, টেকনোলজি মিডিয়া গিল্ড বাংলাদেশ (টিএমজিবি)-এর সভাপতি মোহাম্মদ কাওছার উদ্দীন, বাংলাদেশ উইম্যান ইন টেকনোলজি (বিডাব্লিউআইটি)-এর সহ-সভাপতি নাজনীন কামাল, ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (ই-ক্যাব)-এর সভাপতি শমী কায়সার এবং ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (আইএসপিএবি)-এর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ এ কাইয়ুম রাশেদ।

উল্লেখ্য, পঞ্চমবারের মত বাক্কোর আয়োজনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিপিও সামিট। সার্বিক সহযোগিতায় আছে বিজনেস প্রোমোশন কাউন্সিল। এছাড়াও এ আয়োজন সফল করতে বাক্কোর সহযোগী হিসেবে থাকছে তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক বাণিজ্যিক সংগঠনগুলো। প্রসঙ্গত, সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো হলঃ আইএসপিএবি, বিসিএস, টিএমজিবি, ই-ক্যাব, বিডাব্লিউআইটি, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস), উইম্যান অ্যান্ড ই-কমার্স ফোরাম (উই), বাংলাদেশ আইসিটি জার্নালিস্ট ফোরাম (বিআইজেএফ) এবং বাংলাদেশ ফ্রিল্যান্সার ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি (বিএফডিএস)।

শুধু রাজধানী শহরেই নয়, এবারই প্রথমবারের মত ‘বিপিও সামিট বাংলাদেশ ২০২৩” আয়োজিত হচ্ছে বিভাগীয় পর্যায়েও। আগামী ২৩ মে রাজশাহী বিভাগে ক্যারিয়ার ক্যাম্পেইনের মধ্য দিয়ে শুরু হবে যাত্রা। বিভাগীয় পর্যায়ের বর্ণাঢ্য আয়োজনের অংশ হিসেবে থাকছে ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাস অ্যাক্টিভেশন, তরুণ প্রজন্মের জন্য চাকুরি মেলা, ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং সেশন, স্থানীয় অংশীজনদের নিয়ে আয়োজিত পলিসি ডিসকাশন ইতাদি। সাতটি বিভাগে পর্যায়ক্রমে আলাদা আলাদাভাবে “বিভাগীয় বিপিও সামিট” উদযাপনের পর কেন্দ্রীয় পর্যায়ে চূড়ান্তভাবে আয়োজিত হবে “কেন্দ্রীয় বিপিও সামিট”।

এ আয়োজনের মাধ্যমে আইসিটিশিল্প বিকাশে আইসিটিপণ্য ও সেবা প্রদর্শনী, বিপিওখাতের অর্জন/সাফল্য ও সম্ভাবনা উপস্থাপন, তথ্য-প্রযুক্তিবিষয়ক সেমিনার ও কর্মশালা আয়োজন, ই-গভর্নেন্স, ই-কমার্স, অবকাঠামোগত উন্নয়ন ইত্যাদি ক্ষেত্রে দেশের অর্জিত সাফল্য বিশ্ববাসীসহ বাংলাদেশের জনগণের নিকট তুলে ধরা হবে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ‘স্মার্ট বাংলাদেশ ২০৪১’ বাস্তবায়নের বৃহত্তর লক্ষ্যকে সফল করা, দেশীয় বিপিওশিল্পের বিকাশের পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী এই শিল্পের ব্যাপ্তি ঘটাতে ‘বিপিও সামিট বাংলাদেশ ২০২৩’ শীর্ষক আয়োজনের গুরুত্ব অপরিসীম। অন্যদিকে এ সামিটের ‘ক্যারিয়ার ক্যাম্পেইন’ দেশের বিপিও খাতে দক্ষ জনসম্পদ গড়ে তুলতে ও সম্ভাবনাময় তরুণ-তরুণীদের উপযুক্ত কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে অনস্বীকার্য ভূমিকা পালন করবে, এমনটাই বাক্কোর আশাবাদ।

উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন