বাংলাদেশ পরিষেবা প্রদানকারী থেকে অন্তর্ভুক্তিমূলক সেবায় রূপান্তরিত হচ্ছে: পলক



তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন বাংলাদেশ এখন নিছক পরিষেবা প্রদানকারী থেকে অন্তর্ভুক্তিমূলক সেবা প্রদানকারী দেশে রূপান্তরিত হচ্ছে ।

প্রতিমন্ত্রী আজ বেলজিয়ামের ব্র্যাসেলসে টনি ব্লেয়ার ইনস্টিটিউট ফর গ্লোবাল চেঞ্জ এর আয়োজনে অনুষ্ঠিত “টেক অ্যাক্সিলারেটর প্রোগ্রাম ২০২৩” এ বিশ্ব নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনাকালে ডিজিটাল রূপান্তরে বাংলাদেশের তাক লাগানো বিকাশ বিষয়ে তুলে ধরতে গিয়ে একথা বলেন।

পলক প্রতিনিয়ত সরকারী পরিষেবা এবং অর্থনীতির দক্ষতা উন্নত হচ্ছে উল্লেখ করে বলেন
বর্তমান সরকার এক্ষেত্রে দৃঢ়তার সঙ্গে ইতিবাচক পরিবর্তনের মধ্য দিয়েই যাচ্ছে। একইসঙ্গে এসব ক্ষেত্রে বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণও নিশ্চিত করা হচ্ছে৷ এভাবেই টেকসই একটি অর্থনীতির পথ রচনা করেছে। তিনি বলেন প্রত্যেক নাগরিকের জন্য নৈতিক ও ধর্মনিরপেক্ষ মূল্যবোধের বিকাশের মাধ্যমে শূন্য দারিদ্র্য এবং শূন্য ডিজিটাল বিভাজন সহ একটি প্রগতিশীল, অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজের দিকে দেশকে এগিয়ে যাচ্ছে।

পলক বলেন, আমরা দেশকে উচ্চ আয়ের উন্নত, জ্ঞান-ভিত্তিক, অর্থনীতির দিকে এগিয়ে নিতে আমাদের বৈশ্বিক অংশীদারদের সাথে নিয়ে কাজ করার জন্য প্রস্তুত।

এসময় ২০২১ সালের ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প বাস্তবায়নের পর ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উচ্চ আয়ের দেশ হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা বিষয়ে আলোকপাত করেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী। এক্ষেত্রে গত ১৫ বছরে ডিজিটাল সরকার ব্যবস্থা, ডিজিটাল সংযুক্তি, মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং আইসিটি শিল্পের বিকাশের বাস্তব চিত্র তুলে ধরেন তিনি।

এছাড়াও প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ রূপকল্প বাস্তবায়নের চারটি স্তম্ভের অধীনে ৪০টিরও বেশি মেগা প্রকল্প নির্ধারণ করেছে সরকার । আর ওই প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে স্মার্ট বাংলাদেশ টাস্কফোর্স এর অধীনে গঠন করা হয়েছে ১৫টি উপ-কমিটি। এরমধ্যে সবার শীর্ষে রয়েছে স্মার্ট জনশক্তি। সরকারি-বেসরকারি যৌথ অংশীদারিত্বে , প্রগতিশীল প্রযুক্তি, দক্ষ জনশক্তি, উদ্ভাবন উদ্যোগের মাধ্যমেই দেশের জনপ্রতি মোট উৎপাদনশীলতা

(পিএফপি) আড়াই শতাংশ বাড়বে, মোট দেশজ উৎপাদন অনুপাতে কর আয় বাড়বে ২২ শতাংশের ওপর এবং জলবায়ু দুর্যোগ সহনশীল শতভাগ আর্থিক অন্তর্ভূক্তিমূলক সমাজ গড়ে উঠবে বলে তিনি জানান।

এর আগে সকালে ‘এ লিডারস ফর দ্য ফিউচার’সেশনের মাধ্য দিয়ে পশ্চিম ইউরোপের দেশ বেলজিয়ামের ব্র্যাসেলসে শুরু হয় “টেক অ্যাক্সিলারেটর প্রোগ্রাম ২০২৩”। ব্রিটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের নামে প্রতিষ্ঠিত টনি ব্লেয়ার ইনস্টিটিউট ফর গ্লোবাল চেঞ্জ এর আয়োজনে সম্মেলনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রযুক্তি খাতের নীতিনির্ধারক সংশ্লিষ্টরা যোগ দিয়েছেন।

সম্মেলনে ‘একবিংশ শতাব্দীর টেকসই রূপকল্প’ এবং ‘অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি পরিকল্পনা ঢেলে সাজানো’ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এই অধিবেশনে সরকারি পরিষেবার বর্ধিত দক্ষতা অর্জন, মাথাপিছু আয়, দৃঢ় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন, আইসিটিতে জিডিপির অংশগ্রহণ ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি এবং শিল্প বিপ্লবের দিকে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন গ্রহণ করার ওপর একটি রাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গি কী হওয়া উচিত তা তুলে ধরা হয়। দেখানো হয়, পাসপোর্টের বদলে মোবাইলেই নাগরিকের পরিচয় সনাক্ত ও যাচাইয়ের স্মার্ট প্রযুক্তি। এছাড়াও গুরুত্ব পেয়েছে নাগরিকের স্মার্ট আইডি এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন।

সম্মেলনে অংশ নিয়ে যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞান, উদ্ভাবন ও প্রযুক্তি বিষয়ক ছায়া সচিব পিটার কাইলসহ শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করছেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। বৈঠকে প্রযুক্তি খাতে ব্যবসায় সম্প্রসারণ, বাংলাদেশে বিনিয়োগ, ক্যাশলেস অর্থনীতি গড়ে তুলতে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা গ্রহণ এবং উদ্ভাবনী উদ্যোগ বিনিময় ছাড়াও ডিজিটাল সুশাসন বিষয়ে আলোচনা হয়।

প্রসঙ্গত, “টেক অ্যাক্সিলারেটর প্রোগ্রাম ২০২৩” অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে অ্যাঙ্গোলার ইনস্টিটিউট অব অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ মডার্নাইজেশন সিইও মাইক অফোেসো, মালদোভার, উপ-প্রধানমন্ত্রী দুমিত্রু আলাইবা, জাম্বিয়ার জাতীয় ডিজিটাল রূপান্তর উপদেষ্টা পার্সি চিনিমা, সিঙ্গাপুরের তথ্য ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে যুগ্ম সচিব গুয়েন্ডা ফং, মরোক্কোর ডিজিটাল রূপান্তর ও প্রশাসনিক সংস্কার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আব্দেল্লাহ জলিলি, আলবেনিয়ার এনএআইএস পরিচালক মিরলিন্ডা কারকানাজ, আলবেনিয়ার ই-গভ প্রমোশন পরিচালক রোমানিয়া কোস্তানি, গ্রিসের মেয়র দিমিত্রিস পাপাসতেরজিয়াস, যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষা বিভাগের ছায়া সচিব ওয়েস স্ট্রিটিং প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন