প্রতিবন্ধী ব্যক্তির কল্যাণে এটুআই অর্জন করলো জাতীয় মানবকল্যাণ পদক-২০২১

প্রতিবন্ধী

টেকভিশন২৪ ডেস্কঃ প্রতিবন্ধী ও নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কল্যাণ, জীবনমান উন্নয়ন, কর্মসংস্থান, ইনক্লুসিভ শিক্ষা বাস্তবায়ন ও সামাজিক সুরক্ষায় উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য জাতীয় মানবকল্যাণ পদক-২০২১ অর্জন করলো এটুআই-এসপায়ার টু ইনোভেট। আজ রাজধানীর আগারগাঁওস্থ সমাজসেবা অধিদফতর মিলনায়তনে জাতীয় সমাজসেবা দিবস ২০২৩ ও মানবকল্যাণ পদক বিতরণ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি সমাজকল্যাণমন্ত্রী জনাব নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি-এর কাছে থেকে এটুআই এর প্রকল্প পরিচালক (যুগ্মসচিব) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর এই পদক, স্মারক, সনদপত্র ও অর্থ গ্রহণ করেন।

এটুআই প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কল্যাণে সরকারের সকল ওয়েবসাইট গড়ে ৭০ শতাংশ অভিগম্যতা নিশ্চিত করতে কারিগরি সহযোগিতা করেছে। এছাড়া মাল্টিমিডিয়া টকিং বুক ও অভিগম্য ডিকশনারী তৈরির পাশাপাশি ইনক্লুসিভ ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠায় কারিগরি সহযোগিতা প্রদান করেছে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কল্যাণে কাজ করার জন্য এটুআই ইতোপূর্বেও জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন করেছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদানকালে সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি বলেছেন, সামাজিক নিরাপত্তা খাতে গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণে সরকার কাজ করছে। এসব কর্মসূচি বাস্তবায়িত হলে দারিদ্র্যসীমা থেকে বেরিয়ে আসবে কয়েক কোটি লোক। মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবতার মূর্ত প্রতীক ও বিশাল হৃদয়ের অধিকারী। মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়ে তিনি মাদার অব হিউম্যানিটি হিসেবে খ্যাতি পেয়েছেন। মানবতার কল্যাণে তাঁর এ পদক্ষেপ বিশ্বে বিরল। সে ঘটনার প্রেক্ষাপটে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় মানবকল্যাণ পদক প্রদানের কাজ শুরু করে। জনকল্যাণে উদ্বুদ্ধ হয়ে মানবতার সেবায় কাজ করা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে  পাঁচ ক্যাটাগিরতে প্রতি বছর মানব কল্যাণ পদক প্রদান করা হবে। মন্ত্রী আরও বলেন, ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ হবে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় পরিচালিত কর্মসূচিসমুহ বাস্তবায়নে স্মার্ট প্রযুক্তির সূচনা হয়েছে। এক কোটিরও অধিক ভাতাভোগী এবং পাঁচ কোটিরও অধিক উপকারভোগী সরাসরি এ মন্ত্রণালয়ের সেবার আওতাভুক্ত। অদূর ভবিষ্যতে এ বিশাল সংখ্যক মানুষ দারিদ্রসীমা থেকে বেরিয়ে আসবে।

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী মোঃ আশরাফ আলী খান খসরু এমপি ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সমাজসেবা অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. আবু সালেহ্ মোস্তফা কামাল।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাশেদ খান মেনন বলেন, বঙ্গবন্ধু দেশে সর্বপ্রথম সুদমুক্ত ক্ষুদ্র ঋণ চালু করেছিলেন। করোনা মহামারী ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারনে বৈশ্বিক অর্থনীতি টালমাটাল। এমন অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে দেশের মানুষের জন্য সুদমুক্ত ক্ষুদ্র ঋণ সহায়ক হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, সকল মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় কাজ করছে । সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আইন ও বিধিমালা প্রণয়ণ করে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

 

উল্লেখ্য, ২০২০ ও ২০২১ সালের জন্য আট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এ পদক পেয়েছেন। করোনার কারণে ২০২০ সালে দেওয়া সম্ভব না হলেও এবার একসঙ্গে ২০২০ ও ২০২১ সালের জন্য নির্বাচিতদের পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। পদকের জন্য চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত প্রত্যেকে পেয়েছেন ১৮ ক্যারেট মানের ২৫ গ্রাম স্বর্ণ দিয়ে তৈরি পদক, জাতীয় মানবকল্যাণ পদকের রেপ্লিকা, ব্যক্তি পর্যায়ে ২ লাখ টাকা, দপ্তর বা প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে ২ লাখ টাকা এবং একটি সম্মাননা সনদ।

পদকপ্রাপ্ত অন্যান্যদের মধ্যে প্রান্তিক ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর সুরক্ষায় আব্দুল জব্বার জলিল, প্রতিবন্ধী ব্যক্তির কল্যাণে বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্জ্ব আল-মামুন সরকার, মানবকল্যাণে ইতিবাচক কার্যক্রমে খুলনার জেলা প্রশাসন মানবকল্যাণ পদক ২০২০ গ্রহণ করে। বয়স্ক-বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতার কল্যাণে বিশ্ব মানব সেবা সংঘ (বৃদ্ধাশ্রম), প্রান্তিক ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর সুরক্ষায় বীর মুক্তিযোদ্ধা মাজেদা শওকত আলী, আইনের সংঘাতে জড়িত শিশু-নিরাশ্রয় ব্যক্তির কল্যাণে আকবরিয়া লিমিটেড, মানবকল্যাণে ইতিবাচক কার্যক্রমে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন মানবকল্যাণ পদক ২০২১ গ্রহণ করে।

উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন