টেকভিশন২৪ ডেস্ক: জলবায়ুর লক্ষ্য পূরণে নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে সংস্কার এবং কর্পোরেট পাওয়ার পরচেজ এগ্রিমেন্ট (সিপিপিএ) –এর গুরুত্ব তুলে ধরতে রাজধানীতে ‘গ্রিনিং দি গ্রিড’ নামে একটি প্যানেল আলোচনার আয়োজন করেছে গ্রামীণফোন।
প্যানেল আলোচনার মূল লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশে কর্পোরেট পাওয়ার পারচেজ এগ্রিমেন্ট (সিপিপিএ) সম্পর্কিত নীতি সংস্কারে সচেতনতা তৈরি করা। ২০৩০ সালের মধ্যে ২০১৯ সালের তুলনায় কার্বন নিঃসরণ ৫০ শতাংশ কমিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ করছে গ্রামীণফোন। এই লক্ষ্য অর্জনে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এই নীতি।
সিপিপিএ নীতির গুরুত্ব তুলে ধরে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ক্লাইমেট পার্লামেন্ট বাংলাদেশের কনভেনর নাহিম রাজ্জাক, এমপি, নরওয়ের সাবেক এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট মন্ত্রী এরিক সোলহেইম, বাংলাদেশে নিযুক্ত নরওয়ের রাষ্ট্রদূত এসপেন রিকটার-ভেন্ডসেন, টেট্রা টেক- ইউএসএইড-ব্যাজ প্রজেক্টের চিফ অফ পার্টি ইডি এলরাহাল, পাওয়ার সেল বাংলাদেশের ডিরেক্টর জেনারেল প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইন এবং গ্রামীণফোনের চিফ কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার হ্যান্স মার্টিন হেগ হেনরিকসেন।
গ্রামীণফোনের চিফ কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার হ্যান্স মার্টিন হেগ হেনরিকসেন বলেন, “গ্রামীণফোনের সকল কার্যক্রম থেকে কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ কমিয়ে আনতে আমরা বদ্ধপরিকর।” এই লক্ষ্য পূরণে কর্পোরেট পাওয়ার পারচেজ এগ্রিমেন্ট (সিপিপিএ)- এর অপরিহার্য ভূমিকার কথা তুলে ধরেন তিনি। এই মডেল বাস্তবায়নে বেসরকারি খাত কী ধরণের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয় এবং এক্ষেত্রে অনুকূল নীতি কীভাবে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) বাড়াতে এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারে সরকারের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে তা নিয়ে আলোচনা করেন তিনি। টেকসই পরিবেশ বিষয়ের দিকটি বিবেচনায় নিয়ে কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনার মাধ্যমে প্যারিস চুক্তির লক্ষ্য অর্জনে ইএসজি কীভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে তাও তুলে ধরেন তিনি।
নরওয়ের গ্রিড গ্রিনিং অভিজ্ঞতার বিভিন্ন দিক তুলে ধরার পাশাপাশি নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎসের দিকে অগ্রসর হতে বাংলাদেশের জন্য সহায়ক প্রথম সারির আন্তর্জাতিক মডেলগুলো সম্পর্কে আলোচনা করেন নরওয়ের সাবেক এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট মন্ত্রী এরিক সোলহেইম।
বাংলাদেশে নিযুক্ত নওেয়ের রাষ্ট্রদূত এসপেন রিকটার-ভেন্ডসেন বাংলাদেশের ‘গ্রিন দি গ্রিড’-এর দিকে অগ্রসর হতে আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বের গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং এক্ষেত্রে সহায়তা করতে নরওয়ে প্রস্তুত বলে জানান তিনি।
সিপিপিএ বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশকে সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদানে ইউএসএআইডি ও টেট্রা টেকের মতো উন্নয়ন অংশীদারদের সম্পৃক্ততার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন টেট্রা টেক- ইউএসএইড-ব্যাজ প্রজেক্টের চিফ অফ পার্টি ইডি এলরাহাল। এক্ষেত্রে সফল পদক্ষেপসমূহ এবং এটি বাস্তবায়নে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলার কৌশল নিয়ে আলোচনা করেন তিনি।
পাওয়ার সেল বাংলাদেশের ডিরেক্টর জেনারেল প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইন বাংলাদেশের জাতীয় গ্রিডে নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎসগুলোকে একীভূত করার প্রযুক্তিগত দিকগুলো তুলে ধরার পাশাপাশি সিপিপিএ বাস্তবায়নে এর ভূমিকা এবং এই প্রক্রিয়ার সাথে সম্পৃক্ত চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনাগুলোর ওপর আলোকপাত করেন।
সিপিপিএ সম্পর্কিত বাংলাদেশে বিদ্যমান আইনি কাঠামো এবং এই নীতি বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় নীতিগত পরিবর্তনের দিকগুলো তুলে ধরে সমাপনী বক্তব্য রাখেন ক্লাইমেট পার্লামেন্ট বাংলাদেশের কনভেনর নাহিম রাজ্জাক এমপি। এ বিষয়টিতে নীতি সংস্কারের ক্ষেত্রে সংসদীয় কমিটির সম্পৃক্ততার বিষয়টিও তুলে ধরেন তিনি।
প্যানেল আলোচনাটি সঞ্চালনা করেন গ্রামীণফোনের হেড অব সোশ্যাল ইমপ্যাক্ট ফারহানা ইসলাম।