লজিস্টিক প্রতিষ্ঠান হলিস্টারে ৫ কোটি বিনিয়োগ করবে মালয়েশিয়ার এক্সোডাস

টেকভিশন২৪ ডেস্ক : দেশের লজিস্টিক কোম্পানি হলিস্টার (Holister) এ বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে মালয়েশিয়ার স্বনামধন্য এক্সোডাস গ্রুপ (Exodus group)। চলতি বছর প্রথম ধাপে ৫ কোটি টাকার উপরে এবং পরবর্তী আরও তিন ধাপে বড় পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করবে এই প্রতিষ্ঠানটি ।

এ বিনিয়োগের বিষয় নিয়ে হলিস্টার এর সিইও জারিফ রশিদ আহমেদ জানান, ‘‘আমি খুবই খুশি যে আমরা শুরুতেই বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে পেরেছি।’’

 

হলিস্টার এর কার্যক্রম এবং এর যাত্রা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘যদিও আমাদের হলিস্টার পুরোদমেকাজ শুরু করেছে ছয় মাস আগ থেকে কিন্তু এর পরিকল্পনা ও যাত্রা শুরু হয়েছিলো দুই বছর আগে ফেসবুকে অনলাইন ব্যবসার মধ্যদিয়ে। আমি তখন অনলাইন ব্যবসা করতে গিয়ে অনেক ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হয়ে হতে হয়েছিলো। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ; দেরিতে প্রোডাক্ট কাস্টমারের কাছে পৌঁছে দেয়া, দেরিতে পণ্যের মুল্য পরিশোধ করা এবং রিটার্ন প্রোডাক্টের উপর অতিরিক্ত চার্জ যোগকরা। এই সমস্যা গুলোর সমাধান এবং মার্চেন্টদের ব্যবসা আরো সহজ, সুন্দর ও গতিশীল করার লক্ষ্যেই হলিস্টার এর জন্ম।’’

হলিস্টার এর সেবা সম্পর্কে জানতে চাইলে জারিফ রশীদ আহমেদ জানান, ‘‘আমরা বাংলাদেশে প্রথম যারা রিটার্ন চার্জ এবং ক্যাস অনডেলিভারিতে কোনো ধরনের চার্জ নিচ্ছি না। আমি দৃঢ় ভাবে বিশ্বাস করি, আমাদের এই উদ্যোগে অন্য লজিস্টিক কোম্পানি গুলোমার্চেন্টদের থেকে রিটার্ন চার্জ নেয়া বন্ধ করে দিবে আর ক্যাস অন ডেলিভারিতে দেশের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পন্য পাঠাতে মার্চেন্টদের যে ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হতে হতো সেটাও পুরো বন্ধ হয়ে যাবে। কারণ আমার মতে রিটার্ন চার্জ মার্চেন্টদের থেকে নেয়াসম্পুর্ন অযৌক্তিক। এই চার্জ নেয়ার জন্য তারা ক্ষতিকর সম্মুখীন হচ্ছে, সাথে সাথে ব্যবসা করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। এছাড়াবাংলাদেশে এখন ক্যাস অন ডেলিভারি ছাড়া ব্যবসা করা প্রায় অসম্ভব। ক্যাস অন ডেলিভারিতে মার্চেন্টদের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়অতিরিক্ত চার্জের কারণে। এর ফলে মার্চেন্ট ক্যাস অন ডেলিভারিতে ব্যবসা করতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। এই আগ্রহ যাতে হারিয়ে নাযায় সেজন্য আমরা হলিস্টার ক্যাস অন ডেলিভারিতে কোনো ধরনের চার্জ নিচ্ছি না। আর হলিস্টার এই প্রথম দেশের পন্য ডেলিভারিহওয়ার ৩০ মিনিটের মধ্যে মূল্য পরিশোধ করার সেবা চালু করেছে। এতে করে মার্চেন্ট অনেক উপক্রিত হবে এবং তারা সময় মত তাদেরপ্রোডাক্ট আবার মজুদ করতে পারবেন। এই মূল্য পরিশোধ প্রক্রিয়া সঠিক ভাবে প্রয়োগের জন্য আমাদের কোম্পানি একটি সফটওয়্যারডেভেলপ করেছে। এছাড়া আমাদের আছে মার্চেন্টদের গুদামজাতকরণ ব্যবস্থা যা সম্পুর্ন বিনামূল্যে দিচ্ছি আমরা। মার্চেন্টরা যাতেআমাদের সেবা পরিপূর্ণ এবং সহজ ভাবে গ্রহন করতে পারে সে জন্য আমরা একটি এপ ডেভেলপ করেছি যা গুগল প্লে-স্টোর, এপ স্টোরেরয়েছে, এবং যে কেউ আমাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমেও হলিস্টার এর সেবা গ্রহণ করতে পারবেন।”

বিনিয়োগ সম্পর্কে এক্সোডাস গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. ড্যানিয়েল ইয়াপ বলেন, ‘‘বাংলাদেশে লজিস্টিকসেক্টরে বিনিয়োগ করার জন্য এটি একটি ভাল সময় কারণ এই সেক্টরটি এখন বিকশিত এবং আশাব্যঞ্জক। আমি বিশ্বাস করি হলিস্টারঅন্যতম প্রধান কোম্পানি হবে আগামী বছর বাংলাদেশ তার সেক্টরে। আমরা খুবই খুশি যে দুটি কোম্পানি একসাথে কাজ করতে পারেএকটি আধুনিক প্রযুক্তি ভিত্তিক লজিস্টিক তৈরি করে দেশে।’’

হলিস্টার এর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা নিয়ে জারিফ বলেন, ‘‘আমাদের ইচ্ছা বাংলাদেশকেএকটা ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ প্রতিষ্ঠিত করা এবং লজিস্টিক সেক্টরের উপর মানুষের আস্থা পুনরায় ফিরিয়ে আনা। আমি বিশ্বাস করি কোয়ালিটি ওভার কোয়ান্টিটি, আর এই লক্ষ্যেই হলিস্টার কাজ করে যাচ্ছে। এর সাথে আমি একটি ই-কমার্স সাইটের যাত্রা শুরু করারপরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। যেটি হবে খুবই ব্যতিক্রম, অন্যান্য ই-কমার্স সাইট গুলো থেকে আলাদা এবং সকল স্তরের মার্চেন্টদের জন্যএকটি বিশেষ প্লাটফর্ম হবে। আমরা আশাবাদী এই ই-কমার্স সাইট এ বছরের শেষে দেশের মানুষকে উপহার হিসেবে দিতে পারবো। আরই-কমার্সের প্রতি মানুষের যে ভুল ধারনা জন্ম নিয়েছে সেটি আর থাকবে না।”

হলিস্টার এর চেয়ারম্যান এস. এম. মাহফুজুল হক বলেন, ‘‘আমাদের লক্ষ্য শুধু বিদেশি বিনিয়োগকারীকে দেশে নিয়ে আসার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, দেশি প্রতিষ্ঠানকে দেশের বাইরে সুপ্রতিষ্ঠিত করা।’’

এক্সোডাস এবং হলিস্টার এর মধ্যে চুক্তি সাক্ষ্যরের ব্যাপারে জানতে চাইলে এর সিওও ওয়াকার আলম বলেন, ‘‘আমি খুবই উল্লাসিত এবংআশাবাদী এক্সোডাস এর মতন বিশ্বমানের একটি প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করতে পেরে। দুই প্রতিষ্ঠান মিলে দেশের অর্থনীতিতে একটি বড় ভূমিকা রাখবে।’’  সূত্র অবলম্বনে 

উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন