প্লাজমা প্ল্যাটফর্ম ‘সহযোদ্ধা’ উদ্বোধন করেন পলক

টেকইকম ডেক্স: করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী সুস্থ্য হওয়ার পর তাঁর প্লাজমা সংগ্রহ এবং অসুস্থ্য রোগীর চিকিৎসায় এই প্লাজমা বিতরণের লক্ষ্যে ‘সহযোদ্ধা’ www.shohojoddha.com নামক একটি প্লাজমা নেটওয়ার্ক উদ্বোধন করা হয়েছে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক, এমপি একটি অনলাইন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই প্লাজমা নেটওয়ার্কের উদ্বোধন করেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক আমিনুল হাসান। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, এটুআই ইনোভেশন ল্যাব এবং ই-জেনারেশন এর সহযোগিতায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এই প্লাজমা ডোনেশন নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন এটুআই-এর প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. মো. আবদুল মান্নান, পিএএ এবং অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন এটুআই ইনোভেশন ল্যাবের হেড অব টেকনোলজি ফারুক আহমেদ জুয়েল। ই-জেনারেশন এর গ্রুপ চেয়ারম্যান শামীম আহসান ‘সহযোদ্ধা’ প্ল্যাটফর্মের প্রেক্ষাপট ও পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করেন।

এই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে করোনা রোগীর চিকিৎসায় প্লাজমা দাতা এবং গ্রহীতার মধ্যে একটি সংযোগ তৈরি করবে। এই নেটওয়ার্কটি করোনা পজেটিভ থেকে সুস্থ্য হওয়া রোগীদের কাছ থেকে প্লাজমা সংগ্রহের মাধ্যমে দেশের প্রথম ডিজিটাল প্লাজমা ব্যাংক তৈরি করে স্বাস্থ্যখাতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। করোনা আক্রান্ত রোগীর জন্য ডাক্তারদের পরামর্শের ভিত্তিতে এই ডিজিটাল প্লাজমা নেটওয়ার্ক থেকে প্রয়োজনীয় প্লাজমা সংগ্রহ করতে পারবেন। সহযোদ্ধার ওয়েবসাইটে গিয়ে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী সুস্থ্য হওয়া কোন ব্যক্তি প্লাজমা প্রদানের আগ্রহ প্রকাশ করতে পারেন এবং অসুস্থ্য রোগীর চিকিৎসায় এই প্লাজমা সংগ্রহ করতে পারবেন।

পলক বলেন, “বিশ্বব্যাপী এই করোনাভাইরাস সৃষ্ট স্বাস্থ্য সংকটে বাংলাদেশ সরকার জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সফল পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সরকারের সফল উদ্যোগের ধারাবাহিকতায় এই ‘সহযোদ্ধা’ নেটওয়ার্কটি চালু করা হয়েছে, যা করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় সহযোগিতা করবে। আমরা করোনাভাইরাস মোকাবেলায় বিদ্যমান আইসিটি অবকাঠামোর সুষ্ঠু ব্যবহারের মাধ্যমে জনগণের স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে চাই।”  

আমিনুল হাসান বলেন, “করোনাভাইরাস সম্পূর্ণ ভিন্ন মাত্রার একটি সংকট এবং এর জন্য অভূতপূর্ব স্কেলের প্রতিক্রিয়া প্রয়োজন। বর্তমান পরিস্থিতিতে ‘সহযোদ্ধা’র মতো এমন একটি প্ল্যাটফর্ম খুব জরুরি হয়ে পড়েছে। করোনাভাইরাস মোকাবেলায় স্বাস্থ্যখাতকে এধরনের প্রযুক্তি নির্ভর ব্যবস্থাকে গ্রহণ করা প্রয়োজন এবং আমি এমন উদ্যোগের সাফল্য কামনা করছি।”     

মান্নান বলেন, “এটুআই সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে সাথে নিয়ে করোনা মোকাবেলায় শুরু থেকে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা আশা করি এই ‘সহযোদ্ধা’ প্ল্যাটফর্মটি খুব দ্রুত স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় সফলতার সাথে যুক্ত হবে।”

শামীম আহসান বলেন, “আমরা একটি কঠিন সময় অতিবাহিত করছি কিন্তু আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি হচ্ছে আমরা একসাথে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছি। এই সংকটকালীন সময় মোকাবেলায় সরকারি-বেসরকারি খাত এবং স্বাস্থ্য খাতের সমন্বয়ে তথ্য প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার করা প্রয়োজন। এপ্রেক্ষিতেই ‘সহযোদ্ধা’ নেটওয়ার্কটি তৈরি করা হয়েছে এবং এটি প্রযুক্তির উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে আদর্শিক বহিঃপ্রকাশ ।”

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ, ইউনাইটেড হাসপাতাল, ইউনিভার্সেল হাসপাতাল, এমআইএসটি, ই-ক্যাব, প্রভা হেলথ্, অলওয়েল, গ্রে, বাংলাদেশ সুপার মার্কেট ওনার্স এসোসিয়েশন, পাঠাও, সহজ, বাগডুম এবং চালডাল ডট কম এই উদ্যোগের সাথে যুক্ত হয়েছেন।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে এমআইএসটির বায়োমেডিকেল বিভাগের প্রধান কর্ণেল সৈয়দ মাহফুজুর রহমান, ই-ক্যাবের জেনারেল সেক্রেটারি মোহাম্মদ আবদুল ওয়াহেদ তমাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়-এর ফার্মাকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. সাইদুর রহমান, গ্রে বাংলাদেশের ম্যানেজিং পার্টনার গাউসুল আলম শাওন,  ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান প্রীতি চক্রবর্তী, ল্যাবএইড কার্ডিয়াক হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এম শামীম, এভারকেয়ার হাসপাতালের পরিচালক ডা. আসিফ মাহমুদ, প্রভা হেলথের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সিলভানা কাদের সিনহা, পাঠাও এর সিইও হুসাইন এম ইলিয়াস, সহজ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মালিহা কাদির, বাংলাদেশ সুপার মার্কেট ওনার্স এসোসিয়েশন (বিএসওএ) এর সভাপতি কাজী ইনাম আহমেদ, আইসিটি বিভাগ এবং এটুআই-এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ এবং গণমাধ্যমকর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন।

উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন