বুড়িমারী স্থলবন্দরে অটোমেশন সফটওয়্যারের উদ্বোধন

টেকভিশন২৪ ডেস্ক: স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে গতিশীলতা আনয়ন এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আজ অনলাইনে বুড়িমারী স্থলবন্দরে উদ্বোধন করা হয় ‘ই-পোর্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ সফটওয়্যার।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়-এর বাংলাদেশ স্থলবন্দর এবং এটুআই-এর ডিজিটাল সার্ভিস এক্সিলারেটর কর্তৃক যৌথভাবে আয়োজিত উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত থেকে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি উক্ত সিস্টেমের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি, লালমনিরহাট-১ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: মোতাহার হোসেন, এমপি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম পিএএ।

ই-পোর্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম-এর ফলে বন্দর কর্তৃপক্ষ, সিএন্ডএফ এজেন্ট, আমদানি-রপ্তানিকারকগণ উপকৃত হবেন, সেবা গ্রহীতাদের সময়, খরচ এবং যাতায়াত (টিসিবি) কমবে এবং স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি প্রসার বৃদ্ধি পাবে। সেবা গ্রহীতা এবং সেবা প্রদানকারীগণ ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন, মোবাইল অ্যাপস, ডিজিটাল আইডি কার্ড এবং অনলাইন পেমেন্ট এই ৪টি পদ্ধতিতে সেবার সাথে যুক্ত হতে পারবেন। এই সিস্টেমটির দ্বারা ১৬টি ডিজিটাল সার্ভিস, ৫০০ কার্গো এবং ১২ হাজার উপকারভোগী ইতোমধ্যে সরাসরি সুবিধা ভোগ করেছেন এবং উক্ত সিস্টেমটির মাধ্যমে বছরে আনুমানিক ৬৫-৭০ হাজার গ্রাহক সুবিধা ভোগ করবেন। সিস্টেমের মাধ্যমে আমদানীকারকগণ ঘরে বসেই পেমেন্ট কিংবা অনলাইন ডেলিভারির অর্ডার করতে পারবে, ফলে সময় সাশ্রয়ী হবে এবং বাড়তি খরচের প্রয়োজন হবে না। এছাড়া প্রবেশের সময় বারকোডের মাধ্যমে গ্রাহকের নিজস্ব আইডি তৈরি হওয়ায়, তার সকল আমদানি-রপ্তানি তথ্য ডাটাবেইজে সংরক্ষিত থাকবে।

প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং বিজয়ের এ মাসে বুড়িমারী স্থলবন্দরের ‘ই-পোর্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ চালু করতে পারায় আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনায় এমন ছোট একটি ভূখন্ড নিয়েও বাংলাদেশ আজ বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল-মডেল। সজীব আহমেদ জয়-এর সু’পরামর্শে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে অদম্য গতিতে। এসময় তিনি ‘ই-পোর্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’-এর ফলে বন্দরের সকল কর্মকান্ডের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং ভোগান্তিহীন সেবা প্রদানের পথ সুগম হল বলে মন্তব্য করেন। তিনি আরো বলেন, প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের সাথে আমাদের কানেক্টিভিটি বাড়ছে। এ ডিজিটাল সিস্টেম-এর মাধ্যমে কানেক্টিভিটির কর্মকান্ড আরো সহজ হবে। এর ফলে আমাদের বাণিজ্যক্ষেত্রে ব্যাপক প্রসার ঘটবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ডিজিটাল অগ্রযাত্রার কারণে আজ ঢাকায় বসেও আমরা লালমিনরহাটের মত দূরের একটি জেলার স্থলবন্দরের উদ্বোধন কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হতে পারছি। এজন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব আহমেদ জয়-এর প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, ‘ই-পোর্ট সিস্টেম’এর ফলে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা তৈরি হবে। এর মাধ্যমে গ্রাহকের সেবা এবং পণ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। এ সময় তিনি অন্যান্য বন্দরসমূহকে এ সিস্টেমটি কাস্টমাইজ করে তাদের সেবার মান বৃদ্ধির জন্য আহ্বান জানান।  

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এটুআই-এর প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. মো: আব্দুল মান্নান পিএএ বক্তব্য প্রদান করেন। সিস্টেমটির সম্ভাবনা, সুপারিশ এবং পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে তুলে ধরেন এটুআই-এর পলিসি অ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরী। 

বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ-এর চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) কে. এম. তারিকুল ইসলাম-এর সভাপতিত্বে উক্ত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন লালমনিরহাট জেলার জেলা প্রশাসক মো: আবু জাফর, লালমনিরহাট জেলার পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা (বিপিএম, পিপিএম)। সেবা গ্রহীতা হিসেবে অনুভূতি প্রকাশ করেন আমদানি রপ্তানীকারক সমিতির সভাপতি এবং স্থানীয় উপজেলা চেয়ারম্যান রুহুল আমিন বাবুল, আমদানি রপ্তানীকারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নেওয়াজ নিশাদ এবং সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি হুমায়ুন কবির সওদাগর।

এছাড়াও অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন বুড়িমারী স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক (প্রশাসন) মো: মাহফুজুল ইসলাম ভূঁঞা এবং ডিভাইন আইটি লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইকবাল আহমেদ ফখরুল হাসান (রাসেল), নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং এটুআই-এর কর্মকর্তাবৃন্দ এবং বিভিন্ন গণমাধ্যম সাংবাদিকবৃন্দ।

উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন