ইউনিয়নসমূহে নিরবিচ্ছিন্ন দ্রুতগতির ইন্টারনেট পরিচালনায় সামিট ও ফাইবার এট হোম সাথে চুক্তি করলো বিসিসি

চুক্তিস্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক

টেকভিশন২৪ ডেস্ক: দেশের ২৬০০ ইউনিয়নে দ্রুতগতির ইন্টারনেট অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ, মেরামত, আপগ্রেডেশন, প্রতিস্থাপন, পরিচালনা এবং রেভিনিউ শেয়ারিংয়ের জন্য বেসরকারি অংশীদার সামিট কমিউনিকেশনস লিমিটেড এবং ফাইবার এট হোম লিমিটেড এর সাথে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ বা পিপিপি চুক্তি স্বাক্ষর করলো বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল। ২৬০০টি ইউনিয়নের মধ্যে সামিট কমিউনিকেশনস লিমিটেড ১২৯৩টি ইউনিয়ন এবং ফাইবার এট হোম লিমিটেড ১৩০৭টি ইউনিয়ন উক্ত কার্যক্রম পরিচালনা করবে। চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান দু’টি আগামী ২০ বছর ২৬০০ ইউনিয়নে ইন্টারনেট সেবা সার্বক্ষনিক সচল রাখবে।

বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক রণজিৎ কুমার এবং সামিট কমিউনিকেশনস লি: এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোঃ আরিফ আল ইসলাম ও ফাইবার এট হোম লি: এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্রিঃ জেঃ মোঃ রফিকুর রহমান স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

আজ আগারগাঁওস্থ আইসিটি টাওয়ারে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল অডিটরিয়ামে এ চুক্তিস্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রতিমন্ত্রী বলেন আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির ভিত্তি রচনা করেছেন বঙ্গবন্ধু। আর তাঁর অসমাপ্ত স্বপ্ন বাস্তবায়ন করছেন তাঁর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ডিজিটাল বাংলাদেশের চারটি পিলার নির্ধারণের পর প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় সাড়ে চার হাজার ইউনিয়নে নেটওয়ার্ক স্থাপনে বিটিসিএল সফল না হওয়ায় ইনফো সরকার-৩ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। তাঁর পরামর্শেই একই খরচে এক হাজার ইউনিয়নের পরিবর্তে ২৬০০ ইউনিয়নে এই নেটওয়ার্ক স্থাপন করা সম্ভব হয়েছে। এটাকে টেকসই করতে সরকারি ও বেসরকারি অংশীদারিত্বের মাধ্যমে দেশের ইন্টারনেট সেবা সুনিশ্চিত করতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

পলক আরো বলেন ইনফো সরকার-৩ প্রকল্পটি স্মার্ট বাংলাদেশের চারটি পিলারকেই মজবুত করবে। নদীর তীর ও সমুদ্র বন্দরকে কেন্দ্র করে সভ্যতা গড়ে উঠেছে। এরপর রেল ও বিদ্যুতকে নির্ভর করে গড়ে ওঠে শিল্প। কিন্তু কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের ফলে আমরা এখন গ্লোবাল ভিলেজে পরিণত হয়েছি। সামনে শতভাগ লেনদেন হবে ক্যাশলেস হবে বলে তিনি জানান।

ইন্টারনেট ছাড়া ইনক্লুসিভ উন্নয়ন সম্ভব নয় উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন তথ্যপ্রযুক্তির যুগে ইন্টারনেট ব্যতীত জীবনযাপন অসম্ভব। টেকসই উন্নয়নে ইনফো সরকার সবক্ষেত্রেই শতভাগ সফল হয়েছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারের খরচ হয়েছে ১২০০ কোটি টাকা। ২০ হাজার কিলোমিটার ফাইবার টানা হয়েছে। এর মাধ্যমে শিক্ষা-চিকিৎসা-ব্যবসা-বিনোদন সেবা চলছে।

উল্লেখ্য, আইসিটি বিভাগের অধীন বিসিসি ২০১৭ সালের জানুয়ারীতে “জাতীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অবকাঠামো উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ শুরু করে। চুক্তির শর্ত মোতাবেক আগামী ২০ বৎসরের জন্য বিসিসি কোন অর্থ ব্যয় করবে না। বিসিসি এই চুক্তির সার্বিক বিষয় তদারকি করবে। বিসিসি কর্তৃক বেসরকারি অংশীদারগণের নিকট হতে নির্দিষ্ট রেভিনিউ গ্রহণ করা হবে। ফলে সরকার আর্থিকভাবে লাভবান হবে। চুক্তি অবসানের পর বিদ্যমান নেটওয়ার্কের সকল যন্ত্রপাতি ও অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল সম্পূর্ণ সচল অবস্থায় বেসরকারি অংশীদারগণ বিসিসি’র নিকট ফেরত দিবে। নিরবচ্ছিন্ন ডাটা ও ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করতে পিপিপি চুক্তিতে বাধ্যতামূলকভাবে ৯৯.৯% নেটওয়ার্ক আপটাইম এর বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে। ফলশ্রুতিতে গ্রামীণ পর্যায়ের জনগণ নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবা পাবে।

বিসিসির নির্বাহী পরিচালক রণজিৎ কুমারের সভাপতিত্ব অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আইসিটি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নাবিদ শফিউল্লাহ, ফাইবার এট হোম এর চেয়ারম্যান মঈনুল হক সিদ্দিকী।পিপিপি কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. মোঃ মুশফিকুর রহমান, ইনফো-সরকার (তৃতীয় পর্যায়) প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক প্রনব কুমার সাহা।

উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন