টেকভিশন২৪ ডেস্ক: বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম প্রযুক্তি কোম্পানি গুগলকে ২০ডিসিলিয়ন জরিমানা করেছে রুশ আদালত। জরিমানার অঙ্কটি এত বড় যে, এটি পুরো বিশ্ব অর্থনীতির আকারকেও ছাড়িয়ে গেছে। ছোট করে বলতে গেলে ২-এর পাশে ৩৩টি শূন্য। খবর মানবজমিন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের মোট জিডিপি প্রায় ১১০ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। যেখানে গুগলের প্যারেন্ট কোম্পানি আলফাবেটের বাজারমূল্য প্রায় ২ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। ১৯৯৮ সালে মার্কিন সরকারকে তামাক কোম্পানিগুলো ২০৬ বিলিয়ন ডলার জরিমানা দিয়েছিলো সেই পরিমাণটি সবচেয়ে বড় সিভিল মামলা নিষ্পত্তি হিসাবে রয়ে গেছে। চার বছর আগে এই বিপুল অঙ্কের জরিমানার ঘটনার শুরু। সে সময় গুগলের মালিকানাধীন ইউটিউব ক্রেমলিনপন্থী বেশ কয়েকটি রাশিয়ান মিডিয়ার চ্যানেল ব্যান করে দিয়েছিল। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল সারগ্রাড টিভি এবং রিয়া ফ্যান। নিষেধাজ্ঞা অমান্য ও ব্যবসায়িক নিয়ম লঙ্ঘন করার অভিযোগে গুগলের এই পদক্ষেপ। বিষয়টি নিয়ে মামলা হয় আদালতে। তখন রাশিয়ার আদালত এই ব্যান তুলে নেওয়ার নির্দেশ দেয় গুগলকে। কিন্তু সেই নির্দেশ মানা হয়নি।
ইউক্রেন যুদ্ধের পর ব্যাপারটা আরও জটিল পরিস্থিতিতে দাঁড়ায়। তারপর থেকে গুগল রাশিয়ার ১০০টিরও বেশি ইউটিউব চ্যানেল এবং ৫.৫ মিলিয়নেরও বেশি ভিডিও ব্লক করেছে। ২০২২ সালের মার্চ মাসে দেশে বিজ্ঞাপন পরিষেবাগুলো বন্ধ করে দিয়েছে এবং রাশিয়ার ইউক্রেনে আক্রমণকে সমর্থন করে এমন সামগ্রীর লেনদেন বন্ধ করে রেখেছে।
প্রতিক্রিয়া হিসাবে, রাশিয়ান আদালতের পক্ষ থেকে তুলনামূলকভাবে অনেক ছোট জরিমানা আরোপ করা হয়েছিল। কিন্তু সেটি প্রতি সপ্তাহে দ্বিগুণ হওয়ার ফলে বকেয়া পরিমাণ ব্যাপকভাবে বেড়েছে। জরিমানার বর্তমান মোটের বিশদ বিবরণ প্রকাশিত হয়েছে। যেহেতু গুগল সেপ্টেম্বর থেকে তিন মাসের জন্য ত্রৈমাসিক ৮৮.৩ বিলিয়ন ডলার আয়ের কথা জানিয়েছে। সেই পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে, জরিমানা পরিশোধ করতে কোম্পানিটিকে ৫৬ সেপ্টিলিয়ন (২৪ শূন্য সহ একটি চিত্র) বছরের বেশি সময় লাগবে, যা মহাবিশ্বের বয়সের ৪ ট্রিলিয়ন গুণেরও বেশি।
এ বিষয়ে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানান, জরিমানার এই বিশাল অঙ্কটা আসলে ‘প্রতীকী অর্থপূর্ণ’। সেই সঙ্গে গুগলকে তাদের সম্প্রচারকদের কর্মকাণ্ড সীমাবদ্ধ করা উচিত নয় বলেও মত প্রকাশ করেন তিনি।