মোট গ্রাহকের ৫৫ দশমিক ৪ শতাংশ ফোরজি গ্রাহক নিয়ে ফোরজি সেবায় শীর্ষস্থানে রবি 

টেকভিশন২৪ ডেস্ক:  টেলিযোগাযোগ খাতে সর্বোচ্চ ১ কোটি ৪৭ লাখ ৫০ হাজার সেলফ কেয়ার অ্যাপ ব্যবহারকারী নিয়ে ২০২৩-এর প্রথম প্রান্তিক শেষ করল রবি যা ডিজিটাল কোম্পানি হিসেবে অপারেটরটির অগ্রগতিতে এক বড় সাফল্য। এছাড়া মোট রিচার্জের ৪১ দশমিক ৬ শতাংশ  ডিজিটাল মাধ্যমে সম্পন্ন হওয়ায় কোম্পানির ডিজিটাল রূপান্তরের অগ্রযাত্রায় এক নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে।

এক নজরে প্রথম প্রান্তিক ২০২৩: (জানুয়ারি-মার্চ)

  • সেলফ কেয়ার অ্যাপ ব্যবহারকারী: ১ কোটি ৪৭ লাখ ৫০ হাজার, যা এই খাতে সর্বোচ্চ
  • মোট গ্রাহকের ৫৮ শতাংশ স্মার্টফোন ব্যবহার করেন যার মধ্যে সেলফ কেয়ার অ্যাপ ব্যবহার করেন ৪৫ শতাংশ
  • মোট রিচার্জের ৪১ দশমিক ৬ শতাংশ ডিজিটাল পদ্ধতিতে হয়েছে
  • সক্রিয় গ্রাহক সংখ্যা ৫ কোটি ৫৬ লাখ যা দেশের মোট মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর ৩০ দশমিক ২ শতাংশ
  • ইন্টারনেট গ্রাহক সংখ্যা ৪ কোটি ২১ লাখ যা রবির মোট গ্রাহকের প্রায় ৭৫ দশমিক ৮ শতাংশ
  • মোট গ্রাহকের ৫৫ দশমিক ৪ শতাংশ এবং ডাটা ব্যবহারকারীর ৭৩ দশমিক ১ শতাংশ ফোরজি গ্রাহক
  • মোট আয়ের পরিমাণ ২ হাজার ৩৪৭ দশমিক ৭ কোটি টাকা
  • ৪৪ দশমিক ৮ শতাংশ মার্জিনসহ আর্নিংস বিফোর ইন্টারেস্টট্যাক্সডেপ্রিসিয়েশন এবং এমোর্টাইজেশন (ইবিআইটিডিএ) ১ হাজার ৫১ দশমিক ৬ কোটি টাকা
  • শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস): দশমিক শূন্য ৮ টাকা
  • মূলধনী বিনিয়োগ ২১৫ দশমিক ৯ কোটি টাকা
  • কর পরবর্তী মুনাফা (পিএটি) ৪২ কোটি টাকা
  • রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা ১ হাজার ১০৩ দশমিক ৮ কোটি টাকা যা রবির ২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিকে অর্জিত আয়ের ৪৭ শতাংশ।

রবির মোট গ্রাহকের ৫৮ শতাংশই স্মার্টফোন ব্যবহার করছেন যেখানে টেলিযোগাযোগ খাতে স্মার্টফোন ব্যাবহারকারীর গড় সংখ্যা হল ৫০ শতাংশ। অন্যদিকে রবির ৪৫ শতাংশ স্মার্টফোন ব্যবহারকারী কোম্পানির সেলফ কেয়ার অ্যাপ- মাই রবি এবং মাই এয়ারটেল ব্যবহার করছেন যা রবির ডিজিটাল আধিপত্যের প্রতিফলন।

মোট গ্রাহকের ৫৫ দশমিক ৪ শতাংশ ফোরজি গ্রাহক নিয়ে ২০২৩ সালেও ফোরজি সেবায় শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে রবি যা এ খাতে সর্বোচ্চ। ২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিকে রবি ১৫ হাজার ৮৪৪টি ফোরজি সাইট দিয়ে ৯৮ দশমিক ৪ শতাংশ গ্রাহকের জন্য ফোরজি কভারেজ নিশ্চিত করেছে।

ডাটা ব্যবহারকারীর পরিপ্রেক্ষিতে২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিকে রবির মোট গ্রাহকের প্রায় ৭৬ শতাংশ গ্রাহকই ছিলেন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী যা এ খাতে সর্বোচ্চ এবং ৭৩ দশমিক ১ শতাংশ গ্রাহকই ফোরজি গ্রাহক।

২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিকে রবির ডাটা ব্যবহারকারীরা গড়ে প্রতি মাসে ৬ দশমিক ২৩ জিবি ডাটা ব্যবহার করেছেন। গত বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় প্রতি মাসে গ্রাহক প্রতি ডাটা ব্যবহারের পরিমাণ ৩৪ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে।

চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারজনিত লোকসান এবং উচ্চ কর, বিশেষ করে ২ শতাংশ ন্যূনতম কর্পোরেট করের কারণে কর পরবর্তী মুনাফায় (পিএটি) ডিজিটাল কোম্পানি হিসেবে রবির শীর্ষ অবস্থানের সঠিক প্রতিফলন ঘটেনি; প্রথম প্রান্তিকে পিএটি’র পরিমাণ ৪২ কোটি টাকা।

২০২২ সালের শেষ প্রান্তিকের তুলনায় ২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিকে রবির মোট আয় ৪ দশমিক ১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ২ হাজার ৩৪৭ দশমিক ৭ কোটি টাকা যা ২০২২ সালের একই প্রান্তিকের তুলনায় ১৬ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি।

২০২২ সালের শেষ প্রান্তিকের তুলনায় ৫ দশমিক ২ শতাংশ এবং গত বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় ভয়েস সেবা থেকে রবির আয় বেড়েছে ১৪ দশমিক ৫ শতাংশ।

অন্যদিকে ডাটা সেবায় ২০২২ সালের চতুর্থ প্রান্তিকের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে রবির আয় বেড়েছে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ এবং ২০২২ সালের একই প্রান্তিকের তুলনায় আয় বেড়েছে ১৭ দশমিক ৫ শতাংশ। 

১২ লাখ নতুন গ্রাহকসহ চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে রবির গ্রাহক সংখ্যা ৫ কোটি ৫৬ লাখে পৌঁছেছে যা দেশের মোট মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর ৩০ দশমিক ২ শতাংশ।

২০২২ সালের চতুর্থ প্রান্তিকের তুলনায় ডাটা গ্রাহক সংখ্যা ২ দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৪ কোটি ২১ লাখে পৌঁছেছে। গত বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় ডাটা গ্রাহক সংখ্যা ৬ দশমিক ১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিক শেষে রবির ফোরজি গ্রাহক সংখ্যা ৩ কোটি ৮ লাখে পৌঁছেছে যা ২০২২ সালের চতুর্থ প্রান্তিকের তুলনায় ৬ দশমিক ৬ শতাংশ এবং গত বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় ২৪ শতাংশ বেশি। 

২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিকে ইবিএআটিডিএ ছিল (৪৪ দশমিক ৮ শতাংশ মার্জিনসহ) ১ হাজার ৫১ দশমিক ৬ কোটি টাকা যা ২০২২ সালের শেষ প্রান্তিকের তুলনায় ১ দশমিক ৪ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। গত বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় ইবিএআটিডিএ ২৩ দশমিক ৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) ছিল দশমিক ০৮ টাকা।

২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিকে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ১ হাজার ১০৩ দশমিক ৮ কোটি টাকা জমা দিয়েছে রবি যা ওই প্রান্তিকের মোট আয়ের ৪৭ শতাংশ। একই প্রান্তিকে কোম্পানিটির মূলধনী বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ২১৫ দশমিক ৯ কোটি টাকা।

রবির ডিজিটাল রূপান্তর সম্পর্কে কোম্পানির সিইও রাজীব শেঠি বলেন, ”প্রতিটি সম্ভাব্য উপায়ে আমাদের ডিজিটাল রূপান্তরের যাত্রা ত্বরান্বিত হওয়ায় আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। সর্বোচ্চ সেলফ কেয়ার অ্যাপ ব্যবহারকারী এবং টেলিযোগাযোগ খাতে সর্বোচ্চ ফোরজি গ্রাহক এবং ডাটা ব্যবহারকারীর হার ডিজিটাল ভবিষ্যত তৈরিতে রবির নেতৃত্বরই প্রতিফলন।“  

কোম্পানির আর্থিক ফলাফল সম্পর্কে তিনি বলেন, ”২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিকে দৃঢ় আর্থিক প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে আমরা আশাবাদী আর্থিকভাবে বছরের বাকী সময়টাও ভাল কাটবে। তবে নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকা কিছু বিষয়ের কারণে পিএটিতে আমাদের অগ্রগতির সঠিক প্রতিফলন ঘটছে না। বিশেষ করে ২ শতাংশ ন্যূনতম কর্পোরেট করের প্রভাবে আমাদের চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে পিএটি অর্ধেকের বেশি কমে গেছে। এই অন্যায্য করের কারণে আমাদের পিএটি ৮৯ দশমিক ২ কোটি টাকার পরিবর্তে হয়েছে ৪২ কোটি টাকা। এছাড়া ৭৬ কোটি টাকা বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারজনিত লোকসান রবির সাফল্যে বাঁধা হিসেবে কাজ করেছে। আমাদের ওপর থেকে করের বোঝা কমানোর জন্য কর্তৃপক্ষকে আসন্ন বাজেটে এই খাত থেকে ২ শতাংশ ন্যূনতম কর্পোরেট কর অপসারণের অনুরোধ জানাচ্ছি।“

তিনি জানান, উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগের কল্যাণে বর্তমানে গ্রাহক সেবার মান বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এই বিনিয়োগ অব্যহত থাকায় আগামীতে আরও মানসম্মত সেবা উপভোগ করতে পারবেন রবির গ্রাহকরা।

উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন