রাজশাহীতে ভূমি সেবা কার্যক্রম অটোমেশন কর্মশালায় অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব

ভূমি ব্যবস্থাপনা

টেকভিশন২৪ ডেস্ক : রাজশাহীতে ভূমি ব্যবস্থাপনা ও সেবা কার্যক্রম অটোমেশন বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (৬ মার্চ) সকালে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ঢাকা ভূমি সংস্কার বোর্ড ও রাজশাহী বিভাগীয় প্রশাসনের আয়োজনে উক্ত কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।

রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার জিএসএম জাফরউল্লাহ্‌ এনডিসি সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান আলোচক ছিলেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান।

কর্মশালায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব ও মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি) ডোমেইন বিশেষজ্ঞ মো. আবুল কালাম আজাদ। স্বাগত বক্তব্যে রাখেন জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান সোলেমান খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন, ভূমি ব্যবস্থাপনা অটোমেশন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মোজাফ্ফর আহমেদ, রাজশাহী অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) এ,এন,এম মঈনুল ইসলাম।

প্রধান আলোচকের বক্তব্যে ভূমি সচিব বলেন, ভুমি সেবা মানুষের হাতের মুঠোয় পৌঁছে দিতে কাজ করছে বর্তমান সরকার। রেকর্ডরুম অটোমেশনের ফলে খুব সহজেই জমির পর্চা পাচ্ছে জনগণ। ভূমি সেবা অটোমেশনের স্বীকৃতি হিসেবে জাতিসংঘের পুরস্কার অর্জন করেছে ভূমি মন্ত্রণালয়। জমির মিউটেশন শতভাগ অনলাইনে করার প্রক্রিয়া চলমান। এক লাখ ৪০ হাজার মৌজাশীট ডিজিটালাইজেশন করা হচ্ছে। তিন ধরণের স্যাটেলাইট ইমেজ সংগ্রহের মাধ্যমে ডিজিটাল ল্যান্ড সার্ভে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। আগামী ২০২৪ সালের মধ্যে সকল ভূমি সেবা অটোমেশনের আওতায় আসবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

হেল্পলাইনে কল করলেই ডাকযোগে পৌঁছে যাচ্ছে ভূমি সেবা উল্লেখ করে ভূমি সচিব মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নাগরিক সেবা সহজীকরণে ভূমি ব্যবস্থাপনা ও সেবা কার্যক্রম অটোমেশন করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে কল সেন্টার সেবা চালু হয়েছে। ১৬১২২ নম্বরে ফোন করেই জমির মালিক খতিয়ান ও ম্যাপের আবেদন করে খতিয়ান, নামজারি ফি ও ভূমি উন্নয়ন কর অনলাইনে দিতে পারছেন। সেবা গ্রহীতার ঠিকানায় ডাকযোগে পৌঁছে যাচ্ছে ভূমি সেবা। এ কার্যক্রমের ফলে মোবাইল ফোনে আর্থিক সেবা চালুর মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে তাৎক্ষণিক ফি জমা দেয়া এবং ভূমি অফিসে না গিয়েই অনলাইনে ডিসিআর (ডুপ্লিকেট কার্বন রিসিট) পাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে। স্বল্প সময়ের মধ্যে ১৬১২২ নম্বরে ফোন করেই জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর দিয়ে নামজারির আবেদন করতে পারবেন। প্রস্তুতি চলছে ডিজিটাল সার্ভের। এটি হয়ে গেলে আর ভূমি জরিপের প্রয়োজন হবে না। ভূমি হাত বদলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে খতিয়ান ও ম্যাপ প্রস্তুত হয়ে যাবে। ফলে যুগ যুগ ধরে হয়রানি থেকে দেশের মানুষ রক্ষা পাবে। এসব সেবা চালুর ফলে সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মচারীর ক্ষমতার অপব্যবহারের সুযোগ কমবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ই-পর্চা, ই-রেজিস্ট্রেশন, এলডি ট্যাক্স সিস্টেম, ভার্চ্যুয়াল শুনানি ও ডিজিটাল ব্যবস্থার সাথে সমন্বয় করা হবে।

অবৈধ দখল রোধে আইন করা হচ্ছে উল্লেখ করে ভূমি সচিব মোস্তাফিজুর রহমান আরো বলেন, ভূমির প্রকৃত মালিকের স্বত্ত্ব ও অধিকার নিশ্চিতের পাশাপাশি অবৈধ দখল রোধে আইন করা হচ্ছে। এতে অন্যের জমির মালিক হতে জাল দলিল তৈরির পাশাপাশি মালিকানার চেয়ে বেশি দলিল করা, অতিরিক্ত জমি লিখে নেয়া, আগে বিক্রি বা হস্তান্তরের পরও গোপনে বিক্রি করা, বায়না করা জমি পুনরায় বিক্রি করতে চুক্তিবদ্ধ হওয়া কিংবা ভুল বুঝিয়ে দানপত্র তৈরিসহ উত্তরাধিকারীকে ঠকিয়ে নিজের অংশের চেয়ে বেশি জমি নিজের নামে দলিল করে নেয়ার মতো অপরাধগুলো বন্ধ হবে।

এসময় কর্মশালায় অনলাইন হোল্ডিং এন্ট্রি, ই-নামজারি, ডিজিটাল রেকর্ড রুম অগ্রগতি ও বাস্তবায়ন বিষয়ক মুক্ত আলোচনায় রাজশাহী জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মুহাম্মদ শরিফুল হক সহ বিভিন্ন জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), সহকারী কমিশনার (ভূমি), ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তাগণ অংশগ্রহণ করেন।

উল্লেখ্য, ই-নামজারি শতভাগ অটোমেশন ও উন্নয়ন কর ব্যবস্থাপনা সফটওয়্যারে চলমান ডাটা এট্রি কার্যক্রম সম্পন্নণের প্রতিবন্ধকতা সমূহ চিহ্নিতকরন এবং উত্তারনের উপায়ের কর্মশালায় আলোচনা করা হয়েছে।

উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন