বিসিএস কম্পিউটার সিটির ৫ দিনব্যাপী “বিজয়ে প্রযুক্তি মেলা ২০২১” উদ্বোধন করেন : মোস্তাফা জাব্বার

টেকভিশন২৪ ডেস্ক: যথাযথ মর্যাদা সারাদেশে উদযাপিত হচ্ছে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ‘বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি’র আয়োজনে শুরু হয়েছে ৫ দিনব্যাপী ‘বিজয়ে প্রযুক্তি মেলা ২০২১’।

এ উপলক্ষে ৭ ডিসেম্বর মঙ্গলবার বিসিএস কম্পিউটার সিটির নীচতলায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। এ সময় তিনি বলেন, বিজয়ের মাসের ১২ তারিখে বাংলাদেশে ৫জি চালু হবে। এর ফলে প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বাংলাদেশে নতুন যুগে প্রবেশ করবে। বাংলাদেশে ২০০৮ সালে মাত্র ৮ লাখ লোক ইন্টারনেট ব্যবহার করতো। ২০২১ সালে এসে সেই সংখ্যা দাড়িয়েছে ১২ কোটিতে। এতো ব্যবহারকারী থাকার পরও আমাদের ইন্টারনেট বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করছি। ২০২৪ সালে দেশে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল চালু হবে। দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল স্থাপন করা হবে বলে জানান ডাক ও টেলিযোগযোগমন্ত্রী।

বাংলাদেশের তথ্য-প্রযুক্তি বিকাশে আইডিবি ভবনে অবস্থান তুলে ধরে মোস্তাফা জব্বার বলেন, বিসিএস কম্পিউটার সিটির আইসিটি সেক্টরে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রেখেছে। ১৯৯৮ সালে দেশে প্রথম আইডিবি ভবনে তথ্য-প্রযুক্তি মেলা শুরু হয়। সেই মেলা একটা প্রজন্মের কাছে প্রযুক্তির ধারণার বীজ বুনে দেয়। শুধুমাত্র কম্পিউটার বিক্রির জন্য একটি আলাদা মার্কেট হতে পারে সেই এটা কেউ কল্পনাও করে নাই। আইডিবির এই মার্কেট অনুসারে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রযুক্তি পণ্যের জন্য অনেকগুলো আলাদা মার্কেট গড়ে উঠেছে।

তিনি আরও বলেন, আইডিবির কম্পিউটার সিটি শুধু কম্পিউটার বিক্রিই করে না। একই সঙ্গে এই মার্কেট ব্যবহারকারীদের দক্ষ করে গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন ভাবে আবদান রাখছে। এবং অনেকে ক্ষেত্রে ট্রেনিংয়েরও ব্যবস্থা করেছে। কম্পিউটারের পাশাপাশি এই মার্কেট বিভিন্ন প্রযুক্তি ডিভাইজ বিক্রি করবে বলে আশা করেন তিনি।  বিজয়ের মাসে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের কথা স্মরণ করে মোস্তাফা জব্বার বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে এ মার্কেট এগিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির (বিসিএস) সভাপতি ও ওয়ার্ল্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি সার্ভিসেস অ্যালায়েন্সের (উইটসা) এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহিদ-উল-মুনীর বলেন, দেশের তথ্য-প্রযুক্তি খাতকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য এ মেলা গুরুত্বপূণ ভূমিকা পালন করবে। সারাদেশের মানুষের কাছে এই মার্কেট একটি গুরুত্ব রয়েছে। কম্পিউটার, ল্যাপটপ বিক্রির পাশাপাশি বিসিএস কম্পিউটার সিটিতে মোবাইল ফোনের বিক্রি হলে এক ছাদের নিচে সব পাওয়া যেতে ক্রেতাদের জন্য সুবিধা হতো বলে জানান তিনি।

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও ড্যাফোডিল ফ্যামিলির চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান বলেন, বিসিএস কম্পিউটার সিটি আমার জন্য একটি আবেগের জায়গা। হাঁটিহাঁটি পা পা করে এগিয়ে যাচ্ছে কম্পিউটার সিটি। আরও এগিয়ে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের এই সিটির সঙ্গে যুক্ত করতে হবে।

বিসিএস কম্পিউটার সিটির প্রথম সভাপতি ও রায়ান্স আইটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ হাসান জুয়েল বলেন, এই খারাপ সময়ের মধ্যেও আইডিবি ভবনের বিসিএস কম্পিউটার সিটির মার্কেট বেশ ভালো ভাবেই টিকে আছে। এবং ব্যবসা করছে। যে কোনো মহামারি মোকাবেলা করেও যেনো আমার ভালোভাবে টিকে থাকতে পারি তার জন্য আগাম প্রস্তুতি নিতে হবে।  

স্মার্ট টেকনোলিজস্‌ (বিডি) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মাদ জহিরুল ইসলাম বলেন, কম্পিউটার বাজার সম্প্রসারণের জন্য আইডিবি বিসিএস কম্পিউটার সিটি অনেক বড় ভুমিকা পালন করেছে। বিশ্বের কোথায় এক ভবনের শুধু কম্পিউটারের বাজারে নেই। এই মাকেটে মানুষ শুধু কম্পিউটার কিনতেই আসে না। এখাসে কম্পিউটার সম্পকে জানতেও আসে।

গ্লোবাল ব্র্যান্ড (প্রাঃ) লিমিটেডের চেয়ারম্যান আব্দুল ফাত্তাহ বলেন,  নতুন নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই মার্কেটকে আরও ভালো ভাবে সাজাতে হবে। আকর্ষণীয় করে গড়ে তুলতে হবে। শুধু মার্কেটের অবকাঠামো না, মার্কেটের কর্মীদেরও দক্ষ করে গড়ে তোলার জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। এই সঙ্গে অনলাইন ও অফলাইন দুই ভাবে বিক্রির প্রস্তুতি নিতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে এ এল মাজাহার ইমাম চৌধুরী (পিনু চৌধুরী) বলেন, সেরা মান ও সেরা পণ্য কেনার জন্য বিসিএস কম্পিউটার সিটির বিকল্প সারাদেশেও নেই। এই মেলার মাধ্যমে আমরা করোনা পরবতী নিজেদের অবস্থান তুলে ধরতে চাই।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্যে মেলার আহব্বায়ক মো. মাহাবুবুর রহমান বলেন, এইবার মেলায় থাকবে না কোন এন্ট্রি টিকেট এবং ফেসবুকে রেজিস্টেশন করলেই থাকবে উপহার। প্রত্যেক ৫০০ টাকার  পণ্য  ক্রয় করলেই থাকছে একটি করে লাকী কুপন । মেলায় থাকছে বিশেষ ছাড় ও অনেক অনেক উপহার ।

সিটি কমিটির সদস্য ও মিডিয়া কনভেনার মো. জাহেদ আলী ভূঁইয়া মেলায় সকলকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং সকল স্বাস্থবিধি মেনে চলার জন্য আহবান জানিয়েছেন।

মেলা চলবে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রতিদিন মেলা খোলা থাকবে সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। এবারের মেলায় স্পন্সর করেছেন আসুস, গিগাবাইট, লেনোভো ও টেন্ডা।

উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন