প্রতি ১০০ দিন পর সদস্যদের কাছে জবাবদিহি করবে ওয়ান টিম

রাসেল টি আহমেদ।

টেকভিশন২৪ ডেস্ক: আগামী ২৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) এর কার্যনির্বাহী পরিষদের নির্বাচন। সময় যতই ঘনিয়ে আসছে ততই জমে উঠছে নির্বাচনী প্রচারণা। ইতিমধ্যে বেসিসের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি ও টিম ক্রিয়েটিভের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেল টি আহমেদের নেতৃত্বাধীন ‘ওয়ান টিম’ প্যানেলের নির্বাচনী ইশতেহার সদস্যদের মাঝে ব্যপক সাড়া ফেলেছে।

গত বুধবার প্রার্থী পরিচিতি সভায় নিজের প্যানেলের নির্বাচনী ইশতেহার তুলে ধরেন রাসেল টি আহমেদ। ওয়ান টিম প্যানেলের ওয়েবসাইটেও (https://www.oneteambd.com/) সেটি প্রকাশ করা হয়েছে।

রাসেল টি আহমেদ জানান, ওয়ান টিমের ইশতেহারে বেসিস, বেসিসের সদস্য কোম্পানি ও দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে আমরা আমাদের কর্ম-পরিকল্পনা তুলে ধরেছি। আমরা নির্বাচিত হলে প্রতি ১০০ দিন অন্তর বেসিসের সদস্যদের মুখোমুখি হবো এবং আমাদের জবাবদিহিতা প্রকাশ করবো। আমরা কি করেছি আর কি করতে পারি নাই সেগুলো তুলে ধরবো। সেখানে পরবর্তী ১০০ দিনের কর্ম-পরিকল্পনা তুলে ধরা হবে। স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী বিভিন্ন পরিকল্পনাকে আমরা এভাবে স্বচ্চতা ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে বাস্তবায়ন করবো। আমাদের এই পরিকল্পনা সম্পর্কে ইতিমধ্যেই সদস্যদের কাছ থেকে খুবই ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি।

নির্বাচিত হলে ওয়ান টিমের প্রথম ১০০ দিনের কর্ম-পরিকল্পনায় রয়েছে, বেসিসের একজন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কিংবা নির্বাহী পরিচালক নিয়োগ দেয়া; শর্ট কোডের মাধ্যমে বেসিসের সদস্যদের জন্য কল সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা; বিশেষ বর্ধিত কার্যনির্বাহী কমিটি/ পরামর্শক কমিটি/ কার্যকরী স্থায়ী কমিটি গঠন করা; ২০২২ সালের মার্চ মাসের মধ্যে বেসিস সফটএক্সপো আয়োজন করা এবং ডিজিটাল প্রমোশন সেল (ডিপিসি) ও বেসিস মার্কেট রিসার্চ সেল (বিএমআরসি) গঠন করা।

প্রথম ১০০ দিনের বাইরেও স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করেছে ওয়ান টিম। এসবের মধ্যে রয়েছে, বেসিস সচিবালয়কে সেবাবান্ধব করা; সদস্যদের জন্য সহজ বিনিয়োগের সুবিধা ও আর্থিক প্রণোদনা দ্রুত প্রাপ্তি নিশ্চিত করা; অন্যান্য ইন্ডাস্ট্রি ও বাণিজ্য সংগঠনের সাথে সম্পর্ক জোরদার করা ও যৌথ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা; তথ্যপ্রযুক্তি খাতের জন্য পর্যাপ্ত জনবল তৈরি করা ও রিসোর্স শেয়ারিং সুবিধার ব্যবস্থা করা এবং সরকারি সুযোগ-সুবিধায় সকল সদস্য যাতে সমান সুযোগ পান সেটি নিশ্চিত করা।

নির্বাচিত হলে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে ওয়ান টিম ১০টি নীতিমালা নিয়ে কাজ করবে। এগুলো হলো- তথ্যপ্রযুক্তি খাতের জন্য ট্যাক্স অব্যহতি সুবিধা ২০৩০ সাল পর্যন্ত বর্ধিত করা, ইকুইটি অ্যান্ড লং টার্ম লোন পলিসি (পূর্ববর্তী ইইএফ) পরিবর্তন করা ও নতুন কোম্পানির জন্য সহজীকরণ, ভ্যাট সফটওয়্যারে সকল সার্টিফায়েড বেসিসের সদস্য কোম্পানিকে এনবিআর কর্তৃক এনলিস্ট করা, বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমতি ছাড়াই বেসিস সদস্যরা যাতে সফটওয়্যার লাইসেন্সিং ফি পরিশোধ করতে পারেন সেটির ব্যবস্থা করা, ২০২৫ সাল নাগাদ ২৫ লাখ কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা ও সরকার কর্তৃক ফ্রেশ গ্রাজুয়েটদের বেতনের অর্ধেক পরিশোধকরণ, সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর সেবায় আগামী ৩ বছরের জন্য ভ্যাট মওকুফকরণ, আয়কর অব্যহতি সনদ বাধ্যতামূলক না করা, রেমিটেন্স আসার এক মাসের মধ্যে ১০ শতাংশ ক্যাশ প্রণোদনা নিশ্চিতকরণ, সরকারি সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর কাজে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে বেসিসের সদস্যপদ বাধ্যতামূলক ও স্থানীয় কোম্পানির কমপক্ষে ৫১ শতাংশ শেয়ার নিশ্চিত করা এবং যেসব স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনা করছে তাদেরকে প্রয়োজনীয় নীতিমালা সহায়তার মাধ্যমে বাংলাদেশি সফটওয়্যার ও সেবা নিতে আগ্রহী করে তোলা।

ওয়ান টিম প্যানেলের নির্বাচনী ইশতেহার সময়োপযোগী ও সদস্যবান্ধব আখ্যায়িত করে বেসিসের সদস্য কোম্পানি ইনোভেশন ইনফরমেশন সিস্টেম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ সানোয়ারুল ইসলাম বলেন, ওয়ান টিমের নির্বাচনী ইশতেহার সদস্যদের আকাঙ্খা ও প্রত্যাশার প্রতিফলন। আমরাও মনে করি, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সাথে কার্যনিবাহী কমিটি কাজ করলে বেসিস তথা তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। পর্যাপ্ত জনবল তৈরি, সদস্যদের সহজ বিনিয়োগ সুবিধা, ঋণ ও প্রণোদনার মাধ্যমে ব্যবসা করার সুযোগ দিলে ও বেসিস সচিবালয়কে সেবামুখী করতে পারলেই এই খাতের উন্নয়ন হবে। এক্ষেত্রে ওয়ান টিমের ইশতেহার আমাদেরকে আশান্বিত করেছে।

উল্লেখ্য, ১১ জন নির্বাচিত সদস্য নিয়ে গঠিত হবে বেসিসের ২০২২-২৩ মেয়াদের কার্যনির্বাহী কমিটি। একটি পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় বাকি ১০টি পদের বিপরীতে এবার নির্বাচনে লড়ছেন ২৮ জন প্রার্থী।

উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন