ন্যাশনাল রোমিং ফিল্ড ট্রায়ালে বাংলালিংক ও টেলিটক

ন্যাশনাল রোমিং ফিল্ড ট্রায়াল শুরু করেছে বাংলালিংক ও টেলিটক
ন্যাশনাল রোমিং ফিল্ড ট্রায়াল শুরু করেছে বাংলালিংক ও টেলিটক

টেকভিশন২৪ ডেস্ক: বাংলালিংক এবং টেলিটক একটি অগ্রণী উদ্যোগ হিসেবে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ন্যাশনাল রোমিং ফিল্ড ট্রায়াল চালুর ঘোষণা দিয়েছে। এই ফিল্ড ট্রায়ালের মাধ্যমে উভয় অপারেটর তাদের অপেক্ষাকৃত কম নেটওয়ার্ক কাভারেজের এলাকায় নির্বিঘ্নে একে অপরের নেটওয়ার্ক ব্যবহার করার পরীক্ষামূলক কার্যক্রম চালাবে। প্রথম পর্যায়ে দেশের নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় পোস্ট-পেইড ভয়েস এবং এসএমএস সেবা পরীক্ষা করা হবে। পরবর্তী পর্যায়ে প্রিপেইড সেবা ও ডেটা পরীক্ষা করে দেখা হবে।

এই কৌশলগত অংশীদারিত্ব দেশব্যাপী টেলিটক ও বাংলালিংক গ্রাহকদের মোবাইল সংযোগের পরিসর বৃদ্ধি করার পাশাপাশি অপারেটর দুইটির মধ্যে নেটওয়ার্ক শেয়ারিংয়ে ভূমিকা রাখবে। ফিল্ড ট্রায়াল শেষ হওয়ার পরে সেবাটি বাণিজ্যিকভাবে চালু করা হবে। এর ফলে গ্রাহকরা দেশব্যাপী বিস্তৃত নেটওয়ার্ক কাভারেজের মাধ্যমে ভয়েস, এসএমএস ও ডেটা ব্যবহার করতে পারবেন। এই উদ্যোগ দেশে শক্তি সংরক্ষণ ও পরিবেশ-বান্ধব অবকাঠামো নির্মাণকেও উৎসাহিত করবে। এই পরিষেবাটি বর্তমানে ভারত, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, এবং যুক্তরাজ্য সহ অন্যান্য ২২টি দেশে চালু আছে।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার মঙ্গলবার বাংলাদেশ সচিবালয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে জাতীয় রোমিং ফিল্ড ট্রায়ালের উদ্বোধন করেন। তিনিবলেন, “আমি টেলিটক এবং বাংলালিংক-এর মধ্যে এই পার্টনারশিপ  দেখে আনন্দিত। আমি বিশ্বাস করি, এই উদ্যোগটি বাংলাদেশের টেলিকম অপারেটরদের মধ্যে নেটওয়ার্ক শেয়ারিংয়ের সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে।  এটি উভয় অপারেটরের জন্যই ইতিবাচক, কারণ এর মাধ্যমে তারা একে অপরের অবকাঠামো ব্যবহার করতে পারবে। বিশেষ করে এর মাধ্যমে টেলিটক সারা দেশে বাংলালিংক-এর ১৫,০০০-এরও বেশি সাইট ব্যবহার করে নেটওয়ার্ক কাভারেজ সম্প্রসারণ করার সুযোগ পাবে। আমি অত্যন্ত আগ্রহের সাথে এই পরীক্ষামূলক কার্যক্রমের বাণিজ্যিক সূচনার প্রত্যাশা করছি। এটি স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে একটি অনুসরণীয় উদ্ভাবনী পদক্ষেপ বলে আমি বিশ্বাস করি”

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ ক‌মিশনের চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেন, “নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে বিটিআরসি সবসময় টেলিকম খাতে ইন্ট্রা-ইন্ডাস্ট্রি সহযোগিতাকে উৎসাহিত করে এবং সমর্থন করে। ন্যাশনাল রোমিং ফিল্ড ট্রায়াল এই ধরনের সহযোগিতার একটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ। আমরা টেলিটক এবং বাংলালিংকের এই ট্রায়াল প্রক্রিয়াটিতে সহযোগিতা প্রদান করছি  এবং আশা করি গ্রাহকদের জন্য এই উদ্যোগটি  শীঘ্রই বাণিজ্যিকভাবে শুরু হবে। আমরা বিশ্বাস করি এই ফিল্ড ট্রায়াল থেকে অর্জিত ফলাফল  আমাদের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার ভিশনে বিশেষ অবদান রাখবে।”

বাংলালিংক-এর চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (সিইও) এরিক  অস বলেন, “টেলিকম অবকাঠামো শেয়ারিংয়ের  ক্ষেত্রে আরেকটি অগ্রণী পদক্ষেপ নেওয়ার লক্ষ্যে টেলিটক-এর সাথে এই যৌথ উদ্যোগ নিতে পেরে বাংলালিংক গর্বিত। বাংলাদেশে এই ধরনের প্রথম উদ্যোগ সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশ রূপকল্প বাস্তবায়নে আমাদের অঙ্গীকারকে প্রতিফলিত করে। বাণিজ্যিকভাবে চালু হলে এটি উভয় অপারেটরের গ্রাহকদেরকে দেশব্যাপী নিরবচ্ছিন্ন ও উচ্চ মানের নেটওয়ার্ক ব্যবহারের অভিজ্ঞতা দেবে। এই ফিল্ড ট্রায়ালের সফল বাস্তবায়ন শুধু আমাদের সেবাগুলিকে উন্নত করবে না, বরং ভবিষ্যতে বিভিন্ন খাতের মধ্যে অংশীদারিত্ব ও নানা ধরনের সুযোগের পথ প্রশস্ত করবে।”

টেলিটক-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ. কে. এম. হাবিবুর রহমান বলেন, “ন্যাশনাল রোমিং বাণিজ্যিকভাবে চালু হলে তা হবে বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ ইতিহাসে একটি বিশেষ মাইলফলক। ন্যাশনাল রোমিং এর যৌথ ফিল্ড ট্রায়ালে যুক্ত থাকতে পেরে টেলিটক গর্বিত। আশাকরি সাফল্যজনক ভাবে ফিল্ড ট্রায়াল শেষে রোমিং চালুকরা হলে তা উভয় অপারেটরের গ্রাহকদের উন্নত নেটওয়ার্ক সেবা নিশ্চিত করবে।”

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)-এর চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, টেলিটক ও বাংলালিংক-এর প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে এই উদ্ভাবনী ফিল্ড ট্রায়ালের সফট লঞ্চ অনুষ্ঠিত হয়।

উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন