কোইকার সঙ্গে যৌথ প্রকল্পে আগ্রহী সরকার : তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী পলক

টেকভিশন২৪ ডেস্ক: বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানিগুলো দক্ষিণ কোরিয়ায় ব্যবসা সম্প্রসারণে আরও বেশি সুযোগ তৈরিতে দুই দেশের যৌথ প্রকল্পে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

কোরিয়া ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (কোইকা) সঙ্গে এই যৌথ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।

প্রতিমন্ত্রী সম্প্রতি রাজধানীর একটি হোটেলে কোইকার ৩০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই আগ্রহের কথা তুলে ধরেন।

বাংলাদেশ তথ্যপ্রযুক্তি খাতে অনেক এগিয়ে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, তারুণ্য শক্তির বাংলাদেশের ৫০ শতাংশ জনগোষ্ঠীর বয়স ২৫ বছরের নিচে। দেশের ১৫০টি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিবছর ৫০ হাজার স্নাতক কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করে। এই ডিজিটাল-প্রেমী তরুণরা আইটি পেশাদার ফ্রিল্যান্সার এমনকি উদ্যোক্তা হিসেবেও দেশে-বিদেশে যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখছে।

তিনি জানান, অক্সফোর্ড ইন্টারনেট ইনস্টিটিউটের মতে বিশ্বব্যাপী অনলাইন কর্মীদের ১৬ শতাংশই বাংলাদেশী। ফলে ডিজিটাল কর্মীদের দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎস হয়ে উঠছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি ও তথ্যপ্রযুক্তি সক্ষম সেবা শিল্পও গত দশকে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ২০০৮ সালে মাত্র ৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের রপ্তানি শিল্প থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রপ্তানি শিল্পে উন্নীত হয়েছে। আগামী ২০২৫ সালে আইসিটি খাতে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার  লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বাংলাদেশের আইসিটি খাত দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ ও দ্রুত বর্ধনশীল খাত । প্রযুক্তি বাজার হিসেবে এখানে এআই, ব্লকচেইন, এআর, ভিআর, আইওটি, রোবটিক্স, মেশিন লার্নিং ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষেত্রে  বিনিয়োগের আকর্ষণীয় সুযোগ, সুবিধা গুলোর বিষযয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন পলক ।

তিনি বলেন, এখানে অর্থনীতির প্রায় প্রতিটি খাতে বিদেশী বিনিয়োগের পরিমাণের উপর কোন বিধিনিষেধ নেই। একটি উচ্চ অগ্রাধিকার রপ্তানি খাত হিসেবে, সকল সফটওয়্যার এবং আইটি সার্ভিস কোম্পানি সফটওয়্যার, আইটিইএস, এবং আইসিটি হার্ডওয়্যার রপ্তানিতে ২০২৪ সাল পর্যন্ত কর অব্যাহতি সুবিধা পাচ্ছে। এছাড়াও সরকারের পক্ষ থেকে দীর্ঘমেয়াদী ইকুইটি ফান্ড এবং স্বল্পমেয়াদী ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল ফাইন্যান্স করা হচ্ছে ।

ভবিষ্যত প্রযুক্তিতে একসঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে কোরিয়া সরকারকে ডিজিটাল বাংলাদেশের একজন বিশ্বস্ত বন্ধু মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, কোইকার মাধ্যমে কোরিয়া সরকারের প্রযুক্তিগত ও আর্থিক সহায়তায় একটি আন্তর্জাতিক মানের আইসিটি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ কোরিয়া ইনস্টিটিউট অফ ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি (বিকেআইআইসিটি) প্রতিষ্ঠা হয়েছে।

‘ই-গভর্নমেন্ট প্রতিষ্ঠায় কোরিয়ার অভিজ্ঞতা ব্যবহার করে কোইআইসিএ’র সাথে যৌথউদ্যোগে ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য ই-গভর্নমেন্ট মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করা হয়েছে। এছাড়াও আইসিটি বিভাগ, কোরিয়া টেলিকম ও আইওএম কর্তৃক বাস্তবায়িত “ডিজিটাল দ্বীপ মহেশখালী” প্রকল্পটি কক্সবাজারের উপজেলাকে উচ্চ গতির ইন্টারনেট, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ, মোবাইল স্বাস্থ্য সেবা, তথ্য, সৌর বিদ্যুৎ ও ই-কমার্সের সাথে সংযুক্ত করেছে। ইডিসিএফ এবং কোরিয়া এক্সিম ব্যাংক থেকে একটি স্বল্প সুদের ঋণ নিয়ে বাস্তবায়িত বাংলাগভনেট প্রকল্প একটি একক নেটওয়ার্কের অধীনে সারা দেশের সকল সরকারী প্রতিষ্ঠানকে সংযুক্ত করেছে। আইডিয়াথন আয়োজনও বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার আরেকটি সফল যৌথ আইসিটি উদ্যোগ’ উল্লেখ করছিলেন তিনি।

কোরিয়া বাংলাদেশ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন প্রেসিডেন্ট মঞ্জুর হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী।

কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জ্যাং-গুনে, কোরিয়া ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (কোইকা) কান্ট্রি ডিরেক্টর মিস ইয়াং আদো অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন