অনলাইনে পর্যটন বিষয়ক তথ্যচিত্রের উদ্বোধন

টেকইকম ডেক্স : সুনামগঞ্জ জেলার টাঙ্গুয়ার হাওরে গ্রামভিত্তিক সমন্বিত পর্যটন নিয়ে বৃহস্পতিবার, ২১ মে ২০২০ রাতে একটি তথ্যচিত্রের উদ্বোধন হয়।

অনলাইনে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে এই তথ্যচিত্রের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত সচিব) জাবেদ আহমেদ। “Daahuk: A Pursuit of Sustainable Tourism” নামক এই তথ্যচিত্রটিতে মোট ১২ মিনিট ৫৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিও চিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে টাঙ্গুয়ার হাওরের পর্যটনের বিভিন্ন সম্ভাবনা, বর্তমান চিত্র, কর্মসংস্থান, মানুষের জীবনযাত্রা ও সংশোধনের বিভিন্ন দিকগুলো এবং হাওরে উদ্যোগ গ্রহণের বিভিন্ন সুযোগ।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে জাবেদ আহমেদ হাওর অঞ্চলের পর্যটন ভিত্তিক এই তথ্যচিত্রটির অত্যন্ত প্রশংসা করেন। তরুণদের পর্যটন নিয়ে এ ধরনের ক্রিয়েটিভ কাজকে তিনি অনুপ্রাণিত করেন। সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে দেশের পর্যটন খাতকে আরো এগিয়ে নেওয়া যাবে বলেও তিনি মত প্রকাশ করেন।

অতিথি হিসেবে আইসিটি বিভাগের স্টার্টআপ বাংলাদেশ- iDEA প্রকল্পের পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) সৈয়দ মজিবুল হক বলেন পর্যটন শিল্প বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প। এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হলে সবাইকে অংশগ্রহণ করতে হবে। পর্যটন শিল্পের বিকাশ ও উন্নয়নকে ঘিরে তথ্য-প্রযুক্তি ভিত্তিক উদ্যোগকে তিনি স্টার্টআপ বাংলাদেশ প্ল্যাটফর্মে আবেদনের জন্য অনুরোধ জানান। স্টার্টআপ বাংলাদেশ- iDEA প্রকল্প থেকে ঐ সকল স্টার্টআপদের সর্বোচ্চ সহোযোগিতার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

সাধারণত বৃষ্টির দিনে পাহাড়ি ঢলের ফলে টাঙ্গুয়ার হাওরের কাছাকাছি বিভিন্ন এলাকার শস্য ও ফসলি ক্ষেতসমূহ পানিতে তলিয়ে যায়।  এর ফলে সমস্যার মধ্যে পরতে হয় কৃষক বা প্রকৃতির উপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করা মানুষগুলো। যদিও এই জলরাশির ফলে এই অঞ্চলের মানুষের মধ্যে আর্থিক সংকট বা অভাবের দেখা মিলে কিন্তু ব্যাতিক্রম হিসেবে সামান্য আয়ের মুখ দেখছেন টাঙ্গুয়ারের আশেপাশে কয়েক গ্রামের মানুষ। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে বৃষ্টির শেষে টাঙ্গুয়ারের এই জলরাশি ঘেষে দূরের খাসিয়া, জৈন্তা পাহাড়ের নীলচে অবয়ব দেখতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভিরছে পর্যটকরা।

এই পর্যটকদের সাথে স্থানীয়দের সম্পৃক্ত করতে কাজ করছে “ডাহুক” নামে একটি উদ্যোগ। সুনামগঞ্জ জেলার টাঙ্গুয়ার হাওরে “ডাহুক” কাজ করছে সমন্বিত পর্যটন নিয়ে যেখানে প্রকৃতিকে তাঁর মত রেখে স্থানীয় লোকেদের সর্বোচ্চ কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে চায় তারা। একই সাথে “ডাহুক” বিশ্বাস করে, পর্যটন মানে ‘সংযোগ’। ডাহুকের মাঝিরা শহুরে পর্যটকদের টাঙ্গুয়ারের বিভিন্ন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখাতে সাহায্য করছে ফলে গ্রামবাসীদের সরাসরি অংশগ্রহণ স্থানীয়দের আয়ের উৎসে পরিবর্তন নিয়ে আসছে। মূলত হাওর অঞ্চলের দৈনন্দিন জীবনপ্রণালী ও সচেতনতা বৃদ্ধি, প্রাকৃতিক অপরূপ সৌন্দর্য, পর্যটন ক্ষেত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবার বিভিন্ন দিক ও তাদের সম্ভাবনার বিভিন্ন চিত্র এই তথ্যচিত্রে ফুটে উঠেছে। এই তথ্যচিত্রটির মাধ্যমে দেশের অন্যান্য দর্শনীয় পর্যটন স্থানগুলোকেও প্রতিষ্ঠিত করবার উদ্যোগ নিতে অনুপ্রাণিত করা হয়েছে।

বলা যায় এই তথ্যচিত্রে বাংলাদেশেরই হাওর অঞ্চলের একটি গল্প ফুটিয়ে তুলেছেন নির্মাতাগণ। তথ্যচিত্রটি নির্মাণে Sketchboard Interactive এবং একদল তরুণ নির্মাতার শ্রম মিশে আছে। পরিচালনা ও সম্পাদনা করেছেন জিয়াউস সামস্। তথ্যচিত্রটি ক্যামেরাবন্ধী করেছেন আশরাফুল হক ইমু, ইফতেখায়রুল হক এবং ইফতেখার রাকিন। এছাড়া এই তথ্যচিত্রটিতে ড্রোন ব্যবহারের মাধ্যমে চমৎকারভাবে বিভিন্ন দৃ্শ্যকে ফুটিয়ে তুলতে কাজ করেছেন সাকিব উল আলম এবং সাদমান ‍সাদিক।

ডাহুকের ফেইসবুক পেইজে তথ্যচিত্রটি সকলের জন্য উন্মুক্ত রাখা আছে। তথ্যচিত্রটির লিংক- https://web.facebook.com/743253465854473/videos/719253692217070/

অনলাইনে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কম্বাইনড ট্যুারিজম অ্যালায়েন্স এর কনভেনর মোখলেছুর রহমান, ভারতের অরুনাচল স্টেটের ট্যুারিজম বিভাগের পরামর্শক রাজ বসু, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. সুফি মোস্তাফিজুর রহমান, প্রত্নতত্ববিদ ড. শাহনাজ হুসনে জাহান, প্রফেসর ড. মো. এনায়েত হোসেন, “ডাহুক” এর উদ্যোক্তা মাগফি রেজা, আইডিয়া প্রকল্পের স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান আনন্দ মাল্টিমিডিয়ার পরিচালক মুখলেছুর রহমান মামুন, বাংলাদেশ ট্যুরিজম ফাউন্ডেশনের পরিচালক জয়ীতা শেখ সহ অনেকে।

উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন