বাংলাদেশ ক্যাশলেস সোসাইটির দিকে ধাবিত হচ্ছে : মোস্তাফা জব্বার

টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার

টেকভিশন২৪ ডেস্ক: ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, শক্তিশালী ডিজিটাল অবকাঠামো গড়ে তোলার ফলে বাংলাদেশ একটি ক্যাশলেস সোসাইটির দিকে ধাবিত হচ্ছে। আমাদের লক্ষ‌্য কাগজের মূদ্রাহীন সমাজ গড়ে তোলা।

ডিজিটাইজেশনের ফলে ২০০৯ সালের পর থেকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো অভাবনীয় রূপান্তর হয়েছে। ডিজিটাল ব্যাংকিং দেশের সাধারণ মানুষের অতি পরিচিত ও জনপ্রিয় একটি সেবায় রূপান্তরিত হয়েছে। মন্ত্রী মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসের ক‌্যাশ আউট এবং টাকা পাঠানোর খরচ যৌক্তিক পর্যায়ে কমিয়ে এনে গ্রাহক স্বার্থ রক্ষার মাধ‌্যমে ক‌্যাশলেস সোস‌্যাইটির অগ্রযাত্রাকে আরও বেগবান করতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সমন্বিত ভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।

মন্ত্রী আজ ঢাকার আগারগাঁওয়ে পর্যটণকর্পোরেশন হলে ডিজিটাল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ‌্যমে নারী গৃহকর্মীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন এবং নারী নিয়োগদাতাদের ভূমিকা শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। মানুষের জন‌্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ব্রেকিং দ‌্য সাইলেন্স এর নির্বাহী পরিচালক রোকসানা সুলতানা, তথ‌্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের যুগ্মসচিব নাহিদ সুলতানা মল্লিক, বেসরকারি সংস্থা নারী মৈত্রির কর্মকর্তা শাহীন আক্তার জলি বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মানুষের জন‌্য ফাউন্ডেশনের পরিচালক বনশ্রী মিত্র নিয়োগী।

ডিজিটাল কানেক্টিভিটি সম্প্রসারণের ফলে দেশে মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) অভাবনীয় অগ্রগতি অর্জন করেছে উল্লেখ করে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, মোবাইল সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ডিজিটাল ডিভাইস হওয়ায় এমএফএস এর মাধ্যমে ক্যাশলেস সোস্যাইটির দিকে বাংলাদেশ দ্রুত ধাবিত হচ্ছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় দেশের মানুষের কাছে ইন্টারনেটের চাহিদা অত‌্যন্ত দ্রুততার সাথে বেড়ে চলেছে উল্লেখ করে ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের এই অগ্রদূত বলেন, ১৯৯৭ সালে চারটি মোবাইল অপারেটরকে দেশে মোবাইল সেবা প্রদানের অনুমতি প্রদান করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে মোবাইল প্রযুক্তি বিকাশে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সূচনা করেন। ২০০৮ সালে দেশে ইন্টারনেটের চাহিদা ছিল মাত্রা সাড়ে সাত জিবিপিএস এবং ব‌্যবহারকারি ছিল মাত্র মাত্র ৮ লাখ।

বর্তমানে ৪১০০ জিবিপিএস ইন্টারনেট ব‌্যবহৃত হচ্ছে এবং ব‌্যবহারকারির সংখ‌্যা প্রায় ১৩ কোটি। ২০৩০ সালে ইন্টারনেট ব‌্যান্ডউইদথের চাহিদা ৩০ হাজার জিবিপিএস অতিক্রম করতে পারে। তিনি বলেন স্বল্প আয়ের মানুষের নিকট স্মার্টফোন সহজলভ‌্য করতে সহজ কিস্তিতে স্মার্টফোন সরবরাহ করার বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি। আমাদের লক্ষ‌্য ডিজিটাল দক্ষতা সম্পন্ন মানব সম্পদ গড়ে তোলা। মন্ত্রী নারী গৃহকর্মীদের মধ‌্যে মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস প্রচলন করায় বেসরকারি সংস্থা মানুষের জন‌্য ফাউন্ডেশনের ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ডিজিটাল সেবা সংক্রান্ত মানুষের জন‌্য ফাউন্ডেশন ও তাদের সহযোগী ব্রেকিং দ‌্য সাইলেন্সসহ অন‌্যান‌্য সংস্থার প্রশিক্ষণ কর্মসূচিকে একটি ভাল উদ‌্যোগ আখ‌্যায়িত করে বলেন, ডিজিটাল যন্ত্র দক্ষতার সাথে চালাতে পারলে তারা নিজেদেরকে উদ‌্যোক্তায় রূপান্তর করতে পারে। শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরের পথ প্রদর্শক জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, ডিজিটাল প্রযুক্তির সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে আর্থিক স্বচ্ছলতা অর্জনের সুযোগ তৈরি হবে। মন্ত্রী বলেন, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ অর্জন করেছি। স্মার্ট বাংলাদেশ অর্জনে সরকার কাজ করছে। স্মার্ট বাংলাদেশের মূল স্তম্ভ হচ্ছে স্মার্ট মানুষ। মন্ত্রী নতুন প্রজন্মকে ডিজিটাল দক্ষতা অর্জনের মাধ‌্যমে আগামী দিনের উপযোগী স্মার্ট মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল নিরাপত্তা অধিকতর নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে মন্ত্রী বলেন, এমএফএস এর অব্যাহত অগ্রগতি ক‌্যাশলেস সমাজ প্রতিষ্ঠার জন‌্য বিস্ময়কর। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জন্যে এটি একটি দৃষ্টান্ত। আমাদের এই অবস্থান আগামীদিনের ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে। মোবাইল ফিনান্সিয়াল খাতের অগ্রগতিতে আমরা কাজ করছি এবং যে কোন সহযোগিতা প্রদানে সরকার বদ্ধপরিকর। মন্ত্রী গৃহকর্মীদের জন‌্য একটি ডাটাবেস তৈরি করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, এর ভিত্তিতে তাদের জন‌্য মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসের বিশেষ সুবিধার বিষয়ে কাজ করা সহজ হবে। শাহীন আনাম ডিজিটাল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ‌্যমে নারী গৃহকর্মীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে নিয়োগকর্তা ও গৃহকর্মীদের উৎসাহিত করতে গৃহীত কর্মসূচির বিস্তারিত তুলে ধরে বলেন, নারীর ক্ষমতায়নে নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন অপরিহার্য। রোকসানা সুলতানা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন অপরিহার্য উল্লেখ করে বলেন, মোবাইল ফিনান্সয়াল সার্ভিসের মাধ‌্যমে গৃহকর্মীদের বেতন পরিশোধ তাদের কাজের স্বীকৃতির পাশাপাশি তাদের অর্জিত আয় নিরাপদ করবে।

নাহিদ সুলতানা মল্লিক গৃহকর্মীদের ডিজিটাল ডিভাইস সম্পর্কে প্রশিক্ষণ প্রদানের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশের জন‌্য স্মার্ট মানুষ অপরিহার্য। অনুষ্ঠানে গৃহকর্মী এবং তাদের নিয়োগ প্রদানকারী গৃহকর্তৃগণ তাদের অভিজ্ঞতা ব‌্যক্ত করেন।

উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন