‘নগদ’ এখন ৪ কোটি গ্রাহকের অপারেটর

টেকভিশন২৪ ডেস্ক: মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগতিতে বেড়ে ওঠা ‘নগদ’ এখন চার কোটি গ্রাহকের অপারেটর। সম্প্রতি এই ল্যান্ডমার্ক অতিক্রম করেছে বাংলাদেশ ডাক বিভাগের আর্থিক সেবাটি। একই সময়ে ‘নগদ’-এর দৈনিক লেনদেন ৪০০ কোটি টাকা পেরিয়েছে।

বাণিজ্যিক সেবা শুরু করার মাত্র দুই বছরের মধ্যে একটি সরকারি সেবার এমন সাফল্য চারিদিকে সাড়া ফেলেছে। চলমান কোভিডের সময়ে সরকারি নানান ভাতা, উপবৃত্তি, আর্থিক সহায়তা বিতরণে ডিজিটালাইজেশনের প্রচলন করে ভাতাভোগীর হাতে সহজেই সহায়তা পৌঁছে দেওয়া, স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা এবং সরকারি অর্থের সাশ্রয় করার মতো কাজ করেও সকলের প্রশংসা কুড়িয়েছে ‘নগদ’।

২০১৯ সালের ২৬ মার্চ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেবাটি উদ্বোধনের পর মাত্র দশ মাসে এক কোটি গ্রাহকের ল্যান্ডমার্ক অতিক্রম করে ‘নগদ’। পরের এক কোটি গ্রাহক পেতে সময় লাগে মাত্র ছয় মাস। দুই কোটি থেকে তিন কোটিতে আসতে সময় লাগে আরো সাত মাস। আর শেষ এক কোটি গ্রাহক পেতে সময় লেগেছে দুই মাসেরও কম সময়।

গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট খোলার প্রক্রিয়াকে সহজতর করায় যেকোনো মোবাইল ফোন থেকে কেবল *১৬৭# ডায়াল করেই যে কেউ যেকোনো সময় ‘নগদ’-এর সঙ্গে যুক্ত হতে পারছেন। মোবাইল ফোন অপারেটরদের সঙ্গে পার্টনারশিপের মাধ্যমে চালু হওয়া এই সেবাটিও বিশ্বে প্রথমবারের মতো ঘটেছে। এর আগে গ্রাহক নিবন্ধনের জন্য দেশের আর্থিক খাতে প্রথমবারের মতো ই-কেওয়াইসি চালু করে সাড়া ফেলে ‘নগদ’। ‘নগদ’-এর দেখানো পথ অনুসরণ করেই এখন আরো অনেক আর্থিক প্রতিষ্ঠান গ্রাহক নিবন্ধনে ই-কেওয়াইসি চালু করেছে।

‘নগদ’-এর উদ্ভাবনী সব সেবার কারণে শুরু থেকেই লেনদেনের পরিমাণও বাড়তে থাকে আশানুরূপভাবে। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে প্রথম দিকে ১০০ কোটি টাকা লেনদেনের মার্ক অতিক্রম করে ‘নগদ’। তখন এক অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় পরের এক বছরের মধ্যে দৈনিক লেনদেনের অঙ্ক ২০০ কোটি টাকা পেরুনোর লক্ষ্য বেঁধে দেন। তবে তার আগে, ওই একই বছরের ডিসেম্বরে  দৈনিক লেনদেনের অঙ্ক দ্বিগুণ হয়ে যায়। গত মার্চে দৈনিক লেনদেন ৩০০ কোটি টাকা এবং এক মাসের ব্যবধানে গত সপ্তাহে এটি ৪০০ কোটি টাকা পেরিয়েছে।

‘নগদ’ এর দ্রুতগতির অগ্রযাত্রাকে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন এবং গ্রাহকবান্ধব সেবা চালু করার সফল সম্মীলন বলে মনে করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের মাননীয় মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। 

বাংলাদেশ ডাক বিভাগের মহাপরিচালক মো. সিরাজ উদ্দিন ‘নগদ’-এর চমৎকার এই অর্জনে সেবাটির সঙ্গে জড়িত সকল কর্মী ও গ্রাহককে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, “মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস সেবায় দেশে বিপ্লব ঘটানো অপারেটরের নাম ‘নগদ’। 

‘নগদ’-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক বলেন, “প্রচলিত সব পরিষেবা যাতে ‘নগদ’-এ পাওয়া যায় তার জন্য আমরা ‘সব হবে নগদ-এ’ লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি। আর সে জন্য প্রতিদিনিই আমরা অসাধ্য সাধনের চেষ্টা করে যাচ্ছি। 

শুরু থেকেই ‘নগদ’-এ সেন্ড মানি ফ্রি এবং সর্বনিন্ম ক্যাশ-আউট চার্জ ভ্যাটসহ হাজারে ১১ টাকা ৪৯ পয়সা (অ্যাপে), যা মানুষের মধ্যে সাড়া ফেলেছে। দুই বছরের মধ্যে ১২ হাজার মার্চেন্টকে ‘নগদ’ নেটওয়ার্কে যুক্ত করা, ৫০০ ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে লেনদেনের সুবিধার কারণে কেনাকাটার লেনদেনে ‘নগদ’-ই এখন সেরা পছন্দ। বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও ইন্টারনেটসহ সব রকম পরিষেবার বিল প্রদান কোনো রকম বাড়তি খরচ ছাড়া শুধুমাত্র ‘নগদ’-এ করা যায়। মোবাইল ফোনে রিচার্জ এবং বিভিন্ন প্যাকেজ কেনা এখন নিমিষের ব্যাপার; সঙ্গে আছে ক্যাশব্যাকও।

গত বছর কোভিডে কাজ হারানো মানুষকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার বিতরণ, সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর ভাতা বিতরণ, এক কোটি মায়ের কাছে সন্তানের উপবৃত্তি বিতরণ করে ভাতা বিতরণ ব্যবস্থায় আমুল পরিবর্তন এনেছে ‘নগদ’। এবারও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহারের ৪৫ শতাংশ বিতরণ করবে ‘নগদ’।

অভিনব এই পদ্ধতি চালু করায় এক দিকে যেমন স্বচ্ছতা নিশ্চিত হয়েছে, সুবিধাভোগীদের সুবিধা হয়েছে, একই সঙ্গে সরকারের খরচ ও বিতরণ ঝামেলা কমেছে।

উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন