এক দশক পূর্ণ করলো রাকুতেন ভাইবার

ফ্রি, ইন্টার‌্যাক্টিভ ও সিকিউর মেসেজিং অ্যাপ হিসেবে গত দশ বছরে শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে ভাইবার; একইসঙ্গে অ্যাপটি বিশ্বজুড়ে ব্যবহারীদের কাছেও সমাদৃত হয়েছে।

টেকভিশন২৪ ডেস্ক সহজে, বিনামূল্যে ও সুরক্ষিত উপায়ে যোগাযোগের জন্য বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় মেসেজিং অ্যাপ রাকুতেন ভাইবার তাদের পথচলার এক দশক পূর্ণ করেছে। যোগাযোগের ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীর সুরক্ষা ও মোবাইল প্রযুক্তির ক্ষেত্রে অ্যাপটি নিঃসন্দেহে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। বিনামূল্যে, ইন্টার অ্যাকটিভ ও সিকিউর মেসেজিং অ্যাপ হিসেবে ভাইবার গত দশ বছরে ব্যবহারকারীদের মাঝে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে এবং এই অ্যাপটির মাধ্যমে ভাইবার ব্যবহারকারীরা যে কোন জায়গা থেকে যে কোন সময় যোগাযোগ করতে পারেন।

২০১০ সালে ভাইবার যাত্রা শুরু করে। যাত্রা শুরুর পর থেকেই অ্যাপটির লক্ষ্য ছিলো ব্যবহারকারীদের যোগাযোগের বিকল্প মাধ্যম হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করা; একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক মোবাইল ব্যবহারকারীদের ফ্রি কলের সুবিধা দান। তবে, সময়ের সাথে সাথে ভাইবার তাদের কার্যক্রমের ব্যাপ্তি বাড়িয়েছে এবং উদ্ভাবনী ফিচারসমৃদ্ধ যোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে। বর্তমানে ভাইবারে বেশ কিছু ফিচার চালু রয়েছে। এগুলো হলো: মেসেজিং, গ্রুপ চ্যাট, অডিও এবং ভিডিও কল, কমিউনিটিস এবং চ্যাটবট। এ ফিচারগুলো ব্যবহারের ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীর সুরক্ষা ও নিরাপত্তার বিষয়ে সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করছে ভাইবার। ২০১৪ সালে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ই-কমার্স ও আর্থিক সেবাখাতে বৈশ্বিকভাবে শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান রাকুতেন ইনকরপোরেটেডের অংশ হয় ভাইবার।   

২০১৮ সালে চালু হওয়া ‘কমিউনিটিস’ ফিচারটি প্রতিষ্ঠানটির জন্য নতুন একটি মাইলফলক ছিলো। এই ফিচারটি অ্যাডমিনদের সুপারগ্রুপ চ্যাট তৈরিতে সাহায্য করে, যেখানে তারা প্রয়োজনীয় সংখ্যক মানুষকে যুক্ত করতে পারেন। এর পরের বছরই ভাইবার গ্রুপ ভয়েস কল ফিচার চালু করে। উপযোগিতা ও ফিনটেক খাতে বিস্তৃত পরিসরের যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে ভাইবার এগিয়ে যাচ্ছে। তবে, এক্ষেত্রে, প্রতিষ্ঠানটি ব্যবহারকারীর তথ্য সুরক্ষার বিষয়ে তাদের অঙ্গীকারসমূহকে বজায় রাখবে।

চলতি বছর, বৈশ্বিক মহামারি চলাকালীন সময়ে ভাইবার ব্যবহারকারীদের সুবিধার্থে বেশ কিছু ফিচার চালু করে। এগুলো হলো: ভিডিও কল, এর সক্ষমতা বৃদ্ধি, একটি গ্রুপ ভিডিও এবং অডিও কলে অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যা দ্বিগুণ করে ২০ জনে উন্নীত করা। ফিনটেক খাতে পরিধি বাড়ানোর লক্ষ্যে গত নভেম্বরে প্রতিষ্ঠানটি তাদের ভবিষ্যত পরিকল্পনার ঘোষণা দেয় এবং এর পরেই তারা চ্যাটবট পেমেন্ট সল্যুশন চালু করে।

বাংলাদেশে আইসিটি ডিভিশনের সাথে যৌথভাবে ভাইবার কোভিড-১৯ ভাইরাস বিষয়ক চ্যাটবট চালু করে। এই চ্যাটবটের মাধ্যমে, ব্যবহারকারী নিজেই কোভিড-১৯ টেস্ট করতে পারবেন। বাংলাদেশে ভাইবারের দেড় কোটি সক্রিয় গ্রাহক রয়েছে। এই উদ্যোগটি বাংলাদেশ সরকারকে ডাটা ট্র্যাক করার ক্ষেত্রে সাহায্য করছে। 

এক দশক পূর্তির মাইলফলক অর্জন ও এই সময়জুড়ে ব্যবহারকারীদের সর্বাত্মক সহযোগিতার বিষয়টিকে বিবেচনা করে ভাইবার ‘হুইল অব ফরচুন’ নামের নতুন একটি ক্যাম্পেইন চালু করেছে। এই ক্যাম্পেইনের আওতায়, ব্যবহারকারীরা বিভিন্ন ধরণের পুরষ্কার জেতার সুযোগ পাবেন। এর মধ্যে রয়েছে দেশের বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট ও দোকানের কুপন। এই কুপনগুলো ব্যবহার করে ব্যবহারকারীরা বিভিন্ন ছাড় সুবিধা পাবেন। যেমন: ঢাকাইয়া পাক্কি’র জন্য ব্যবহারকারীরা ২০০ টাকা ছাড় সুবিধার কুপন , দ্য ওয়েস্টিন ঢাকাতে ১৫ শতাংশ ডিল সুবিধা, বার্গার কিংয়ে ৯৬ টাকা ছাড়, আল-আমারে ১০ শতাংশ ডিল এবং শৈশব বাংলাদেশে ২০ শতাংশ ছাড় সুবিধা পাবেন। পাশাপাশি, এই ক্যাম্পেইনের আওতায় ব্যবহারকারীদের স্টিকার প্যাক জেতারও সুযোগ থাকবে। 

এ নিয়ে রাকুতেন ভাইবারের প্রধান নির্বাহী জ্যামেল আগাওয়া বলেন, ‘বিপুল সংখ্যক ব্যবহারকারীর সর্বাত্মক সহযোগিতা পেয়েই আমরা সাফল্যের সাথে এক দশক পার করতে পেরেছি। ব্যক্তিগত যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহারকারীরা আমাদের ওপর আস্থা রেখেছে বলেই আমরা এতোটা পথ পাড়ি দিতে পেরেছি এবং তাদের পূর্ণ সমর্থনেই আমাদের কলেবর বেড়েছে। বিনামূল্যে, সুরক্ষিত ও নিরাপদ উপায়ে ব্যবহারকারীদের পরস্পরের সাথে যুক্ত রাখাই আমাদের অঙ্গীকার। আমাদের জীবনের বড় অংশ জুড়ে রয়েছে প্রযুক্তির ব্যবহার। ফলে, ডাটা সুরক্ষা ও যোগাযোগের নিরাপত্তা বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ব্যবহারকারীদের এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিশ্চিত করতে ভাইবারের কর্মীরা ধারাবাহিকভাবে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ভাইবারের অনেক কর্মীই হয়ত আপনাদের কাছে অপরিচিত। কিন্তু, আমি বলতে পারি, তারাই সময়ের সেরা টিম।’

রাকুতেন ভাইবারের চিফ গ্রোথ অফিসার আনা জামেনস্কায়া বলেন, ‘মানুষকে তার প্রিয়জনের সাথে যুক্ত রাখার প্রত্যয়ে আমার এই অ্যাপটি চালু করি।’ তিনি আরো বলেন, দ্রুতগতিতে বদলে যাচ্ছে পৃথিবী। তাই, আমাদের যোগাযোগের ধরণ ও প্ল্যাটফর্মগুলোতেও আসছে পরিবর্তন। যোগাযোগের ক্ষেত্রে উদ্ভাবনী ফিচার নিয়ে এসে ব্যবহারকারীদের এক ধাপ এগিয়ে রাখাই ভাইবারের লক্ষ্য, যেমনটা আমরা সব সময়ই করে থাকি।’

উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন