প্রযুক্তি ও সমাধানসহ ২০২০ এর রাইজআপ ল্যাবস

লেখক মোঃ মশিউর রহমান, ঢাকা , বাংলাদেশ – ১০ জানুয়ারী, ২০২১। 

২০২০ বছরটি খুব কঠিন ছিল। আমরা দেখেছি যে একটি রোগ কতভাবে মানুষের জীবনকে প্রভাবিত করতে পারে। আমরা আশাবাদী যে এই বছর পরিস্থিতি ভালো হবে। তবে, এটাও সত্যি যে জীবন একটি জায়গায় থেমে থাকতে পারে না। একটি বিষয় যা আমাদের জীবনে বিশাল পরিবর্তন এনেছিল তা হলো প্রযুক্তি। তাই, আমরা আপনার কাছে উপস্থাপন করতে চাই রাইজআপ ল্যাবস কে – একটি আইএসও 9001: 2015 সার্টিফায়েড লিডিং আইটি সলিউশন এবং বাংলাদেশ এ সফটওয়্যার সেবা দানকারী একটি প্রতিষ্ঠান, যা মহামারীর সময়েও কঠোর পরিশ্রম করেছিল।

এই সফ্টওয়্যার সংস্থাটি বেশিরভাগ ওয়েব, মোবাইল, এক্সআর, সিমুলেটর প্রযুক্তি এবং মাল্টিমিডিয়া সামগ্রীগুলিতে ফোকাস করছে। ২০২০ সালেও  তারা কিছু উদ্ভাবনীয় ওয়েব সিস্টেম, মোবাইল অ্যাপস এবং মোবাইল গেম তৈরি করেছে। এমন কিছু যা আপনার জীবন বদলে দিতে পারে।

ইউনিসেফ বাংলাদেশ এবং রাইজআপ ল্যাবস দ্বারা ডিজাইন ও বানানো সর্বশেষ নতুন আবিষ্কারটি আমাদের প্রিয় মিনা কার্টুনকে ঘিরে। মীনা প্রথমবারের মতো থ্রিডি-তে একটি নতুন গেম হিসাবে ফিরে এসেছে। মীনা গেম ২ সব বয়সী ব্যবহারকারীদের জন্য একটি নতুন গল্পের  গেম, যেমন “গর্ভবতী মা এবং নবজাতক শিশুর যত্ন নেওয়া”। গেমটি খেলে আমাদের জীবনে দুর্দান্ত সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক পরিবর্তন তৈরি হতে পারে। গেমটি পেতে ক্লিক করুন: http://riseuplabs.me/meena2

রাইজ আপ ল্যাবস রবি এক্সিয়াটা লিমিটেডের জন্য বাংলাদেশে প্রথম রিয়েল-টাইম মাল্টিপ্লেয়ার গেমটি তৈরি করেছে। চমক এবং ব্যবহারকারীদের জন্য কিছু পরিবর্তন সহ  গেমটি এখনও টেস্ট সংস্করণে রয়েছে, ।  রবি একটি মাল্টিপ্লেয়ার টুর্নামেন্টের ব্যবস্থা করেছিল এবং তিন শীর্ষ বিজয়ীকে দেয়া হয়েছিল তিনটি মোটরবাইক। গেমটি ডাউনলোড করুন: https://riseuplabs.com/treasure-wars/

কোম্পানি টি পুষ্টি প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্যে কিশোর-কিশোরীদের জন্য একটি ই-লার্নিং কোর্স তৈরি করেছে। প্ল্যাটফর্মটি লঞ্চ করেছেন ডাঃ দিপু মনি। পরে বয়ঃসন্ধিকালীদের পুষ্টি প্রশিক্ষণের জন্য কোর্সটি জেলা শিক্ষা অফিসার, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, থানা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, একাডেমিক সুপারভাইজার মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিএসএইচই) মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। প্রায় ২  ঘন্টা দীর্ঘ এই কোর্সটি সবার জন্য উম্মুক্ত। কোর্স শেষে আপনি একটি সার্টিফিকেট পাবেন। ইতিমধ্যে ৬0,000 এরও বেশি প্রশিক্ষণার্থী তাদের সার্টিফিকেট পেয়েছেন। অ্যাপ্লিকেশনটি ডাউনলোড করুন এবং সার্টিফিকেট  পান: https://riseuplabs.com/nutrition-e-learning-platform/

রাইজআপ ল্যাবস  ইউনিসেফ বাংলাদেশের জন্য ইউ-রিপোর্ট অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপ করেছে যার লক্ষ্য শান্তি এবং কিশোরী ক্ষমতায়নের উদ্যোগকে সমর্থন করা। অ্যাপ্লিকেশনটির মাধ্যমে ইউনিসেফ অফলাইনে জরিপের তথ্য সংগ্রহ করতে পারে এবং কিশোর-কিশোরীদের মতামত সংগ্রহ করতে পারে। এশিয়া-র মধ্যে তারাই প্রথম যারা এটি সফলভাবে ডেভেলপ করেছেন এবং ইউনিসেফের কাছ থেকে পসিটিভ ফিডব্যাক অর্জন করেছেন। অ্যাপটি: https://riseuplabs.com/u-report-app-with-offline-feedback/

ইউনিসেফ বাংলাদেশের জন্য রাইজআপ ল্যাবস এর আরেকটি ডেভেলপমেন্ট হলো অনলাইন ভলান্টিয়ার রেজিস্ট্রেশন এন্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, যা ২০২০ সালে শুরু হয়েছিল। কাগজপত্রের ব্যবহার কে তারা ইউনিসেফের জন্য প্রযুক্তিগত সমাধানে নিয়ে আসে। রেজিস্ট্রেশন চলাকালীন যে কেউ অনলাইনে রেজিস্টার করে ইউনিসেফের স্বেচ্ছাসেবক হতে পারবে। ইতিমধ্যে ৫0,000 এরও বেশি স্বেচ্ছাসেবী সিস্টেমে রেজিস্টার্ড। ভলান্টিয়ার হতে চান? এখানে যান- https://www.volunteer.unicefbangladesh.org/ এবং রেজিস্ট্রেশন খোলার উপর নজর রাখুন।

কোভিড-১৯ -এ, ইউনিসেফ এবং MoWCA কিশোর-কিশোরীদের জন্য কিছু হ্যান্ডআউট তৈরি করেছে। যাতে কীভাবে COVID-19 কে প্রতিরোধ করা যায়, GBV – লিঙ্গ – ভিত্তিক সহিংসতার থেকে কীভাবে সতর্ক থাকতে হবে, বাল্য বিবাহ এবং অন্যান্য VC সম্পর্কিত সমস্যার বেপারে তারা জানতে পারে। ইউনিসেফ বাংলাদেশের সিপি বিভাগ কোভিড-১৯-এ সারা বাংলাদেশ থেকে “ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ফর এডোলেসেন্টস” অ্যাপ্লিকেশনটির মাধ্যমে ৪৫,০০০ প্রান্তিক কিশোর-কিশোরীদের শিক্ষার উদ্যোগ নিয়েছিল। রাইজআপ ল্যাবস এই কর্মসূচির সূচনা করেছিল। তারা ফোনের মাধ্যমে ১৩৬,৮৪৬ জন  কিশোর-কিশোরীদের কাছে পৌঁছাতে পেরেছিলো। প্রজেক্টটির  আরও ডেটা দেখতে  https://riseuplabs.com/covid19/

ইন্টারনেট যে কোনও ধরণের তথ্যের জন্য সেরা উপায়; তবুও, আমাদের শিশু এবং কিশোর-কিশোরীরা  ইন্টারনেট ব্যবহার করার সময় অনেক ঝুঁকি এবং বিপদের মুখোমুখি হয়। ইন্টারনেট ব্যবহারের সময় সুরক্ষা এবং জ্ঞান নিশ্চিত করার জন্য, ইউনিসেফ বাংলাদেশ আইসিটি মিনিস্ট্রি-র সাথে “শিশুদের জন্য নিরাপদ ইন্টারনেট” কুইজ গেম তৈরি করেছিল, যা রাইজআপ ল্যাবস ডিজাইন এবং ডেভেলপ করেছিল। গেমটি সম্পূর্ণ করলে ব্যবহারকারীরা  একটি সার্টিফিকেট পায়।  ৩,৫০,০০০ এরও বেশি ব্যবহারকারী ইতিমধ্যে গেমটি থেকে  সার্টিফিকেট পেয়েছেন। গেমটি খেলুন এখানে: https://safeinternet.unicefbangladesh.org/

তারা মিনা নিয়ে ফেসবুকের জন্য একটি নতুন ইনস্ট্যান্ট গেমও তৈরি করেছে। ব্যবহারকারীরা সরাসরি তাদের ফেসবুক অ্যাপ্লিকেশন থেকে গেমটি খেলতে পারবে, কোনো ইনস্টল করা ছাড়াই, এবং তাদের বন্ধুদের স্কোরকে চ্যালেঞ্জ করতে পারবে। মীনা ইনস্ট্যান্ট গেমটি খেলুন এখানে: https://www.facebook.com/gaming/play/playmeenagame

তারা এমন অনেক পণ্য তৈরি করেছে যা বাংলাদেশের আইটি শিল্পের বিকাশ করবে। শুধু তাই নয়, তারা একটি ব্যবসা পরিচালনা করে ৫০-টিরও বেশি মানুষকে একই ছাদের নীচে তাদের ক্যারিয়ার গড়ার জন্য একটি পরিবেশ করে  দিয়েছে। রাইজআপ ল্যাবসের সিইও, এরশাদুল হক কোম্পানির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে আমাদের বলেছিলেন, “আমরা যুবক-যুবতীদের বিকাশের জন্য আরো বেশি সুযোগ তৈরি করতে চাই, যেখানে আমরা উদ্ভাবনী এবং টেকসই প্রোডাক্ট  সরবরাহ করতে পারি এবং আইসিটি শিল্পকে আরো সফল বানাতে পারি।” আমরা রাইজআপ ল্যাবসকে তাদের ভবিষ্যতের যাত্রার জন্য শুভকামনা জানাই এবং আমরা তাদের কাছ থেকে আরও ভাল কাজ আশা  করি।

মজা করতে এবং কিছু সময় উপভোগ করতে আপনি তাদের গেম খেলতে পারেন বা বিনামূল্যে সার্টিফিকেট পেতে তাদের শিক্ষাগত অ্যাপ্লিকেশনগুলি ব্যবহার করতে পারেন।

-টিভি২৪/জিডিটিএন/১১/২১

 

উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন