টেকভিশন২৪ ডেস্ক: অফিসের কাজে শহরের একপ্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে যাচ্ছিলেন শাহিনুর রহমান, এমন সময় নগরীর এ্যালিফ্যান্ট রোড এলাকায় তার চোখ আটকে যায় রাস্তার পাশে জুতার শোরুমের ডিসপ্লেতে, যেন এমন এক জোড়া জুতাই মনে মনে খুঁজছিলেন। তিনি বলেন, “এদিকে আবার কবে আসা হয় তার কোনো ঠিক নেই, তাই জুতাজোড়া কেনার সিদ্ধান্ত নেই। কিন্তু পকেটে ক্যাশ টাকা নেই, আবার ওই দোকানে কার্ড থেকেও পেমেন্ট নেয় না। তবে দোকানে বিকাশ-এর কিউআর কোড থাকায় কার্ড থেকে নিমেষেই বিকাশে অ্যাড মানি করে পছন্দের জুতাজোড়া কিনে ফেলি। এরকম জরুরি প্রয়োজনে বিকাশ-এর অ্যাড মানি সেবাটি বেশ কাজে আসে।”
এদিকে ঢাকার মিরপুরের বাসিন্দা তানিয়া হোসেন বলেন, “এই গরমের মধ্যে হঠাৎ একদিন মাঝ রাতে বিদ্যুৎ চলে যায়, শুরুতে ভেবেছিলাম লোডশেডিং, পরে মনে পড়লো এই মাসে তো বিদ্যুতের প্রিপেইড মিটারই রিচার্জ করা হয়নি। স্মার্ট প্রিপেইড মিটার থাকায় বিকাশ অ্যাপ থেকেই সাধারণত মিটার রিচার্জ করি, কিন্তু এই রাতে দেখি বিকাশেও টাকা নেই। যাই হোক ভিসা কার্ড থেকে তৎক্ষণাৎ বিকাশ-এ টাকা এনে (অ্যাড মানি) বিকাশ অ্যাপ থেকে মিটার রিচার্জ করে ফেলি, বিদ্যুৎ চলে আসে ম্যাজিকের মতো।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত দেশে সক্রিয় ডেবিট কার্ডের সংখ্যা ৩ কোটি ৭৪ লাখ আর ক্রেডিট কার্ড ২৫ লাখের কিছু বেশি। অনেকের কাছেই ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ড থাকলেও বিপণি-বিতান, রেস্টুরেন্ট, মুদি দোকান সহ বিভিন্ন স্থানে পিওএস (পয়েন্ট অব সেলস) না থাকা, শহরের ব্যস্ত এলাকার বাইরে এটিএম বুথের স্বল্পতাসহ বিভিন্ন কারণে গ্রাহকরা কার্ড থেকে বিকাশে টাকা এনে থাকেন। এদিকে বিকাশ-এর আছে দেশজুড়ে ৩ লাখ ৭৯ হাজার এজেন্টের বিশাল এক নেটওয়ার্ক। গ্রাহকরা কার্ড থেকে বিকাশে টাকা এনে খুব সহজেই হাঁটা দুরত্বে অবস্থিত এজেন্ট পয়েন্ট থেকে ক্যাশ আউট করতে পারছেন। আবার দেশজুড়ে বিকাশ-এর রয়েছে ৮৫০,০০০-এর বেশি মার্চেন্ট পয়েন্ট যেখানে কিউআর কোড স্ক্যান করে খুব সহজেই বিভিন্ন পণ্য ও সেবার দাম পরিশোধ করতে পারছেন গ্রাহকরা।
বাংলাদেশে ইস্যুকৃত ভিসা, অ্যামেক্স বা মাস্টারকার্ড থেকে বিকাশ-এর ৭ কোটি ৫০ লাখ গ্রাহক কোনো চার্জ ছাড়াই তাদের বিকাশ অ্যাকাউন্টে যেকোনো সময় দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে টাকা আনতে পারছেন অ্যাড মানি সেবার মাধ্যমে। এজেন্ট পয়েন্টে গিয়ে বিকাশ অ্যাকাউন্টে ক্যাশ ইন ও ক্যাশ আউট করার পাশাপাশি কার্ড থেকে বিকাশে তাৎক্ষণিক টাকা এনে সেন্ড মানি, মোবাইল রিচার্জ, ইউটিলিটি বিল, অফলাইন/অনলাইন কেনাকাটার পেমেন্ট, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অনুদান দেয়া, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ফি দেয়া, বাস-ট্রেন-বিমান-এর টিকেট কাটা, বিভিন্ন ধরণের সরকারি ফি পরিশোধ, সেভিংস, ইনস্যুরেন্স সহ অসংখ্য সেবা খুব সহজেই নিতে পারছেন বিকাশ গ্রাহকরা।
ভিসা, মাস্টারকার্ড বা অ্যামেক্স থেকে বিকাশ-এ অ্যাড মানি করার পদ্ধতি:
বিকাশ অ্যাপের হোম স্ক্রিন থেকে ‘অ্যাড মানি’ আইকনে ট্যাপ করে ‘কার্ড টু বিকাশ’ বাছাই করে ‘ভিসা’, ‘মাস্টারকার্ড’ বা অ্যামেক্স সিলেক্ট করতে হবে। এরপর, নিজের বিকাশ অ্যাকাউন্ট নাম্বার শুরু থেকেই দেয়া থাকবে, তবে অন্য কারো নাম্বারে টাকা পাঠাতে চাইলে, সেই বিকাশ অ্যাকাউন্ট নাম্বারটি টাইপ করতে হবে। তারপর টাকার পরিমাণ উল্লেখ করে পরবর্তী ধাপে ভিসা/মাস্টারকার্ড/অ্যামেক্স কার্ডের নাম্বার, মেয়াদ এবং সিভিএন বা সিভিভি নাম্বার (কার্ডের পেছনে থাকা ৩ বা ৪ সংখ্যার ভেরিফিকেশন কোড) দিতে হবে। পরের ধাপে ফোন নাম্বারে পাঠানো ওটিপি দিয়ে লেনদেন সম্পন্ন করতে হবে। অ্যাড মানি সম্পন্ন হলে নিশ্চিতকরণ ম্যাসেজ চলে আসবে। পরবর্তী লেনদেনের সুবিধার জন্য কার্ডের তথ্য সংরক্ষণ করে রাখতে পারবেন গ্রাহক। কার্ড সেভের পর টাকার পরিমাণ উল্লেখ করে পরবর্তী ধাপে ওটিপি কোড দিয়েই লেনদেন সম্পন্ন করা যাবে।
স্ক্যান করেই সেভ করা যাচ্ছে কার্ড:
বিকাশ অ্যাপের নতুন আপডেটে কার্ড সেভ করার পদ্ধতিটিকে আরো সহজ করা হয়েছে। কার্ডের বিস্তারিত টাইপ না করে, স্ক্যান করেই কার্ড সেভ করতে পারছেন গ্রাহক। বিকাশ অ্যাপের ‘অ্যাড মানি’ আইকনে প্রবেশ করে কার্ড নির্বাচন করে টাকার পরিমাণ দিয়ে পরের ধাপে গেলেই পাওয়া যাবে সরাসরি স্ক্যান করার অপশন। কার্ড স্ক্যান অপশন গ্রাহকের সময় সাশ্রয়ের পাশপাশি আরো নির্ভুল সেবা নিশ্চিত করছে।