মেটার বিরুদ্ধে ২০০ কোটি ডলারের ক্ষতিপূরণ মামলা

মেটা
মেটা

টেকভিশন২৪ ডেস্কঃ ইথিওপিয়ায় গৃহযুদ্ধকালে সহিংস ও বিদ্বেষপূর্ণ পোস্ট ভাইরালে ফেসবুকের অ্যালগোরিদম ইন্ধন জুগিয়েছে অভিযোগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটির মূল কোম্পানি মেটার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলায় ২০০ কোটি মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়েছে মেটার কাছে। খবর বিবিসি।
কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে একদল ভুক্তভোগী পক্ষে মামলাটি করেছে ফক্সগ্লাভ নামে একটি সংগঠন। নাইরোবিতে নিজস্ব কনটেন্ট মডারেশন হাব রয়েছে মেটার।

মামলার বাদীদের একজন ইথিওপিয়ার আব্রাহাম মেরেজ। গত বছর তার বাবা অধ্যাপক মেরেজ আমারে আবরাহার বিরুদ্ধে ফেসবুকে তুমুল বিদ্বেষপূর্ণ প্রচার চালানো হয়েছিল। এরই একপর্যায়ে অধ্যাপক আবরাহাকে গুলি করে হত্যা করে আততায়ীরা।

মেরেজ জানান, ২০২১ সালের ৩ নভেম্বর তার বাবা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে মোটর সাইকেলে কয়েকজন সশস্ত্র ব্যক্তি তাকে অনুসরণ করে। বাড়িতে ঢোকারে আগেই তাকে গুলি করে আততায়ীরা। রক্তাক্ত অবস্থায় কয়েক ঘণ্টা মাটিতে পড়ে থেকে মারা যান অধ্যাপক আবরাহা।

ইথিওপিয়ার উত্তর টাইগ্রে অঞ্চলের বামপন্থী সামরিক শক্তির সঙ্গে দেশটির সরকারি বাহিনীর সহিংস সংঘাতে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রাণ হারিয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ।

টানা দুই বছর সহিংসতার পর চলতি বছরের নভেম্বরে শান্তি চুক্তির মাধ্যমে গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটে। তবে ওই অঞ্চলের আমহারা ও ওরোমো ভাষাভাষীদের মধ্যে বিদ্যমান জাতিগত বিদ্বেষের জের ধরে সহিংসতা অব্যাহত ছিল।

গত বছর ওই সহিংসতার শিকারই হয়েছেন ইথিওপিয়ার শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আবরাহা। তার ছেলে মেরেজ বলেন, ওই হামলার আগে ফেসবুকে তার বিরুদ্ধে ব্যাপকহারে বিদ্বেষমূলক প্রচার চালানো হয়। তার সম্পর্কে ব্যক্তিগত সব তথ্য ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল ফেসবুক পোস্টে।

মেরেজ আব্রাহামের অভিযোগ, বারবার ওই পোস্টগুলো সম্পর্কে ফেসবুকের কাছে অভিযোগ জানানো হলেও মেরেজের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি তারা।

মামলায় বলা হয়েছে, অধ্যাপক মেরেজের মৃত্যুর ঘটনার পর একটি পোস্ট মুছে ফেলে ফেসবুক; আরেকটি পোস্ট চলতি বছরের ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত ফেসবুকে ছিল।

মেরেজের অভিযোগ, পোস্টগুলো বিদ্বেষপূর্ণ হওয়ায় মানুষ তাতে এনগেজ বেশি হচ্ছিল। আর এই এনগেজমেন্টের কারণে ফেসবুকের অ্যালগোরিদম সেগুলো বেশি মানুষের কাছে রিচ করে দিচ্ছিল।
তাই মামলায় ক্ষতিপূরণ দাবির পাশাপাশি ফেসবুক অ্যালগোরিদম সিস্টেমে পরিবর্তন আনার দাবি জানান ভুক্তভোগীরা।

মেরেজ আক্ষেপ করে বলেন, ফেসবুক যদি ঘৃণা-বিদ্বেষের প্রচার বন্ধ করে পোস্টগুলো সঠিকভাবে মডারেশন করতো, তবে আমার বাবা এখনো বেঁচে থাকতেন।

এদিকে এ বিষয়ে মেটার এক মুখপাত্র বলেন, বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য ও সহিংসতার প্রচার চালানো প্ল্যাটফর্মটির নীতিমালার বিরোধী।

 

উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন