বাংলাদেশে ব্যবসার (বিআইএন) নাম্বার নিয়েছে গুগল ও অ্যামাজন

টেকভিশন২৪ ডেস্ক: অবশেষে বিশ্বের দুই বড় টেক জায়ান্ট গুগল ও আমাজন বাংলাদেশে ব্যবসা করার জন্য বিজনেস আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার (বিআইএন) নিয়েছে। এতে তারা এদেশ থেকে প্রাপ্ত আয়ের ১৫% ভ্যাট সরকারকে দিবে। সেই সাথে তাদের টোটাল টার্নওভার ও অন্যান্য ফিফান্সিয়াল হিসাব ও প্রতি বছর সাবমিট করবে।
 
ভ্যাট অনলাইন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক কাজী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “সোমবার গুগল এবং বৃহস্পতিবার অ্যামাজনকে নিবন্ধন নাম্বার দিয়েছি”। বর্তমানে বিশ্বের ৪০টি দেশে গুগলের ৭০টি অফিস রয়েছে, অন্যদিকে অ্যামাজনের রয়েছে বিশ্বজুড়ে ১৭টি দেশে অফিস। উভয় প্রতিষ্ঠানেরই ভারতে স্থানীয় কর্মক্ষেত্র রয়েছে, এমনকি হায়দ্রাবাদে অ্যামাজনের সবচেয়ে বড় অফিসটি অবস্থিত। 

 

গুগল তার জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন, ইমেল পরিষেবা, ওয়েব ব্রাউজার এবং আরও বিভিন্ন অনলাইন সেবার জন্য পরিচিত। প্রতিদিন আমরা কত কাজে যে গুগল ব্যবহার করি, তার ইয়ত্তা নেই। 

২০২০ সালে গুগলের ১৮১ বিলিয়ন ডলারের রাজস্বের বিরাট অংশ এসেছে এর মালিকানাধীন বিজ্ঞাপন পরিষেবা, গুগল এডস থেকে। 

প্লে স্টোর, ক্রোমকাস্ট, ক্রোমবুকস, অ্যান্ড্রয়েড, গুগল অ্যাপস এবং গুগল ক্লাউড প্ল্যাটফর্মের মতো অনলাইন, মিডিয়া এবং ক্লাউড কম্পিউটিং বিজনেস থেকে রাজস্বের বাকি অংশ এসেছে।

অন্যদিকে বাজার মূল্যের ভিত্তিতে অ্যামাজন বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি। ২০২১ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অ্যামাজনের বাজার মূল্য ছিল ১.৭ ট্রিলিয়ন ডলার।

ই-কমার্সের প্রসারের পাশাপাশি বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো ডিজিটাল মাধ্যমে বিজ্ঞাপনে যুক্ত হওয়ায় গুগল, ফেসবুক, অ্যামাজন, ইউটিউবসহ বিদেশী ওয়েবগুলো বছরে অন্তত ৩ হাজার কোটি টাকা নিয়ে যাচ্ছে বলে মনে করছেন প্রযুক্তি সংশ্লিষ্টরা।

আর্ন্তজাতিক ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে অর্থ পরিশোধ করছে এসব প্রতিষ্ঠান। এছাড়া হুন্ডির মাধ্যমেও অর্থ পরিশোধের অভিযোগ রয়েছে।

বাংলাদেশে নিবন্ধন নিলেও এসব প্রতিষ্ঠান কী প্রক্রিয়ায় ব্যবসা করবে ও ভ্যাট পরিশোধ করবে এমন প্রশ্নে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “ই-কমার্স, বিজ্ঞাপন, অ্যাপস, জিমেইল সার্ভিসসহ বিভিন্ন মাধ্যমে এখনই বাংলাদেশে এখনই বড় ব্যবসা রয়েছে গুগল, অ্যামাজনের। নিবন্ধনের পরও তারা একই প্রক্রিয়ায় ব্যবসা করবে। তবে ব্যবসাটি কমপ্লায়েন্সের মধ্যে আসবে”।

তিনি বলেন, “এখন ভ্যাট পরিশোধের জন্য এই প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য দুটো বিকল্প পথ খোলা রয়েছে। তারা চাইলে বাংলাদেশে এজেন্ট নিয়োগের মাধ্যমে ভ্যাট পরিশোধ করতে পারবে। অন্যথায় বিদেশী বাংলাদেশি ব্যাংকের শাখা অথবা বাংলাদেশের কোনো ব্যাংকে অনলাইনে পেমেন্ট করে আমাদের ইনভয়েস দিতে পারবে।

নিঃসন্দেহে এটি বাংলাদেশ সরকারের জন্য বড় একটি অ্যাচিভমেন্ট। কারণ গত এপ্রিলেই দুই জায়ান্ট জানিয়ে দিয়েছিল তারা কর দিবে না, কিন্তু সরকারের কঠোর অবস্থানে তা পারেনি।
 
সরকারকে এবার আরও কঠোর ও কৌশলী হতে হবে, এবার ধরতে হবে NetFlix, Zee5 সহ বিভিন্ন ওটিটি প্ল্যার্টফর্ম এবং ফেসবুককে। লক্ষণীয় যে শুধুমাত্র NetFlix ই প্রতিমাসে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ১৫ কোটি টাকার  উপর নিয়ে যায় যা বছরে প্রায় ১৮০ কোটি টাকা।

উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন