চাঁদে নিজস্ব প্রযুক্তির মহাকাশযান পাঠিয়ে ইতিহাস গড়ল জাপান

চাঁদে নিজস্ব প্রযুক্তির মহাকাশযান পাঠিয়ে ইতিহাস গড়ল জাপান
চাঁদে নিজস্ব প্রযুক্তির মহাকাশযান পাঠিয়ে ইতিহাস গড়ল জাপান

টেকভিশন২৪ ডেস্ক: গত বছরের আগস্টে চাঁদে সফল অবতরণ করে ভারতের চন্দ্রযান। এবার সেই পথের অনুসারী হলো এশিয়ার আরেক দেশ জাপান। সম্পূর্ণ নিজস্ব প্রযুক্তিতে বানানো মনুষ্যহীন মহাকাশযান চাঁদে পাঠিয়েছে দেশটি। বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, শুক্রবার বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা ২৫ মিনিটে চাঁদের শিওলি নামল এলাকায় সফল অবতরণ করে জাপানের মহাকাশযান মুন স্নাইপারএর মধ্য দিয়ে চাঁদে সফলভাবে অবতরণ করা পঞ্চম দেশ হিসেবে ইতিহাস গড়ল জাপান। এর আগে শুধু আমেরিকা, সোভিয়েত ইউনিয়ন, চীন ও ভারত এই কৃতিত্ব অর্জন করতে পেরেছে। এই দশকে এই কৃতিত্ব গড়তে পেরেছে আর মাত্র তিনটি দেশ।চাঁদের বুকে দুটো রোভার ছেড়েছে জাপানের পাঠানো প্রুব। এগুলো সেখানে গবেষণা করবে। নাসার বরাতে বিবিসি বলছে, এরই মধ্যে নাসার ডিপ স্পেস নেটওয়ার্ক জাপানি মহাকাশযানের ল্যান্ডারের সিগন্যাল পেয়েছে। এর মানে এটি সেখানে অবতরণ করেছে। অফিসিয়ালি এই তথ্য নিশ্চিত করেছে জাপানের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা জাক্সা।

বিবৃতিতে জাক্সা জানায়, মহাকাশযানটি সফলভাবে চাঁদে অবতরণ করেছে। এটি লক্ষ্যের ১০০ মিটারের মধ্যে অবতরণ করে। যদিও এটি সৌরশক্তি থেকে চার্জ নেওয়া শুরু করেনি এবং এটি ব্যাটারির ওপর এখন পর্যন্ত নির্ভরশীল আছে।  স্মার্ট ল্যান্ডার ফর ইনভেস্টিগেটিং মুন (স্লিম) নামে পরিচিত মহাকাশযানটি বানিয়েছে জাপানের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (জাক্সা) ও খেলনা নির্মাতা প্রতিষ্ঠান তাকারা তোমি। চন্দ্রপৃষ্ঠের ১০০ মিটার এলাকার মধ্যে এটি অবতরণের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল। সাধারণত চাঁদে অন্যান্য মহাকাশযানের অবতরণ অঞ্চল কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে।দুটি ব্যর্থ চন্দ্রাভিযান ও সম্প্রতি উৎক্ষেপণ করা একটি রকেট বিস্ফোরিত হওয়ায় পর এবারের অভিযানের সফলতার ব্যাপারে বেশ আশাবাদী ছিল জাপান। তাদের সেই আশা এবার পূর্ণ হলো।টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক তোমোকাতসু মোরোতা বলেন, এই অভিযানের মাধ্যমে চাঁদের ইতিহাস সম্পর্কে আরও তথ্য জানা যাবে। এ ছাড়া চাঁদে পানির উৎসের রহস্য উদঘাটনের উচ্চাকাঙ্ক্ষা রয়েছে জাপানের। সেখানকার জীবন নিয়েও জানা যাবে।অন্যতম মিত্র দেশ আমেরিকার সহায়তায় মহাকাশে বেশ তৎপর হয়ে ওঠেছে জাপান। চীনের কার্যক্রমের জবাব দিতেই আমেরিকা এই কার্যক্রমে জাপানের পাশে আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার আর্টেমিস প্রোগ্রামের আওতায় চাঁদে মহাকাশচারী পাঠাবে জাপান।জাক্সার স্লিম প্রজেক্টের ম্যানেজার শিনিচিরো সাকাই বলেন, আমরা এই অভিযানে যা অর্জন করেছি, আর কোনো দেশ পারেনি। আর্টেমিসেও আমাদের প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে।

এর আগে গত বছরের ২৩ আগস্ট রোভার প্রজ্ঞানকে নিয়ে চাঁদের মাটিতে অবতরণ করে চন্দ্রযান-৩-এর ল্যান্ডার বিক্রম। এর মধ্য দিয়ে বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে গবেষণা কাজ শুরু করে ভারত। এর আগে কোনো দেশ চাঁদের দক্ষিণ মেরু স্পর্শ করতে পারেনি।রাশিয়া মহাকাশযান পাঠালেও সেটি সফল অবতরণ করতে পারেনি। রাশিয়ার পাঠানো যানের নাম লুনা-২৫। এর মধ্য দিয়ে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পৌঁছার প্রতিযোগিতা শুরু হয়। যে প্রতিযোগিতায় রাশিয়া হেরে যায়। তবে চীনও এই প্রতিযোগিতায় যুক্ত হয়। দেশটি দাবি করে বসে, ভারত আদতে দক্ষিণ মেরুতে যেতে পারেনি। চীন প্রথম দক্ষিণ মেরুতে যাবে!

উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন