তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলাদেশের সক্ষমতার অংশ ভার্চুয়াল ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড ২০২০

টেকভিশন২৪ ডেস্ক: রাজধানীর আগারগাঁও এর ফিল্ম অ্যান্ড আর্কাইভ মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে  ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড ২০২০ এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।

বুধবার (৯ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ প্রধান অতিথি হিসেবে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে ৭ম ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড এর উদ্বোধন করেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, ‘আগে প্রতি এমবিপিএস (মেগা বাইট পার সেকেন্ড) ইন্টারনেটের মূল্য ছিল ৭৮ হাজার টাকা, এখন প্রতি এমবিপিএস ইন্টারনেটের মূল্য ৩০০ টাকার নিচে নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। ২০০৯ সালের আগে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ১০ লাখ। বর্তমানে সেটি ১০ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। সারাদেশে অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবলের মাধ্যমে ৩ হাজার ৪০০ ইউনিয়নে ইন্টারনেট সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া, ১৮ হাজার ৫০০ সরকারি অফিস একই নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হয়েছে। সারাদেশের ডিজিটাল সেন্টার স্থাপনের মাধ্যমে স্থানীয় পর্যায়ে ১৩ হাজারের বেশি উদ্যোক্তা তৈরি করা হয়েছে, যার অর্ধেকই নারী। জনগণের সেবা পাওয়া সহজলভ্য করার জন্য আরও ১০ হাজার ডিজিটাল সেন্টার তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে। আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত ও সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে পৃথিবীর মানচিত্রে স্থান করে নিতে সক্ষম হবে বলে আমার বিশ্বাস। ’

করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির সময় অনলাইন জীবনকে রক্ষা করেছে জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, করোনার মধ্যেই ই-কমার্সের মাধ্যমে ঘরে বসে কেনাবেচা করা, অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম, ভার্চ্যুয়াল কোর্টের মাধ্যমে বিচারের কার্যক্রম, টেলিমেডিসিন সেবাসহ বিভিন্ন অনলাইন সুবিধা এ কঠিন সময়ে আমাদের জীবন রক্ষা করেছে। ’

প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, ‘তথ্য-প্রযুক্তি বিকাশের ফলে আমাদের সামনে অনেক শিল্প বিপ্লবের সুযোগ তৈরি হয়েছে। এতে করে আমাদের দেশের তরুণরা প্রতিবছর নতুন করে শিল্প বাজারে প্রবেশ করছে। ৫ লাখ ৮৫ হাজার তরুণকে আইসিটি প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তথ্য-প্রযুক্তি খাতে দক্ষ তরুণ-তরুণীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। তথ্য-প্রযুক্তির জগতে হাইটেক শিল্পের বিকাশের জন্য সরকার সারাদেশে ৩৯টি হাইটেক পার্ক ও সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক স্থাপন করেছেন। সবকিছু চালু হলে তিন লাখ মানুষের নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবে। ’

করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির সময় অনলাইন জীবনকে রক্ষা করেছে জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, করোনার মধ্যেই ই-কমার্সের মাধ্যমে ঘরে বসে কেনাবেচা করা, অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম, ভার্চ্যুয়াল কোর্টের মাধ্যমে বিচারের কার্যক্রম, টেলিমেডিসিন সেবাসহ বিভিন্ন অনলাইন সুবিধা এ কঠিন সময়ে আমাদের জীবন রক্ষা করেছে। ’

ফ্রিল্যান্সিংয়ের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘তরুণ প্রজন্মকে স্বাবলম্বী করার জন্য ফ্রিল্যান্সিং এক অনন্য মাত্রা স্থাপন করেছে। ফ্রিল্যান্সারের দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে দ্বিতীয়। বর্তমানে এদেশের সাড়ে ছয় লাখ সক্রিয় ফ্রিল্যান্সার আছে। তবে ফ্রিল্যান্সিং পেশায় পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও যেন এগিয়ে যেতে পারে সে ব্যবস্থা করতে হবে। বাংলাদেশের আইটি সেবা এখন আমেরিকা, ইউরোপ, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের প্রায় ৬০টি দেশে সরবরাহ করা হচ্ছে। ২০০৯ সাল থেকে গত ১২ বছরে আইটি খাতে রপ্তানি ২৬ মিলিয়ন থেকে বেড়ে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে।

আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বর্ণাঢ্য উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ কে এম রহমতুল্লাহ, আইসিটি বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব নিয়াজ মোহাম্মাদ জিয়াউল আলম এবং বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবির।

সভাপতির বক্তব্য দিচ্ছেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘প্রযুক্তি আর তারুণ্যের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে আসিয়ান-এশিয়ান দেশের মধ্যে অন্যতম দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সূচক ৫ এর ওপরে ছিল। বেসরকারি অংশীদারদের সঙ্গে নেওয়ায় ১০০ কোটির ই-জিপি সফটওয়্যার ২০ কোটি টাকায় তৈরি করে দেশের টাকা সাশ্রয় করা গেছে। ’

তথ্য-প্রযুক্তির সুফল তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যেই ১০ লাখ ই-নথি সম্পাদন করেছি। এ অনুষ্ঠানে আসার মুহূর্তে গাড়িতে বসেও আমি একটি ফাইলের কাজ সেরেছি। এভাবেই দেশে এখন লাল ফিতার দৌরাত্ম্য ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতা নেই। ’

ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে দেন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক পার্থ প্রতিম দেব।

উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন