ইলন মাস্কের স্টারলিংক যেভাবে ইন্টারনেট সেবা দেবে বাংলাদেশে

ইলন মাস্কের স্টারলিংক যেভাবে ইন্টারনেট সেবা দেবে বাংলাদেশে
ইলন মাস্কের স্টারলিংক যেভাবে ইন্টারনেট সেবা দেবে বাংলাদেশে

টেকভিশন২৪ ডেস্ক: বাংলাদেশে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ইন্টারনেট পরিষেবা দিতে সরকারের সঙ্গে চুক্তি করেছে ইলন মাস্কের স্টারলিংক। ২৬ জুলাই বুধবার আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সঙ্গে স্পেসএক্সের দুই প্রতিনিধি বৈঠক করেন।

বৈঠকে ইলন মাস্কের আরেক প্রতিষ্ঠান স্টার লিংকের সঙ্গে একটি পাইলট প্রকল্পে সম্মত হয় বাংলাদেশ। চুক্তি অনুযায়ী তিন মাসের জন্য বাংলাদেশে পরীক্ষামূলক ইন্টারনেট সরবরাহ করবে স্টার লিংক। এজন্য তারা দুইটি ডিভাইসও দিয়েছে।

কার্যকারিতা পরীক্ষার জন্য ডিভাইস দুটির একটি বসানো হবে বাসের ভেতরে এবং অন্যটি প্রত্যন্ত কোনো দ্বীপে। মার্কিন নভোচারী প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সকেও ইন্টারনেট সরবরাহ করে স্টারলিংক। পৃথিবীর ৬০টি দেশে তাদের কভারেজ রয়েছে।

বাংলাদেশে পরীক্ষামূলক সরবরাহ শেষ হলে তাদের সঙ্গে ইন্টারনেটের দাম নিয়ে আলোচনায় বসবে বিটিআরসি। ২৯ জুলাই, শনিবার এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে থাকবেন তাদের প্রতিনিধিরা।

প্রান্তিক ও দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতেও মানুষ যাতে নিরবচ্ছিন্ন উচ্চগতির ইন্টারনেটে সংযুক্ত রাখতে পারে সে লক্ষ্যেই এই পরিষেবা নিয়ে আসছে সরকার।

স্টারলিংক কী?

স্টারলিংক মূলত স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ইন্টারনেট পরিষেবা দেয়। স্টারলিংক মূলত অরবিটাল স্যাটেলাইটের নেটওয়ার্ক। এটি ইলন মাস্কের স্পেস এক্সের অধীন। যা ২০১৫ সালে তৈরি করা হয়েছিল। এই প্রকল্পের জন্য প্রাথমিক প্রোটোটাইপ স্যাটেলাইটগুলো কক্ষপথে ২০১৮ সালে চালু করা হয়েছিল।

স্পেস এক্স এখন পর্যন্ত প্রায় ১০০০টি স্টারলিংক স্যাটেলাইট সফলভাবে উৎক্ষেপণ করেছে। ঠিক একই বছরে, স্টারলিংকের মিশনের অধীনে, তিনি ২০২১ সালে প্রায় ৬০টি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছেন। যার জন্য তিনি কেনেডি স্পেস সেন্টার ব্যবহার করেছিলেন, সেটিও উৎক্ষেপণযোগ্য ফ্যালকন ৯ অরবিটাল রকেট ব্যবহার করে। একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে এখন পর্যন্ত ১৭৩৭টিরও বেশি উপগ্রহ একটি নক্ষত্রমণ্ডলের আকারে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

স্টারলিংক হল একটি নিম্ন-আর্থ অরবিট স্যাটেলাইট পরিষেবা যা ব্যবহারকারীদের একটি ব্রডব্র্র্যান্ড ইন্টারনেট কানেকশন প্রদান করে। এই পরিষেবার সাহায্যে বিভিন্ন দুর্গম এলাকা বা গ্রামাঞ্চলে ভালো ইন্টারনেট পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া যাবে। কোম্পানিটি প্রায় এক হাজার স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে। ভবিষ্যতে আরও স্যাটেলাইট তৈরি করা হবে।

স্টারলিংক ইন্টারনেট কীভাবে কাজ করে ?

স্টারলিংক যেহেতু স্যাটেলাইট-ভিত্তিক ইন্টারনেট পরিষেবা দেয়। তাই এর সিগন্যাল রিসিভ করতে অ্যান্টেনার প্রয়োজন হবে। অনেকটা ডিশের ছাতার মতো। তবে আকারে ছোট। ১ ফুট ছাতা দিয়ে স্টারলিংকের ইন্টারনেট সিগন্যাল যেকোনো প্রান্তে বসেই পাওয়া যাবে। এর জন্য লোয়ার অরবিট স্যাটেলাইট ব্যবহার করা হয়।

অনেক নিম্ন অরবিটাল স্যাটেলাইটের কারণে, লেটেন্সি রেট অনেক কমে যায়। লেটেন্সি রেট এক পয়েন্ট থেকে অন্য পয়েন্টে ডেটা স্থানান্তর করতে যে সময় লাগে তাকে নিম্ন অরবিটাল স্যাটেলাইট বোঝায়। কম বিলম্বের কারণে, এগুলোর অনলাইন বাফারিং, গেমিং এবং ভিডিও কলিংয়ের মান ভালো হয়ে থাকে।

স্টারলিংকের ইন্টারনেট পেতে আপনাকে ডিশ ছাড়াও সিগন্যাল ডিকোডার অর্থাৎ রিসিভার লাগবে।

স্টারলিংক ইন্টারনেটের সুবিধা

  • এই স্যাটেলাইট ইন্টারনেট যেকোনো জায়গা থেকে ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • কখনও কখনও এর গতি সাধারণত প্রতিশ্রুতির তুলনায় দ্রুত হয়ে থাকে।
  • প্রত্যন্ত অঞ্চল এবং দুর্যোগে স্টারলিংক ইন্টারনেট ভালো পরিষেবা দিতে পারে ।
  • কেবল তার না থাকার কারণে দুর্যোগের সময় এটি সহজেই পুনরুদ্ধার করা যায়।

স্টারলিংক ইন্টারনেটের অসুবিধা

  • এই মুহূর্তে লেটেন্সি সমস্যা স্টারলিংক ইন্টারনেটের সবচেয়ে বড় অসুবিধা।
  • স্টারলিংক ইন্টারনেটের দাম সাধারণ ইন্টারনেটের তুলনায় অনেক বেশি।
  • এর জন্য আকাশকে পরিষ্কার হতে হবে।
  • প্রবল বৃষ্টি বা প্রবল বাতাস এর কানেকশনকে বিঘ্নিত করতে পারে। যা ইন্টারনেটের গতিকে প্রভাবিত করে।
  • এটি ভিপিএনকে সমর্থন করে না।

উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন