উৎপাদনমুখী কাজে অনেক আগে থেকেই মানুষ আর যন্ত্র এক সাথে কাজ করছে। সেই যন্ত্রই আসলে এক ধরনের রোবট। তবে এতদিন ‘কাঠামোবদ্ধ জ্ঞানভিত্তিক কর্মীদের (নলেজ ওয়ার্কার্স)’ কাজে এসব রোবট তেমন একটা যোগ দেয়নি। এবার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) কারণে এখানেও এরা হানা দিতে শুরু করেছে। আর এতে চাকরি হারানোর শঙ্কায় রয়েছেন লাখো মানুষ।
এই সময়টা এত দ্রুত চলে আসবে, কেউ হয়তো ভাবেননি। তবে ওপেনএআইয়ের চ্যাটজিপিটি আবির্ভাবের পরই মূলত এই শঙ্কা দেখা যায়। আর চলতি বছর এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যাপক আলোচনার বিষয়ে পরিণত হয়েছে। মানুষ রীতিমতো এই এআইয়ের পরামর্শও নিতে শুরু করেছেন।
মানুষের কাঠামোবদ্ধ কাজগুলোতেও এবার হানা দিতে পারে এই এআই। আর এমন হলে কপাল পুড়বে অনেকের। কপাল কতটা পুড়তে পারে, সেই হিসাব গত এপ্রিলেই দিয়েছে মার্কিন প্রতিষ্ঠান গোল্ডম্যান স্যাকস। তারা বলছে, অচিরেই বিশ্বের জিডিপির ৭ শতাংশে থাকবে চ্যাটজিপিটির মতো এসব এআইয়ের অবদান। এই পরিমাণ জিডিপিতে সাধারণত ৩০ কোটি কর্মীর অংশগ্রহণ থাকে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদন বলছে, অনেকেই ভাবতেন বিভিন্ন কারখানার মেশিন আর কী চাকরি খাবে? বড়জোর বার্গার বানাবে, খাবার তৈরিতে আসবে কিংবা দিনের কাজগুলো আরও সহজ করবে। কিন্তু বাস্তবতা আরও দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে।
এমন অনেক চাকরি আছে, যাতে এখন এআই এখনো জুতসই হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। সেসব কাজে জুতসই হতে আরও সময় লাগবে এআইয়ের। সেই সময়টা এরই মধ্যে এসে পড়েছে বলেই মনে করছেন প্রযুক্তিবিদরা। ফলে ‘নিরাপদ’ ভাবা সেই চাকরি আর নিরাপদ থাকছে না।
এর মধ্যে বেশ কয়েকটি কাজের ক্ষেত্রও উল্লেখ করে দিয়েছে বিবিসি। যেমন– মার্কেটিং, মিউজিক প্রোডাকশন ও গ্রাফিক ডিজাইন। সৃজনশীলতার কিছুটা ছিটেফোটা থাকা এসব কাজে এআইয়ের হানা দেওয়া মানুষের জন্য বড় দুশ্চিন্তার বিষয়ই বটে।
ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনের সিনিয়র ফেলো মার্ক মুরো বলছেন, এতদিন যারা তাদের সৃজনশীল কাজ নিয়ে খুব একটা চিন্তায় থাকতেন না। মনে করতেন—এসব কাজে তাকেই লাগবে। সেসব কর্মীরা এবার মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়বেন। এআই তাদের চাকরিটা এবার ‘খেয়েই দেবে’।
কেননা জেনারেটিভ এআই টুলস ও টেকনোলজি এখন এ ধরনের কাজেও বেশ পারদর্শী। অদূর ভবিষ্যতে এই প্রযুক্তি আরও চৌকস হবে বলেই মনে করা হচ্ছে