বিসিএস নির্বাচন ২০২৪-২৬: মোস্তাফিজুর ও জলিল এর প্রার্থীতা বহাল রাখল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়

বিসিএস নির্বাচন ২০২৪-২০২৬: মোস্তাফিজুর রহমান ও আব্দুল জলিল এর প্রার্থীতা বহাল রাখল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়
বিসিএস নির্বাচন ২০২৪-২০২৬: মোস্তাফিজুর রহমান ও আব্দুল জলিল এর প্রার্থীতা বহাল রাখল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়

টেকভিশন২৪ ডেস্ক: দেশের আইসিটি ব্যবসা খাতের বাণিজ্য সংগঠন বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির (বিসিএস) ২০২৪-২০২৬ মেয়াদের কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচনে টেক হিল এর স্বত্বাধিকারী মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান এবং এশিয়াকম এর স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ আব্দুল জলির এর প্রার্থীতা বহাল রেখেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। গত ১৮ মার্চ বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির সভাপতি, নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান, নির্বাচন আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং উল্লেখিত দুই জন প্রার্থীকে এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোঃ আবুল কালাম আজাদ।

চিঠিতে জানানো হয়, “উপর্যুক্ত বিষয়ে জানানো যাচ্ছে যে, বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির ২০২৪-২০২৬ মেয়াদের কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়নের বৈধতা/অবৈধতা বিষয়ে সিনিয়র সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক  শুনানী গৃহীত হয়। সংগঠনটির সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও অংশগ্রহনমূলক নির্বাচনের লক্ষ্যে নিম্নবর্ণিত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়:

মহাপরিচালক, বাণিজ্য সংগঠন কর্তৃক প্রদত্ত সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল মর্মে তা বহাল রাখা হলো এবং আপিলকারীর আবেদন নাকচ করা হলো।”

উল্লেখ্য, গত ৯ মার্চ বিসিএসের কার্যনির্বাহী কমিটি ও ১১টি শাখার কমিটি নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করার কথা ছিল। এর আগে নির্বাচনে অংশগ্রহনের জন্য প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় ছিল ৭ ফেব্রুয়ারি বেলা ২.৩০ মিনিট। কার্যনির্বাহী কমিটির সাতটি পদের জন্য ৯ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। নির্ধারিত সময়ের পর মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ায় কারন দেখিয়ে নির্বাচন বোর্ড দুজন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করে। পরে তারা আপিল করলে নির্বাচনী আপিল বোর্ডও একই সিদ্ধান্ত বহাল রাখে। এরপর ওই দুই প্রার্থী নির্বাচন বোর্ডের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পরিচালক বাণিজ্য সংগঠন (ডিটিও) বরাবর আপিল করেন এবং গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ডিটিও দুটি মনোনয়নপত্র বৈধ বলে সিদ্ধান্ত দেন। এই বিষয়ে পুনঃশুনানির জন্য বিসিএসের নির্বাচন বোর্ড আবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আপিল করে। সেই আপিলের শুনানি গত ৭ মার্চ অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং ১৮ মার্চ প্রার্থীতা বহাল রাখার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আগের সিদ্ধান্ত বহাল রাখার কথা জানানো হয়েছে। ফলে, এখন ৯ জন প্রার্থীকে নিয়ে নির্বাচন সংক্রান্ত পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালিত হবে।

এবারের নির্বাচনে নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন ওরা-টেক কনসালটিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ কবীর আহমেদ। সদস্য হিসেবে ছিলেন সাইবার কমিউনিকেশনের প্রধান কার্যনির্বাহী মো. নাজমুল আলম ভুঁইয়া (জুয়েল) এবং কম্পিউটার আর্কাইভস এর স্বত্বাধিকারী মো. আমির হোসেন। নির্বাচনী আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন বিসিএস এর সাবেক সভাপতি এস.এম. ইকবাল। মেট্রোনেট বাংলাদেশ লিমিটেডের প্রধান কার্যনির্বাহী ও এফবিসিসিআই এর সাবেক পরিচালক সৈয়দ আলমাস কবির এবং এডভান্সড কম্পিউটার টেকনোলজি’র (এসিটি) স্বত্বাধিকারী প্রকৌশলী চৌধুরী মো. আসলাম আপীল বোর্ডের সদস্য হিসেবে ছিলেন। বিসিএস সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান শেখ কবীর আহমেদ এবং নির্বাচনী আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান এস.এম. ইকবাল ও আপীল বোর্ডের সদস্য সৈয়দ আলমাস কবির বেশ কিছুদিন আগে ব্যক্তিগত কারন দেখিয়ে ডিটিও বরবার পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন।

বিসিএস সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার সুব্রত সরকার জানান, বর্তমান কমিটির মেয়াদ ২০২৪ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত, ফলে পরিবর্তীত পরিস্থিতিতে আমরা ৩১ মার্চের মধ্যে নির্বাচন সংক্রান্ত কার্যক্রম শেষ করতে চাই। তিনি বলেন, বিসিএস এর গঠনতন্ত্রে কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার ১৫ দিন পূর্বে নির্বাচন সংক্রান্ত কার্যক্রম শেষ করার কথা বলা আছে। কিন্তু এখন আমাদের হাতে ১৫ দিন সময় নেই, বিষয়টি আমরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অবহিত করেছি। তারা আমাদেরকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করবেন বলে জানিয়েছেন। অন্যদিকে নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসাবে শূন্য পদে ইতোমধ্যে মনোনীত হয়েছেন এক্সেল টেকনোলজিস লিমিটেডের পরিচালক বীরেন্দ্র নাথ অধিকারী। আপীল বোর্ডের শূন্য পদে মনোনীত হয়েছেন ম্যাসিভ কম্পিউটার্সের স্বত্বাধিকারী মুসা কামাল মিহির ও বিজনেসল্যান্ড লিমিটেডের পরিচালক হামিদুল্লাহ খান কচি। অন্যদিকে ঘোষিত নির্বাচন তফসিল অনুসারে নির্বাচনে ভোট প্রদান ছাড়া অন্য কার্যক্রমগুলো ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে, ফলে দ্রুতই আমরা নির্বাচন সংক্রান্ত কার্যক্রম শেষ করতে পারবো বলে আশা করছি।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার মাধ্যমে প্রার্থীতা ফিরে পাওয়া মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “বিসিএস নির্বাচন বোর্ড আমার প্রার্থীতা বৈধ নয় বলে ঘোষনা করার পর, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি প্রার্থীতা বৈধ হিসাবে সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে; কিন্তু আমি এখনো পর্যন্ত নির্বাচন বোর্ড থেকে প্রার্থীতা বৈধ হিসাবে কোন সিদ্ধান্ত পাই নি। এর মধ্যে নির্বাচন বোর্ডের পুনঃআপিলের পরিপ্রেক্ষিতে ১৮ মার্চ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের পক্ষ থেকে আবারও প্রার্থীতা বৈধ ঘোষনার সিদ্ধান্ত বহাল রাখা হয়। অন্যদিকে নির্বাচন বোর্ড এবং আপিল বোর্ডের সদস্যরা পদত্যাগ করেছেন, আবার পুনরায় নতুন সদস্য নিয়োগ দেয়া হয়েছে, এই সংক্রান্ত কোন বিষয়ও অফিশিয়ালি অবহিত করা হয়নি। আর সর্বোপরি, নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়া থেকে শুরু করে, আপিল-পুনঃআপিল এসব কার্যক্রম প্রার্থী ও ভোটারদের অবহিত না করার কারনে আমি সহ ভোটাররা সঠিক তথ্য জানার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।”

উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন