আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে পুস্পস্তবক অর্পণ এবং আলোচনা সভার আয়োজন করে বিটিআরসি

টেকভিশন২৪ ডেস্ক: মহান ২১শে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২৩” উদযাপন উপলক্ষে মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর মগবাজারে বিটিসিএল আইডিয়াল স্কুল প্রাঙ্গণে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং “বঙ্গবন্ধু ও ভাষা আন্দোলন” শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান এর সভাপতিত্বে উক্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যান (সিনিয়র সচিব) জনাব শ্যাম সুন্দর সিকদার উপস্থিত ছিলেন।

সকালে বিটিসিএল আইডিয়াল স্কুল প্রাঙ্গনে অবস্থিত শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ভাষা শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান। এ সময় বিটিআরসি’র চেয়ারম্যানসহ ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অধীনস্হ দপ্তর ও সংস্থাসমূহের প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।

এরপর বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এর পক্ষ থেকে কমিশনের চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদারের নেতৃত্বে শহীদদের প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধা জানানো হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিটিআরসি’র ভাইস-চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোঃ মহিউদ্দিন আহমেদ, লিগ্যাল এন্ড লাইসেন্সিং বিভাগের কমিশনার আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন, অর্থ, হিসাব ও রাজস্ব বিভাগের কমিশনার অধ্যাপক ড. মুশফিক মান্নান চৌধুরী, প্রশাসন বিভাগের মহাপরিচালক মোঃ দেলোয়ার হোসাইনসহ বিটিআরসির উধ্বর্তন কর্মকর্তারা। পর্যায়ক্রমে টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড, বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড, ডাক অধিদপ্তর, টেলিফোন শিল্প সংস্থা, মেইলিং এন্ড কুরিয়ার লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ, টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের পক্ষ থেকে ফুলেল শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়।

পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু ও ভাষা আন্দোলন শীর্ষক অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড ( বিটিসিএল) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) জনাব আসাদুজ্জামান চৌধুরী এবং ‘বঙ্গবন্ধু ও ভাষা আন্দোলন’ এর ওপর আলোচনা করেন টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জনাব মো: রফিকুল ইসলাম । আলোচনায় তিনি মাতৃভাষা বাংলা প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর অবদানের বিষয়ে বিস্তারিত আলোকপাত করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোস্তাফা জব্বার বলেন, আমরা সেই গৌরবান্বিত জাতি, যারা মা, মাতৃভূমি ও মাতৃভাষার জন্য কখনো আপোষ করেনি। মনের ভাব প্রকাশের জন্য মাতৃভাষা সবচেয়ে বড় হাতিয়ার এবং প্রযুক্তির সকল ক্ষেত্র বর্তমানে বাংলা ভাষার ব্যবহার হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ভাষাভিত্তিক যে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছেন, তার জন্য লড়াই করা আমাদের দায়িত্ব। কৃষিভিত্তিক দেশ থেকে বাংলাদেশে এখন পঞ্চম শিল্প বিপ্লবের দিকে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান (সিনিয়র সচিব) শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার পর দীর্ঘ ২১ বছর ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের বিষয় উল্লেখ করা হতো না। ভাষা আন্দোলন কেবল ভাষার জন্য নয়, এটি বাঙ্গালির সামাজিক ও রাজনৈতিক আন্দোলন উল্লেখ করে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, ভাষার জন্য এমন আত্মত্যাগের দৃষ্টান্ত পৃথিবীর আর কোথাও নেই। ১৯৫২ সালে যারা আত্মহুতি দিয়েছেন সেই সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, ১৯৪৮ সাল থাকে ভাষা আন্দোলনের বীজ বপন হয়।

বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. শাহজাহান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধু ও ভাষা আন্দোলন অভীন্ন। বাংলাকে আন্তর্জাতিক পরিসরে নিয়ে যেতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদান রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণার জন্য প্রবাসী বাঙ্গালীদের অবদান অনস্বীকার্য।

সভাপতির বক্তব্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান বলেন, বাংলা বর্ণমালা এমনভাবে তৈরি হয়েছে তা যেভাবেই বলা হোক না কেন তাতে মনের ভাব প্রকাশ করা যায়, যা অন্য ভাষার ক্ষেত্রে সম্ভব হয় না। বাংলা ভাষা প্রতিষ্ঠার লড়াইকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে গেছেন উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, তরুণ প্রজন্মকে ভাষার সাথে যুক্ত করতে হবে, যাতে তারা বাংলা ভাষার মর্যাদা উপলব্ধি করতে পারে। স্মার্ট বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ কাজ করছে বলেও জানান তিনি।

আলোচনা অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং এর অধীনস্হ বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার কর্মকর্তাবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন