গার্লস ইন আইসিটি দিবস উপলক্ষে বিডিওএসএনের আয়োজন

টেকভিশন২৪ ডেস্ক: আইসিটি খাতে বাংলাদেশী নারীদের অবদান উদযাপনের পাশাপাশি অংশগ্রহণ বাড়ানোর জন্য লুনা শামসুদ্দোহা আইসিটি উইক সেলিব্রেশনের আওতায় মেয়ে শিক্ষার্থীদের নিয়ে “অল গার্লস প্রোগ্রামিং কনটেস্ট” আয়োজন করল ঢাকা বিশবিদ্যালয়ের আইআইটি গার্লস কমিউনিটি এবং বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক (বিডিওএসএন)। আন্তর্জাতিক গার্লস ইন আইসিটি দিবস ২০২৪ উপলক্ষে বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান দোহাটেক নিউ মিডিয়ার অনুপ্রেরণায় এবং টাফ ডট কো- এর সহযোগিতায় আজ সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউটে এ প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।

প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে নিজেদের প্রোগ্রামিং দক্ষতা প্রদর্শন করতে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেনী পড়ুয়া সারা বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় অর্ধশতাধিক মেয়ে শিক্ষার্থী সকাল থেকে ইনস্টিটিউটের কম্পিউটার ল্যাবে প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। এ প্রোগ্রামিং কনটেস্ট এর বিশেষত্ব হল এর অংশগ্রহণকারী থেকে শুরু করে বিচারক, আয়োজক, প্রবলেম সেটার সবাই মেয়ে। অল গার্লস প্রোগ্রামিং কনটেস্ট এর মূল প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে প্রথম স্থান অর্জন করেছে ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলোজির ফারিয়া আহমেদ, দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয়েছে যথাক্রমে মিলিটারি ইন্সটিটিউট অফ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজির নিশাত তাসনিম মীম ও সাদিয়া জাহান মুন। চতুর্থ থেকে দশম স্থান অধিকার করেছে যথাক্রমে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উমো হাবিবা লামিয়া, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির আতিয়া মাইসা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের তাওফিকা ভূঁইয়া, বুয়েটের মাহরিন আফরোজ, বুয়েটের নাবিহা তাহসিন। জাগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের লামিয়া রহমান খান এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির মেহেরিন নিশা। স্কুল এবং কলেজ পর্যায়ে বিজয়ী হয়েছে জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের এস এম সাবিকুন মীম। প্রথম তিনজনকে নগদ অর্থ প্রদানের পাশাপাশি সকল বিজয়ীদেরকে সার্টিফিকেট এবং মেডেল পরিয়ে দেয়া হয়। এ সময় সরাসরি কোন প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার অভিজ্ঞতা শোনায় উপস্থিত কয়েকজন শিক্ষার্থী। প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া সবাইকে অভিনন্দন জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবটিক্স এন্ড মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. লাফিফা জামাল বলেন, ‘মেয়েদের জন্য তাদের কোডিং দক্ষতা প্রদর্শন করার পাশাপাশি অন্যান্য কোডারদের সাথে প্রতিযোগিতা করার সুযোগ তৈরী করে দিতেই আমাদের এই নিয়মিত আয়োজন।’ প্রয়াত লুনা শামসুদ্দোহা সম্পর্কে সস্মৃতিচারণের পাশাপাশি মেয়েদের নিয়ে তার স্বপ্নের কথা বলেন দোহাটেক নিউ মিডিয়ার পরিচালক তাসলিমা আক্তার এবং সিটিও ফাহমিদা আখতার। পুরস্কার তুলে দিয়ে কম্পিউটার সার্ভিসেস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মমলুক ছাবির আহমেদ বলেন, ‘প্রোগ্রামিং মানে শুধু প্রোগ্রামিং ভাষা জানা নয় বা প্রোগ্রামিং বানাতে পারা নয়। এর পাশাপাশি প্রোগ্রামিংয়ের সমস্যাগুলোর সমাধানের দক্ষতা বাড়ে।’

নিজেদের একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি এ ধরনের প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদেরকে ধন্যবাদ জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক বি এম মইনুল হোসেন। এর আগে গত ২৬ এপ্রিল তারিখে নিবন্ধিত মেয়ে শিক্ষার্থীদের নিয়ে অনলাইন প্রিলিমিনারি রাউণ্ড অনুষ্ঠিত হয়। সারা বাংলাদেশ থেকে প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থী এ রাউন্ডে অংশ নেয়। অনলাইন রাউণ্ড থেকে নির্বাচিত অর্ধ শতাধিক মেয়ে শিক্ষার্থী আজকের চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। অংশগ্রহণকারীদেরকে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রোগ্রামিং সমস্যার সমাধান করতে দেয়া হয়। লুনা শামসুদ্দোহা আইসিটি উইক সেলিব্রেশন আয়োজন প্রসঙ্গে বিডিওএসএনের সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান বলেন, ‘বাংলাদেশের নেতৃস্থানীয় সফটওয়‍্যার উদ্যোক্তা প্রয়াত লুনা শামসুদ্দোহা, যিনি সারাজীবন আইসিটি সেক্টরের উন্নয়নে কাজ করেছেন। বাংলাদেশের কোনো রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের প্রধান হিসেবে প্রথম নারী এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার জন্য একজন নিবেদিত কর্মী ছিলেন তিনি। তাঁর অবদানের সম্মানে, তার নামেই প্রতি বছর এই দিবসটি উদযাপন করে আসছে বিডিওএসএন।’

উল্লেখ্য, মূলত, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির (আইসিটি) ক্ষেত্রে মেয়েদের অংশগ্রহণকে আরো বৃদ্ধি করার জন্য ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন (আইটিইউ) এর একটি আন্তর্জাতিক উদ্যোগ হলো গার্লস ইন আইসিটি ডে। বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল এবং গণিত (STEM) ক্যারিয়ারে মেয়েদেরকে আরো উন্নতির জন্য এবং ডিজিটাল বিশ্বে দক্ষতা অর্জন করার উদ্দেশ্যে “Leadership” থিমে এ বছর গার্লস ইন আইসিটি দিবস উৎযাপন করা হচ্ছে।

উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন