ইন্টারনেট ব্যাংকিং অ্যাপ বা ওয়েবে চার্জ দিতে হবে গ্রাহককে : কেন্দ্রীয় ব্যাংক

ছবি ইন্টারনেট থেকে।

টেকভিশন২৪ ডেস্ক: দেশে এতদিন অ্যাপ বা ইন্টানেটের মাধ্যমে অন্য ব্যাংকে টাকা পাঠাতে কোনো ফি বা চার্জ দিতে হতো না। তবে এখন থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা মতে প্রতি লেনদেনে গ্রাহকদের কাছ থেকে ন্যূনতম ১০ টাকা চার্জ নিতে পারবে ব্যাংক।

বাংলাদেশ বাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস্ ডিপার্টমেন্ট অটোমেটেড টেলার মেশিন (এটিএম), পয়েন্ট অব সেল বা পস এবং ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ে ফান্ড ট্রান্সফারের জন্য ফি ও চার্জ নির্ধারণ করে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করেছে।

দেশে কার্যরত সব তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস প্রোভাইডার, পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার এবং পেমেন্ট সিস্টেম অপারেটরদের নতুন এ নির্দেশনা পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচ ও ইন্টারন্যাশনাল পেমেন্ট স্কিমের আওতায় লেনদেনের ক্ষেত্রে নতুন এ নির্দেশনা কার্যকর হবে।  

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচের আওতায় একটি ব্যাংকের গ্রাহক ভিন্ন ব্যাংকের এটিএম ব্যবহার করে টাকা উত্তোলনে বর্তমানের মতোই গ্রাহক থেকে সর্বোচ্চ ১৫ টাকা নেওয়া যাবে। আর ৫ টাকা দেবে ব্যাংক কার্ড ইস্যুকারী ব্যাংক। এছাড়া স্থিতি অনুসন্ধান ও ক্ষুদে বিবরণীর জন্য বর্তমানের মতোই গ্রাহক থেকে ৫ টাকা ফি নেওয়া যাবে। পাশপাশি এটিএম থেকে তহবিল স্থানান্তরে কার্ড ইস্যুকারী ব্যাংক থেকে সর্বোচ্চ ১০ টাকা এবং অন্য ব্যাংকের এটিএমে জমার জন্য ২০ টাকা ফি নেওয়া যাবে।

দেশের ভেতরে পস ব্যবহার করে নগদ অর্থ উত্তোলনে প্রতি লেনদেনে গ্রাহক থেকে সর্বোচ্চ ২০ টাকা চার্জ নেওয়া যাবে। এক ব্যাংকের গ্রাহক অন্য ব্যাংকের পয়েন্ট অব সেল ব্যবহার করে মার্চেন্ট পেমেন্টের ক্ষেত্রে মার্চেন্ট থেকে মোট লেনদেনের নূন্যতম ১ দশমিক ৬০ শতাংশ ডিসকাউন্ট বাবদ আদায় করবে। এর ১ দশমিক ১ শতাংশ বিনিময় ফি হিসেবে কার্ড ইস্যুকারী ব্যাংক দেবে।

প্রযুক্তির পরিবর্তনের সাথে সাথে ব্যাংকিং লেনদেন পদ্ধতিরও অনেক পরিবর্তন এসেছে। এমন একটা সময় আসবে যে আপনি ইন্টারনেট ব্যাংকিং ছাড়া ব্যাংকিং লেনদেন কল্পনাও করতে পারবেন না। ইন্টারনেট ব্যাংকিং ব্যবহারের পিছনে অনেক কারণ আছে। যে কারণগুলোর জন্য আপনি যদি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করে থাকেন, তাহলে আপনাকে অবশ্যই ইন্টারনেট ব্যাংকিং ব্যবহার করতে হবে। কারণ ইন্টারনেট ব্যাংকিং এ রয়েছে নানা সুযোগ সুবিধা।

  • ইন্টারনেট ব্যাংকিং এর মাধ্যমে একজন গ্রাহক শাখায় না গিয়েও ব্যাংকিং করতে পারে।
  • রিয়েল টাইম ব্যালেন্স চেক করতে পারবেন।
  • রিয়েল টাইমে ফিক্স ডিপোজিট এবং স্কিম একাউন্টের ব্যালেন্স চেক করা যায়।
  • ঘরে বসেই এক একাউন্ট থেকে অন্য একাউন্টে টাকা ট্রান্সফার করা যায়।
  • ইন্টারনেট ব্যাংকিং এর মাধ্যমে একজন গ্রাহক ২৪ ঘন্টা ৭ দিন সবসময় ব্যাংকিং করতে পারে।
  • ট্রানজেকশনগুলো সাথে সাথেই হয়ে থাকে। এর জন্য তাকে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় না।
  • গ্রাহক তার ইচ্ছামত পিন পরিবর্তন করে নিতে পারে, যেটার কারণে অন্য কেউ তার একাউন্টে লগ ইন পারে না।
  • ক্যাশ টাকা বহন করতে হয় না বলে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি হয় না।
  • ট্রানজেকশনগুলো করার জন্য গ্রাহককে সবচেয়ে কম খরচ দিতে হয় ব্যাংকে।
  • যতবার ইচ্ছা ততবার স্টেটমেন্ট নেওয়া যায়।
  • যেকোনো সময় বিনামূল্যে ব্যালেন্স চেক করা যায়।
  • যেহেতু ইন্টারনেট ব্যাংকিং এর মাধ্যমে গ্রাহক সব সময় তার একাউন্ট এর তথ্য জানতে পারে।
  • সেজন্য একাউন্ট থেকে টাকা চুরির ঝুঁকি কম থাকে।
  • ক্রেডিট কার্ডের বিল প্রদান করা যায়।
  • যে কোন মোবাইলে এয়ার টাইম রিচার্জ করা যায়।
  • ক্লিয়ারিং চেক এর ক্ষেত্রে পজিটিভ পে ইনস্ট্রাকশন প্রদান করা যায়।
  • বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিল ছাড়াও বিভিন্ন ধরণের বিল প্রদান করা যায়।
  • আপনার লোন একাউন্টের আউটস্ট্যান্ডিং ব্যালেন্স জানা যাবে।
  • আরটিজিএস এর মাধ্যমে তাৎক্ষণিক এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে টাকা পাঠানো যায়।
  • বিইএফটিএন এর মাধ্যমে ২৪ ঘন্টার মধ্যে এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে টাকা পাঠানো যায়।
  • বাংলাদেশের যেকোনো ব্যাংকের যেকোনো শাখায় ।
  • ফান্ড ট্রান্সফার করে একই ব্যাংকের যেকোন হিসাবে তাৎক্ষণিক টাকা পাঠানো যায়।
  • ফিক্সড ডিপোজিট এবং স্কিম একাউন্ট খোলা এবং বন্ধ করা যায়।
  • স্ট্যান্ডিং অর্ডার প্রদান করা যায়।
  • চেক বইয়ের রিকুয়েস্ট, স্ট্যাটাস এবং স্টপ পেমেন্ট করা যায়।
  • এছাড়া কর্পোরেট গ্রাহকদের জন্য লেটার অব ক্রেডিট এর অ্যাপ্লিকেশন, ব্যাংক গ্যারান্টি, লিমিট ইনকোয়ারি সেবা ইন্টারনেট ব্যাংকিং এর মাধ্যমে পাওয়া যায়।
  • অধিকাংশ ব্যাংকের ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবা ফ্রিতে ব্যবহার করা যায়।
  • মোবাইল ব্যাংকিং এ টাকা টান্সফার করা যায়।

এক ব্যাংক থেকে আরেক ব্যাংকের ইন্টারনেট ব্যাংকিং তহবিল স্থানান্তরে লেনদেন প্রতি গ্রাহক থেকে সর্বোচ্চ ১০ টাকা এবং বাংলা কিউআরে মার্চেন্ট থেকে মোট লেনদেনের শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ চার্জ কাটা যাবে। এর মধ্যে শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ বিনিময় চার্জ বাবদ কার্ড ইস্যুকারী ব্যাংককে দিতে হবে। কার্ডের মাধ্যমে সরকারি পরিষেবার মূল্য পরিশোধের কর পরিশোধে বাংলাদেশে ইস্যুকৃত কার্ডের জন্য ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত পরিশোধে গ্রাহক থেকে লেনদেন প্রতি সর্বোচ্চ ২০ টাকা আদায় করবে। এর মধ্যে ২৫ হাজার টাকার বেশি লেনদেনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলো প্রচলিত ফি দেবে। তথ্যসূত্র: ঢাকাপোস্ট

উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন