আইসিটি খাতের উন্নয়নে আইসিপিসি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে

টেকভিশন২৪ ডেস্ক রিপোর্ট: আইসিপিসি ফাউন্ডেশনের সভাপতি এবং আইসিপিসির নির্বাহী পরিচালক ড. উইলিয়াম বি. পাউচার বৃহস্পতিবার ১০ নভেম্বর ২০২২ অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল এবং ইউনিভার্সিটি অফ এশিয় প্যাসিফিককে আইসিপিসি ওয়ার্ল্ড ফাইনালের বর্ণাঢ্য ও যথাযোগ্য আয়োজনের জন্য ভূয়সী প্রশংসা করেন। ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরার (আইসিসিবি) হল-১ গুলনকশায় আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি চলমান আইসিপিসি ওয়ার্ল্ড ফাইনালস ঢাকার প্রধান ও উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো উপস্থাপন করেন।

উক্ত সংবাদ সম্মেলনে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহ, আইসিপিসির উপনির্বাহী পরিচালক ড. মাইকেল জে. ডোনাহু, হোস্ট বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের উপাচার্য ও আইসিপিসি ওয়ার্ল্ড ফাইনালস্ ঢাকার পরিচালক অধ্যাপক কামরুল আহসান এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) এর নির্বাহী পরিচালক রণজিৎ কুমার অংশ গ্রহন করেন।

এসময় হুয়াওয়ের কর্পোরেট কমিউনিকেশনস্ বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ড ভিকি ঝ্যাং এবং জেট ব্রেইন এর বিনিয়োগ, গবেষণা ও শিক্ষা বিষয়ক বিভাগের এসভিপি অন্ড্রে ইভ্যানভ উপস্থিত ছিলেন।

ড. বিল পাউচার আইসিপিসি ওয়ার্ল্ড ফাইনালস ঢাকা সফলভাবে আয়োজনের জন্য ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিককে সহায়তার জন্য বাংলাদেশ সরকার বিশেষ করে আইসিটি বিভাগ এবং বালাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলকে ধন্যবাদ জানান । তিনি বলেন, আমি এখানে আসতে পেরে আনন্দিত। আমাদের আরও ভাল করার জন্য আমাদের সক্রিয় থাকতে হবে। তিনি আরো বলেন, শুধুমাত্র সীমাবদ্ধতাই নয়, অন্যরা যা করেছে তার বাইরেও নিজেকে প্রসারিত করতে হবে এবং নতুন দক্ষতা তৈরির মাধ্যমে সক্ষমতা বাড়াতে হবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য জায়গা করে দিতে হবে। তিনি বলেন, আইসিটি খাতের উন্নয়নে আইসিপিসি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান তার বক্তৃতায় বলেন, এই প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা সফলভাবে আয়োজনের মাধ্যমে ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক যে অভিজ্ঞতা অর্জন করছে তা পরবর্তীতে এই ধরনের বড় আয়োজন বাস্তবায়নের করতে বিশেষভাবে সহযোগিতা করবে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে আইসিপিসি ওয়ার্ল্ড ফাইনালস ঢাকা আয়োজনের মাধ্যমে আমরা যে শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারছি তা আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা বিশেষ করে ভবিষ্যত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নের ক্ষেত্রে সম্যক ভুমিকা রাখবে।

আইসিপিসি ওয়ার্ল্ড ফাইনালস ঢাকা আয়োজনের সুবিধা তুলে ধরে আইসিটি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব জনাব মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহ বলেন, “ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডের জন্য একটি মানবসম্পদ পুল তৈরি করতে আমাদের তরুণ প্রজন্মের জন্য সমস্যা সমাধানের সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। এ লক্ষ্যে আইসিটি বিভাগ সময়োপযোগী উদ্যোগ নিয়েছে এবং সম্প্রতি আমরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জাতীয় পাঠ্যসূচিতে সমস্যা সমাধানের দক্ষতা এবং কোডিং অন্তর্ভুক্ত করেছি।”

বিসিসি-র নির্বাহী পরিচালক জনাব রণজিৎ কুমার বলেন, “এই অনুষ্ঠানে আপনি এখন এখানে যা দেখেছেন, এমনকি প্রতিযোগিতার স্থানের যে চমৎকার পরিবেশ তৈরি হয়েছে তা হল কঠোর পরিশ্রমের ফল যার যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০১৭ সালে। যদিও অপারেশনাল পরিকল্পনা এবং প্রস্তুতিপর্ব গত বছর থেকে শুরু হয়েছিল তারপরে এই অনুষ্ঠানে বাস্তবায়নের জন্য আমরা মুখোমুখি এবং অনলাইন উভয় ক্ষেত্রেই শত শত মিটিং করেছি।”

সারা বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্য থেকে প্রাপ্ত সেরা ১৩৭টি দল ঢাকার বসুন্ধরার আইসিসিবি হল নং ৪ -এ চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। ৭০টি দেশ থেকে এক হাজারের বেশি অতিথি প্রতিযোগিতা উদযাপন করতে এখন ঢাকায় রয়েছেন। গত ৮ নভেম্বর আইসিসিবি-এর ১নং হলে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আইসিপিসি ওয়ার্ল্ড ফাইনালের ৪৫তম আসর শুরু হয়েছিল, যা প্রোগ্রামিং ওয়ার্ল্ড কাপ নামে পরিচিত।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের নেতৃত্বে আইসিপিসি এর ৪৫তম আসরের নির্বাহক এজেন্সি বিসিসি এবং বাংলাদেশের থেকে হোস্ট ইউনিভার্সিটি হল ইউএপি।

আইসিপিসি রিজিওনাল কনটেস্ট ডিরেক্টর (আরসিডি), ছাত্র, বিচারক, প্রশিক্ষক, স্পন্সর এবং অংশীদারদের নিয়ে এক বিশাল সমাবেশে পরিণত হয় আইসিপিসি ওয়ার্ল্ড ফাইনাল অনুষ্ঠান। ভেন্যু এবং হোটেল জুড়ে এই গ্রুপগুলোর কার্যক্রম এবং ইভেন্টগুলোও বিশ্ব ফাইনালের একটি অংশ। প্রতিযোগীদের জন্য গেমিং সুবিধা সহ একটি চিল জোন, মুজিব কর্নার, আইসিটি বিভাগের একটি প্যাভিলিয়নসহ স্পনসর শোকেস জোন আইসিসিবির ২ নং হলে স্থাপন করা হয়।

সোমবার ৭ অক্টোবর আইসিসিবিতে এ প্রাক্তন ছাত্রদের নিয়ে অ্যালামনাই টক অনুষ্ঠিত হয়। জেটব্রেইন্সের টেকট্রেক প্রেজেন্টেশন, আরসিডি সিম্পোজিয়াম এবং টিম রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম ছিল ঐ দিনটির অন্যতম গুরুত্বর্পূর্ণ কার্যক্রম। ৮ তারিখের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ছাড়াও সকালে অংশগ্রহণকারী টিম এবং কোচদের জন্য হুয়াওয়ের বিশেষ উপস্থাপনা এবং আইসিপিসি চ্যালেঞ্জ নামক আয়োজন ছিল আকর্ষণীয় অনুষ্ঠিত হয়। উল্লেখ্য, আরসিডিগণ বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর পরিদর্শনের পর ঐ দিন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

প্রতিযোগিতার ড্রেস রিহার্সালটি ছিল ৯ অক্টোবর ২০২২-এর একমাত্র ইভেন্ট। ১০ নভেম্বরে প্রতিক্ষিত উক্ত ওয়ার্ল্ড ফাইনাল এবং সমাপনী অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে শেষ হবে আইসিপিসি ওয়ার্ল্ড ফাইনাল ঢাকা।

উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন