টেকভিশন২৪ ডেস্ক: নির্মল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে পরিবেশ সুরক্ষায় বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে দেশের শীর্ষ ইলেকট্রনিক্স পণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন। সিএফসি’র (ক্লোরোফ্লোরোকার্বন) ব্যবহার বন্ধের পর বিশ্বের প্রথম এইচএফসি (হাইড্রোফ্লোরোকার্বন) ফেজ আউট প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে ওয়ালটন। এবার এইচসিএফসি (হাইড্রোক্লোরোফ্লোরোকার্বন) ফেজ আউটের কার্যক্রম হাতে নিয়েছে তারা। এজন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের সঙ্গে চুক্তি করেছে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে সহায়তা করছে জাতিসংঘ উন্নয়ন সংস্থা ইউএনডিপি।
উল্লেখ্য, পরিবেশ বান্ধব ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী পণ্য উৎপাদনের জন্য ওয়ালটন দেশ বিদেশে ব্যাপক প্রশংসিত। ইকো-ফ্রেন্ডলি উৎপাদন ব্যবস্থা এবং রেফ্রিজারেশন সিস্টেম ব্যবহার করে বিশ্ব শীতল রাখতে ওয়ালটন সব সময়ই সচেষ্ট। বৈশ্বিক উষ্ণায়ন রোধকল্পে ওয়ালটনের নেয়া প্রকল্পগুলোর ফলে ৫৪৩ হাজার টন কার্বন নিঃসরণ হ্রাস পেয়েছে। এর ফলে ৩০ শতাংশ বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয়েছে। দূষণ নিয়ন্ত্রণ এবং পরিবেশ সংরক্ষণে অসামান্য অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ জাতীয় পরিবেশ পদক পেয়েছে ওয়ালটন।
এ বিষয়ে রোববার (২৯ আগস্ট, ২০২১) পরিবেশ অধিদপ্তর ও ওয়ালটনের মধ্যে ‘এইচসিএফসি ফেজ আউট ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান (এইচপিএমপি স্টেজ টু) প্রজেক্ট’ শীর্ষক একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ আশরাফ উদ্দিন এবং ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর গোলাম মুর্শেদ নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে সই করেছেন।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোঃ হুমায়ুন কবীর, ওয়ালটন এসির চিফ বিজনেস অফিসার তানভীর রহমান, চিফ মার্কেটিং অফিসার ফিরোজ আলম, জ্যেষ্ঠ নির্বাহী পরিচালক প্রকৌশলী মহসিন সরদার, নির্বাহী পরিচালক শরীফ হারুনুর রশীদ, পরিবেশ অধিদপ্তরের বিভিন্ন বিভাগের পরিচালকগণ, ওয়ালটনসহ বাংলাদেশে এসি প্রস্তুতকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর গোলাম মুর্শেদ বলেন, ক্লোরোফ্লোরো গ্যাস পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। এই গ্যাসের ব্যবহার ও নিঃসরণ রোধে বাংলাদেশ পরিবেশ অধিদপ্তর ও ইউএনডিপি যে উদ্যেগ নিয়েছে, সেজন্য তাদেরকে আন্তরিক ধন্যবাদ। সবার চেষ্টা থাকবে নির্মল বাংলাদেশ গড়ার। এর ফলে আমরা বৈশ্বিক উষ্ণতা হ্রাসে অবদান রাখতে সক্ষম হবো। এতে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা হবে। এ প্রকল্প সফলভাবে বাস্তবায়নে আমাদের সবার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা থাকবে।
তিনি আরো বলেন, ওয়ালটন পরিবেশ সুরক্ষায় খুবই আন্তরিক। এর আগে ইউএনডিপি ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সহায়তায় বিশ্বের প্রথম এইচএফসি ফেজ আউট প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে ওয়ালটন। যার আওতায় ফ্রিজ ও কম্প্রেসরে এইচএফসি-১৩৪এ রেফ্রিজারেন্টের পরিবর্তে পরিবেশবান্ধব এইচসি-৬০০এ (আইসোবিউটেন) রেফ্রিজারেন্ট ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রকল্পটির সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে বায়ুমন্ডলে বাৎসরিক প্রায় ২৩০ মেট্রিক টন এইচএফসি গ্যাসের নিঃসরণ হ্রাস পেয়েছে। আমাদের লক্ষ্য সবার কাছে প্রযুক্তির সুফল পৌঁছে দেয়ার পাশাপাশি নির্মল বাংলাদেশ নিশ্চিত করা।
জানা গেছে, এসি উৎপাদনে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্য দায়ী এইচসিএফসি গ্যাসের ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধের লক্ষ্যে ‘এইচসিএফসি ফেজ আউট ম্যানেজমেন্ট প্লান (এইচপিএমপি স্টেজ টু)’ প্রকল্পটি নেয়া হয়েছে। এর আওতায় পরিবেশ অধিদপ্তর এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন সংস্থা ইউএনডিপির অধীনে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডসহ ছয়টি প্রতিষ্ঠান প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ দুই বছর। প্রকল্পের আওতায় ওয়ালটনের এসি কারখানায় দুটি উৎপাদন লাইনে আর-২২ রেফ্রিজারেন্টের পরিবর্তে পরিবেশবান্ধব আর-২৯০ এবং আর-৩২ রেফ্রিজারেন্ট ব্যবহারের প্রযুক্তি রূপান্তর করা হবে। নতুন এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ফলে আরো প্রায় ১২.২২ টন ওজোনস্তর ক্ষয়কারী গ্যাসের নিঃসরণ হ্রাস পাবে।