টেকভিশন২৪ ডেস্ক: বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) টেলিযোগাযোগ খাতের লাইসেন্সিং কাঠামো ও নেটওয়ার্ক টপোলজি সংস্কারের লক্ষ্যে এক পরামর্শমূলক কর্মশালার আয়োজন করেছে। রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে দিনব্যাপী এই কর্মশালার সভাপতিত্ব করেন কমিশনের ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশনস বিভাগের কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইকবাল আহমেদ।
কর্মশালায় বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, মোবাইল অপারেটর, ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান, টেলিযোগাযোগ সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া বুয়েট, এমআইএসটি, নর্থ সাউথ ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন।
স্বাগত বক্তব্যে বিটিআরসি কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইকবাল আহমেদ বলেন, বর্তমান লাইসেন্সিং কাঠামো ও নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা অত্যন্ত জটিল। তাই এমন একটি কাঠামো গড়ে তোলা প্রয়োজন, যেখানে ডিজিটাল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো সহজে তাদের সেবা প্রদান করতে পারবে এবং নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারবে। তিনি আরও বলেন, নতুন কাঠামো হবে স্বচ্ছ, সহজলভ্য ও বৈষম্যহীন, যেখানে বহুমুখী সেবাপ্রদানের সুযোগ থাকবে।
কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীরা চারটি দলে বিভক্ত হয়ে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা ও সুপারিশ উপস্থাপন করেন:
১. নেটওয়ার্ক কাঠামো সংস্কার
২. গ্রাহক পর্যায়ে সেবা প্রদান
৩. জাতীয় পর্যায়ে সংযোগ ব্যবস্থা
৪. আন্তর্জাতিক সংযোগ ব্যবস্থা
নেটওয়ার্ক কাঠামো সংস্কার
গ্রুপ-১ আলোচনা করে বিনিয়োগকারীকে উৎসাহ প্রদান, সেবার নিরপেক্ষতা, একটিভ শেয়ারিং, ফাইভজি গাইডলাইন প্রণয়ন, মানসম্মত সেবা নিশ্চিতকরণ, লাইসেন্সধারীদের জবাবদিহিতা ও উন্মুক্ত বাজার প্রতিযোগিতার বিষয়গুলো।
গ্রাহক পর্যায়ে সেবা
গ্রুপ-২ আলোচনা করে সেবা ও তরঙ্গ লাইসেন্স পৃথক রাখা, লাইসেন্স উন্মুক্ত রাখা, ওটিটি ও ডিজিটাল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস, প্রযুক্তি নিরপেক্ষতা, সুস্থ বাজার প্রতিযোগিতা, ফাইভজি সেবায় মোবাইল ও ফিক্সড লাইসেন্স একীভূতকরণ এবং স্থানীয় শিল্পের সুরক্ষা।
জাতীয় সংযোগ ব্যবস্থা
গ্রুপ-৩ আলোচনা করে কারিগরি ও আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি, এনটিটিএন, টাওয়ারকো ও আইসিএক্স অপারেটরের লাইসেন্স সংখ্যা, উন্মুক্ত লাইসেন্সিং ব্যবস্থা এবং উন্মুক্ত বাজার নীতি চালুর বিষয়টি।
আন্তর্জাতিক সংযোগ ব্যবস্থা
গ্রুপ-৪ আলোচনায় উঠে আসে আন্তর্জাতিক লাইসেন্সিং প্রক্রিয়ায় স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের গুরুত্ব, স্থানীয় বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের অগ্রাধিকার, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সুস্থ প্রতিযোগিতা নিশ্চিতকরণ এবং অনায্য সুবিধা প্রদান রোধের বিষয়।
বিটিআরসি কমিশন নতুন কাঠামো বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক সর্বোত্তম অনুশীলন এবং দেশের বাস্তবতা বিবেচনায় নেবে বলে জানিয়েছেন।