মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৫, ২:১১ পূর্বাহ্ণ
28.4 C
Dhaka

বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগের জবাব দিল সরকার

টেকভিশন২৪ ডেস্ক: দেশের টেলিযোগাযোগ খাতে বিনিয়োগ ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নের স্বার্থে ৭০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডের নিলামে শর্তসাপেক্ষে ১০ শতাংশ পর্যন্ত মূল্যছাড়ের ইঙ্গিত দিয়েছে সরকার।সেইসঙ্গে স্পেকট্রামের দাম নির্ধারণের বেঞ্চমার্ক ডলারে হওয়াকে বাস্তবসম্মত বলা হয়েছে। ৭০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডে স্পেকট্রাম নিলামের মানদণ্ড নিয়ে দেশের টেলিযোগাযোগ খাতের বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীদের জানানো উদ্বেগের জবাবে বিভিন্ন বিষয়ের প্রেক্ষাপট ও ব্যাখ্যসহ এসব বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। মঙ্গলবার ২৫ মার্চ এই চিঠি পাঠিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, ‍যিনি ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন।

এর আগে ১৬ মার্চ গ্রামীণফোন, রবি ও বাংলালিংকের মূল বিনিয়োগকারীরা ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবের কাছে চিঠি দিয়েছিলেন।বিনিয়োগকারীদের কাছে পাঠানো ওই চিঠিতে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী বলেন, ৭০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডের ডিভাইস প্রবৃদ্ধির নিম্নহার বিবেচনায় রেখে সরকার ৫%–১০% মূল্যছাড়ের বিষয়টি যৌক্তিকভাবে বিবেচনা করতে পারে, যা নির্ভর করবে অপারেটরদের অবকাঠামো উন্নয়ন, নাগরিকদের জন্য মানসম্মত সেবা ও প্রতিযোগিতামূলক মূল্য নির্ধারণের প্রতিশ্রুতির উপর।

স্পেকট্রাম মূল্যে নিয়ে বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগের প্রসেঙ্গ তিনি উল্লেখ করেছেন, গত তিন বছরে বাংলাদেশী টাকা মার্কিন ডলারের বিপরীতে প্রায় ৪০% অবমূল্যায়িত হয়েছে। এই মুদ্রা অবমূল্যায়ন বিবেচনায় নেওয়ার পর বর্তমান স্পেকট্রাম মূল্যায়ন বাজার পরিস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ রয়েছে।‘বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ খাতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বিদেশি মালিকানা রয়েছে এবং বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সাধারণত তাদের মুনাফা মার্কিন ডলারে রেমিট্যান্স করে থাকে। ফলে, স্পেকট্রামের মূল্য নির্ধারণে ডলারভিত্তিক মূল্যায়নকে কার্যকর পদ্ধতি, যা মুদ্রা বিনিময় ঝুঁকি কমাবে এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখবে।’ বলেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।

চিঠিতে বলা হয়, অপারেটরদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে স্পেকট্রাম সরবরাহ করাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখে মন্ত্রণালয়। বর্তমানে ৪৫ (২x৪৫) মেগাহার্টজ ব্যান্ডের মধ্যে মাত্র ২৫ (২x২৫) মেগাহার্টজ নিলামে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার বিষয়ে যে উদ্বেগ রয়েছে, তাও সরকার গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছে। বাকি স্পেকট্রাম যথাসময়ে দেয়ার বিষয়ে তারা কাজ করছেন যেন, এটি প্রযুক্তিগত ও বাণিজ্যিকভাবে টেকসই হয়।

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ফোরজি ও ফাইভজি প্রযুক্তির বিস্তারে ৭০০ ব্যান্ড একটি প্রিমিয়াম ফ্রিকোয়েন্সি, যা প্রযুক্তিগত নিরপেক্ষতার সুবিধা দেয়। বৃহৎ কভারেজ পরিধি ও নিম্ন ফ্রিকোয়েন্সির কারণে এই ব্যান্ডটি ফোরজি, ফাইভজি এবং আইওটি নেটওয়ার্ক স্থাপনার জন্য অত্যন্ত কার্যকর।বর্তমানে, সামগ্রিক ফোরজি হ্যান্ডসেটের প্রায় ৫০% ডিভাইস ৭০০ ব্যান্ড সমর্থন করে। তবে এই সংখ্যা আরও বাড়াতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন একটি গুরুত্বপূর্ণ নীতি নিয়েছে। ফলে দেশীয় উৎপাদক এবং আমদানিকারকরা এখন থেকে এমন কোনো নতুন মোবাইল হ্যান্ডসেট বাজারে আনতে পারবে না, যা ৭০০ ব্যান্ড সমর্থন করে না।

তিনি আশা করেন, সরকারের এই উদ্যোগ আগামী কয়েক প্রান্তিকের মধ্যে ৭০০ ব্যান্ডে সমর্থিত ডিভাইসের প্রবৃদ্ধি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াবে, যা ভবিষ্যৎ ফাইভজি সম্প্রসারণ ও ডিজিটাল সংযোগ উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ‘বাংলাদেশে মোবাইল অপারেটরদের বিভিন্ন ফ্রিকোয়েন্সি ব্যান্ডের ব্যবহারের মধ্যে বৈষম্য রয়েছে। নিম্ন-ফ্রিকোয়েন্সি ব্যান্ডগুলোর ব্যবহার হার ৮৪%–৯৮%, যেখানে উচ্চ-ফ্রিকোয়েন্সি ব্যান্ডগুলোর ব্যবহার তুলনামূলকভাবে কম, মাত্র ৭%–১৮%। এই অসমতা নির্দেশ করে যে, উচ্চ-ফ্রিকোয়েন্সি ব্যান্ডগুলো ব্যবহারের মাধ্যমে নির্ধারিত এলাকায় সক্ষমতা বৃদ্ধির যে প্রত্যাশা ছিল, তা এখনো পূরণ হয়নি। এর অন্যতম কারণ, যথাযথভাবে বেজব্যান্ড ইউনিট এবং রেডিও রিসোর্স ইউনিট স্থাপনে ঘাটতি রয়েছে, ফলে ধারাবাহিক সক্ষমতা স্তর তৈরি হয়নি। এতে মানসম্মত সেবার ক্ষেত্রে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে। ফলে গ্রাহকরা নিম্নমানের সেবার পাচ্ছেন, যার মধ্যে ধীরগতির ইন্টারনেট, দুর্বল সংযোগের স্থায়িত্ব, মোবিলিটি ও কলড্রপের হার বৃদ্ধি উল্লেখযোগ্য।এছাড়া উচ্চমূল্যের ইন্টারনেট প্যাকেজের কারণে ইন্টারনেট ব্যবহারের হার বৃদ্ধির পথে বাধা তৈরি হয়েছে। উচ্চ-ফ্রিকোয়েন্সি ব্যান্ডগুলোর নিম্ন ব্যবহারের পরিপ্রেক্ষিতে অপারেটররা এখনও গ্রাহকদের জন্য উপযুক্ত মূল্যে ইন্টারনেট প্যাকেজ সরবরাহে আগ্রহ দেখায়নি। পাশাপাশি, জাতীয় ইন্টারনেট প্যাকেজের খুবই স্বল্প মেয়াদী ভ্যালিডিটি ব্যাপক সমালোচনা তৈরি করছে। এটি এমন একটি পরিকল্পিত দুষ্টচক্রের ইঙ্গিত দেয়, যেখানে অপারেটররা কৃত্রিমভাবে ইন্টারনেট ব্যবহারের প্রবৃদ্ধি সীমিত রেখে চলেছে।

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, জাতীয় সম্পদ হিসেবে স্পেকট্রামের কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করতে, নিরবচ্ছিন্ন ক্যাপাসিটি লেয়ার তৈরিতে বেজব্যান্ড ইউনিট এবং রেডিও রিসোর্স ইউনিট স্থাপন, ইন্টারনেট খরচ কমানো এবং ডিজিটাল বৈষম্য হ্রাসে সরকার এই খাতের সবার সঙ্গে কার্যকর আলোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।

এই সপ্তাহের জনপ্রিয়

ফেসবুক পেজ ও আউটলেটে বেবি কেয়ার এন্ড কমফোর্ট

টেকভিশন২৪ ডেস্কঃ শিশু প্রসাধনী এবং পণ্য যারা প্রতিনিয়ত খোঁজ করেন।...

আসল এবং নকল মোবাইল ফোন চেনার সহজ ৭ টি উপায়

টেকভিশন২৪ প্রতিবেদক: বর্তমানে মোবাইল ফোন বাজারে চলছে এক তুমুল...

বেসিস নির্বাচন পরিচালনায় নির্বাচন ও আপিল বোর্ড গঠন

টেকভিশন২৪ ডেস্ক: বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস...

সর্বশেষ

আইএসপিএবি নির্বাচনে ১৩ পদে লড়ছেন ২৪ প্রার্থী

টেকভিশন২৪ ডেস্ক: ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি)-এর...

ইনফিনিক্স নোট ৫০ সিরিজের এক্সপেরিয়েন্স ইভেন্ট অনুষ্ঠিত

টেকভিশন২৪ ডেস্ক: গ্লোবাল টেক ব্র্যান্ড ইনফিনিক্স তাদের নতুন নোট...

কোর্স ফি-তে বিকাশ পেমেন্টে ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট

টেকভিশন২৪ ডেস্ক: স্কুল-কলেজের পড়াশুনা থেকে শুরু করে চাকরির প্রস্তুতি,...

দেশের বাজারে এলো টেকনো ক্যামন ৪০ সিরিজ

টেকভিশন২৪ ডেস্ক: প্রি-অর্ডার পর্বে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে ব্যাপক...

এ সম্পর্কিত

spot_img

জনপ্রিয় ক্যাটাগরি

spot_img