টেকভিশন২৪ ডেস্ক: বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সার এবং ডিজিটাল উদ্যোক্তাদের জন্য দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষিত আন্তর্জাতিক লেনদেন গেটওয়ে ‘পেপ্যাল’ চালুর বিষয়ে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে। সোমবার (১ ডিসেম্বর) তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ, বাংলাদেশ ফ্রিল্যান্স কমিউনিটি এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কন্ট্রাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্কো) এর প্রতিনিধিদের সঙ্গে পেপ্যাল (দক্ষিণ এশিয়া ও সিঙ্গাপুর) দলের মধ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে অত্যন্ত ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে।
বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী। এতে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যবও উপস্থিত ছিলেন। পেপ্যালের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা সিঙ্গাপুর থেকে এসেছিলেন, যার মধ্যে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের কর্মকর্তাও ছিলেন। ফ্রিল্যান্স কমিউনিটির পক্ষ থেকে ১১ সদস্যের একটি দল বৈঠকে অংশগ্রহণ করে। উপস্থিত ফ্রিল্যান্সারদের মতে, বৈঠকটি ছিল অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ এবং গঠনমূলক। সরকার কোনও ধরনের হস্তক্ষেপ ছাড়াই ফ্রিল্যান্সারদের তাদের সমস্যা ও সম্ভাবনা সরাসরি পেপ্যাল প্রতিনিধিদের সামনে তুলে ধরার সুযোগ পায়।
বৈঠকে বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্স বাজার এবং পেপ্যালের ব্যবসায়িক সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করা হয়। ফ্রিল্যান্সার কাজী মামুন তার উপস্থাপনায় শুধুমাত্র মার্কেটপ্লেসভিত্তিক কাজ নয়, বরং এজেন্সি ব্যবসা, ই-কমার্স, ড্রপ শিপিং, সাস, প্লাগ-ইন ডেভেলপমেন্ট, গুগল অ্যাডসেন্স, অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েটসহ প্রযুক্তি শিল্পের প্রায় সব খাতের আয়ের চিত্র তুলে ধরেন।
এছাড়া, আন্তর্জাতিক পেমেন্ট ও রেমিট্যান্স ব্যবস্থা নিয়ে পেওনিয়ার, স্ট্রাইপ বা ওয়াইজ ব্যবহারের সুবিধা-অসুবিধা, মুদ্রা বিনিময় হার, অতিরিক্ত চার্জ এবং সময়ের অপচয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। ফ্রিল্যান্সাররা পেপ্যাল প্রতিনিধিদের বোঝাতে সক্ষম হন যে, বাংলাদেশে একটি নিরবচ্ছিন্ন আন্তর্জাতিক পেমেন্ট গেটওয়ে চালু করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
একজন ফ্রিল্যান্সার ও উদ্যোক্তা বলেন, ‘পেপ্যাল প্রতিনিধিদের মনোভাব খুবই ইতিবাচক ছিল। তারা বাংলাদেশের বাজারের বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়ে শুনেছেন এবং বিভিন্ন প্রশ্ন করে আরও জানার চেষ্টা করেছেন।’ লুৎফে সিদ্দিকী তার ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে বৈঠকটি সমন্বয় করেন।
জানা গেছে, পেপ্যাল প্রতিনিধিরা আগামী দুই থেকে তিন সপ্তাহ বাংলাদেশে অবস্থান করবেন। এই সময়ের মধ্যে তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, বিডার চেয়ারম্যান এবং একটি বেসরকারি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করবেন। এসব আলোচনার পর, তারা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। ফ্রিল্যান্সার কাজী মামুন আশা প্রকাশ করেন যে, পেপ্যাল বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করলে, ভবিষ্যতে স্ট্রাইপ ও ওয়াইজের মতো অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও তাদের কার্যক্রম শুরু করবে, যা বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতির জন্য একটি বড় মাইলফলক হতে পারে।


