টেকভিশন২৪ ডেস্ক: বাংলাদেশ শান্তিপূর্ণ ও অসামরিক মহাকাশ গবেষণায় সক্রিয় অংশগ্রহণের লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার ‘আর্টেমিস অ্যাকর্ডস’ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। এ চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো একটি বৈশ্বিক মহাকাশ সহযোগিতা কাঠামোর অংশ হলো।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) ঢাকায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রতিরক্ষা সচিব মো. আশরাফ উদ্দিন চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)–এর নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি অ্যাফেয়ারস ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন।
চুক্তি স্বাক্ষরের পর বিডা চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বলেন, “এই চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র মহাকাশ সহযোগিতায় নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করল। বাংলাদেশ এখন আরও গতিশীলভাবে মহাকাশ গবেষণায় কাজ করতে পারবে।”
প্রতিরক্ষা সচিব মো. আশরাফ উদ্দিন বলেন, “‘আর্টেমিস অ্যাকর্ডস’ হলো এমন একটি নির্দেশিকা যা আউটার স্পেস ট্রিটি, অ্যাস্ট্রোনট রেসকিউ এগ্রিমেন্ট ও রেজিস্ট্রেশন কনভেনশনের ভিত্তিতে তৈরি। এটি মহাকাশে শান্তিপূর্ণ, স্বচ্ছ ও টেকসই ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে।”
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ ১৯৮০ সালেই স্পারসো গঠন করে মহাকাশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে কাজ শুরু করে এবং আন্তর্জাতিক নীতিমালার আলোকে পরিচালিত হচ্ছে। আর্টেমিস চুক্তিতে স্বাক্ষরের মাধ্যমে বাংলাদেশ মহাকাশে দায়িত্বশীল অংশীদার হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিল।
এ পর্যন্ত আর্টেমিস অ্যাকর্ডসে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত, অস্ট্রেলিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিশ্বের ৫৩টি দেশ স্বাক্ষর করেছে। বাংলাদেশও এবার সেই মর্যাদাপূর্ণ গোষ্ঠীতে যুক্ত হলো।
চুক্তির মাধ্যমে নাসা ও স্পারসোর মধ্যে সহযোগিতার পথ খুলে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রতিরক্ষা সচিব। তিনি বলেন, “এটি প্রযুক্তি স্থানান্তর, অর্থনৈতিক সহায়তা ও যৌথ বৈজ্ঞানিক গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি করবে। পাশাপাশি, বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষকেরা আন্তর্জাতিক গবেষণা কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে পারবে এবং শিক্ষার্থীরা নাসার প্রশিক্ষণ, বৃত্তি ও এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম উপভোগ করতে পারবে।”
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উত্তর আমেরিকা উইংয়ের মহাপরিচালক ও চিফ অব প্রোটোকল এএফএম জাহিদ-উল-ইসলাম এবং স্পারসোর চেয়ারম্যান মো. রাশেদুল ইসলাম।
বাংলাদেশের এই পদক্ষেপ মহাকাশ খাতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করল, যা জাতীয় উন্নয়ন লক্ষ্য পূরণে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।