আইএসপিএবি এবং আইবিপিসি’র উদ্যোগে দুইটি ট্রেনিং প্রোগ্রাম

ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি) এবং আইবিপিসি এর যৌথ উদ্যোগে এ্যাডভান্স বিজেপি রাউটিং এন্ড আইএক্সপি এবং আরপিকেআই, ডিডিওএস এবং নেটওয়ার্কিং সিকিউরিটির (Advanced BGP Routing & IXP and RPKI, DDoS & Network Security) উপর দুইটি ট্রেনিং প্রোগ্রামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি) এবং আইবিপিসি এর যৌথ উদ্যোগে এ্যাডভান্স বিজেপি রাউটিং এন্ড আইএক্সপি এবং আরপিকেআই, ডিডিওএস এবং নেটওয়ার্কিং সিকিউরিটির (Advanced BGP Routing & IXP and RPKI, DDoS & Network Security) উপর দুইটি ট্রেনিং প্রোগ্রামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

টেকভিশন২৪ ডেস্ক: আইসপিএবির পক্ষ থেকে আপনাদের শুভেচ্ছা। ১০ আগস্ট ২০২৩ তারিখে রোজ বৃহস্পতিবার, সকাল ১২:০০ ঘটিকায় ‘হোটেল সারিনা, বনানী, ঢাকায়, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি) এবং আইবিপিসি এর যৌথ উদ্যোগে এ্যাডভান্স বিজেপি রাউটিং এন্ড আইএক্সপি এবং আরপিকেআই, ডিডিওএস এবং নেটওয়ার্কিং সিকিউরিটির (Advanced BGP Routing & IXP and RPKI, DDoS & Network Security) উপর দুইটি ট্রেনিং প্রোগ্রামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।  

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মোস্তাফা জব্বার, মন্ত্রী, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মোঃ আব্দুর রহিম খান, কো-অর্ডিনেটর, বিপিসি ও অতিরিক্ত সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ও বিটিআরসির মহাপরিচালক জনাব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ এহসানুল কবীর, এএফডব্লিউসি, পিএসসি, এমফিল এবং সভাপতিত্ব করেন আইএসপিএবি’র প্রেসিডেন্ট মোঃ ইমদাদুল হক।

প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন-আগস্ট মাস হচ্ছে শোকের মাস। এই শোকের মাসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি বলেন মানুষ যদি যন্ত্রের পিছনে না থাকে তাহলে সে যন্ত্র অকেজো। এই প্রশিক্ষণের প্রশিক্ষার্থীরা যখনই প্রশিক্ষণ থেকে জ্ঞান নিয়ে যন্ত্র চালনায় পারদর্শী হবে, তখনই কেবল যন্ত্র সচল থাকবে। তিনি বলেন সার্টিফিকেট দিয়ে জ্ঞান অর্জন করা যায় না, কেবল প্রশিক্ষণ এবং হাতে-কলমে কাজ করার মাধ্যমেই প্রকৃত শিক্ষা অর্জন করা যায়। প্রযুক্তি পরিবর্তনশীল। মানুষকে শুধু এই পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে হবে। তিনি ডিজিটালকে স্মার্টে পরিণত করার জন্য সকলকে আহ্বান জানান আর তার জন্য সর্বাগ্রে দরকার ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট কানেক্টিভিটি।  তিনি বলেন এখন শহর থেকে গ্রাম, গ্রাম থেকে অজপাড়া গায়ে, এমনকি হাওর বাওরে এখন ইন্টারনেট সংযোগ বিদ্যমান। তিনি ব্রডবান্ড সেবাকে ইন্টারনেটের মূল কানেক্টিভিটি হিসাবে বিবেচনা করে এই শিল্পের সাথে সকলকে এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জ্ঞান অর্জন করে নিজের কর্ম ক্ষেত্রে প্রয়োগের জন্য শিক্ষার্থীদের উপদেশ দেন। আইএসপিএবি’র পক্ষ থেকে দুটি দাবি বিশেষ করে অ্যাক্টিভ শেয়ারিং এবং আইএসপি ইন্ডাস্ট্রিকে আইটিইএসের অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টির ব্যাপারে তার প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেন। এবং তার প্রচেষ্টা অভ্যাহত থাকবে বলে জানান। তিনি আরো জানান যে, আইপিভি-৪ চিন্তা বাদ দিয়ে এখন আইপিভি-৬ এর উপরে জোর দেওয়ার জন্য বলেন এবং সেই সাথে নেটওয়ার্ক সিকিউরিটির বিষয়টি ভালোভাবে রপ্ত করার জন্য শিক্ষার্থীদের অনুরোধ জানান। এই বিষয়ে তিনি আইবিপিসি ও আইএসপিএবি কর্তৃক গৃহীত এওয়ারনেস প্রোগ্রামের প্রশংসা করেন। বারবার ডিও লেটার দেয়ার পরও আইএসপিএবি-কে আইটিইএস এর অন্তর্ভূক্ত না দেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বের সিদ্ধান্ত হওয়ার পরও এটা বাস্তবায়িত হয়নি। তাই আইএসপিএবি সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে সব ধরনের তদবির করুন। আমি আপনাদের সঙ্গেই লড়াই করবো।  

বিশেষ অতিথি হিসেবে বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের  অতিরিক্ত সচিব, আব্দুর রহিম খান বলেন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা রাষ্ট্রর নিরাপত্তা এখন আর অস্ত্রের ওপর নয়; নেটওয়ার্কের সুরক্ষার ওপরই নির্ভর করে । তিনি ,ট্রেনিং ল্যাব স্থাপনে বিপিসিকে সহযোগী হিসেবে রাখার মাধ্যমে আইএসপিএবি আমাদের ভালো কাজের সুযোগ করে দিয়েছে। তাই আগামীতেও বিভিন্ন বিভাগে নিক্স এর পপ তৈরিতে সাধ্য মতো সহযোগিতা করবো। এ বছরের মধ্যেই তিন বিভাগে নিক্স স্থাপনে সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন। 

দেশে ইন্টারনেটের ব্যবহার বছরে ৩৫ শতাংশ হারে বাড়ছে উল্লেখ করে বিটিআরসি’র মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এহসানুল কবির বলেন, ২০২৩ সালে দেশে ইন্টারনেটের ব্যবহার হবে ৬০০০ জিবিপিএস। ২৫ সাল নাগাদ প্রয়োজন হবে সাড়ে ৮ হাজার এবং ৩০ সালের মধ্যে ১৯ হাজার জিবিপিএস। আপনারাই এই ব্যান্ডউইথ রাটিং করেন। তাই তাদের দক্ষতা উন্নয়নে এ ধরণের প্রশিক্ষণ চালিয়ে যাবে বলে আশা করি। ‘ইন্টারনেট এখন ষষ্ঠ মৌলিক চাহিদামন্তব্য করে তিনি বলেন, দেশের এখন ১০ শতাংশই আইপিভি ৬। ২০১৯ সালে অ্যাক্টিভ শেয়ারিং ইস্যুটি স্থগিত হয়েছিলো। সেই স্থহিতাদেশ এখন নেই। এটি নিয়ে কাজ হচ্ছে। শিগগিরই বাস্তাবায়িত হবে। এবং আইএসপিএবির বিভাগীয় শহরে নিক্স স্থাপন ও প্রসারের জন্য বিটিআরসি হতে পূর্ণ সহযোগীতা অব্যাহত থাকবে।

সভাপতি মো: ইমদাদুল হক তার ভাষণে মন্ত্রী মহোদয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন ২০০৮ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষণা এবং পরবর্তীতে ২০২২ সালে স্মার্ট বাংলাদেশের ঘোষণা একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসাবে উল্লেখ করে। আইএসপি লাইসেন্সধারীদের লাইসেন্সের আপগ্রেডেশন সহ পৃথিবীর অন্যান্য দেশের ন্যায় আমাদের দেশেও একটিভ শেয়ারিং চালু করার দাবি জানান এবং আমাদের দেশের টেলিকম সেক্টরে এক্টিভ শেয়ারিং করা গেলে, আইএসপি ইন্ডাস্ট্রির জন্য কেন করা যাবে না- এই প্রশ্ন তুলে ধরেন। তিনি আরো বলেন বিটিআরসির মহাপরিচালক, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশনের কাছ থেকে আমরা সবসময়ই বিভিন্ন সার্ভিস সংক্রান্ত সমস্যা হলে সব ধরনের সহায়তা পেয়ে থাকি। তিনি প্রশিক্ষনার্থীদের কে যথাযথ প্রশিক্ষণ নিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার জন্য প্রস্তুত হতে বলেন।  তিনি বিভাগীয় অঞ্চল খুলনায় ও চট্টগ্রাম বিভাগে ইন্টারনেট এক্সচেঞ্জ এর নতুন পপ স্থাপন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরেন। আগামী ডিসেম্বরে আরো দুটি পপ স্থাপনের আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি অবৈধ ইন্টারনেট ব্যবসা বন্ধ করা, এক্টিভ শেয়ারিং এর মাধ্যমে ইন্টারনেট কানেক্টিভিটি উন্নত ও সমৃদ্ধ করার জন্য বিটিআরসির সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি আইএসপিএবি’র অফিসের জন্য ফ্লাট ক্রয় সম্বন্ধে অবগত করেন ও প্রশিক্ষণের ভেন্যু আগামীতে নিজস্ব ভেনুতে করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

স্বাগত বক্তব্য দেন আইএসপিএবি সাধারণ সম্পাদক নাজমুল করিম ভূঁইয়া। তিনি তার বক্তব্যে  লাইসেন্স আপডেটে ও একক্টিভ শেয়ারিং প্রদান করার জন্য জোর দাবি ব্যক্ত করেন। তাছাড়া আইপিভিসিক্ম সরকারী সবওেয়ভসাইডে  স্থাপন করার উদ্যোগ গ্রহন করলে এটি অতি দ্রুত ফলপ্রসু হবে। প্রধানমন্ত্রী নির্দশনা অনুযায়ী আইএসপি সেক্টরকে  আইটিইএস এ বাস্তবায়নের জন্য সহযোগীতা কামনা করেন।

অনুষ্ঠানের শেষ অংশে আগত অতিথিদের মাঝে ক্রেস্ট বিতরণ করা হয়।

এই প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামে আইএসপি, আইআইজি, ব্যাংক, টেলকো  বাণিজ্য মন্ত্রনালয়, বিটিআরসি সহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৮০ জন নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার অংশগ্রহণ করেছেন।  প্রশিক্ষণ ওয়ার্কশপে যোগদানের মাধ্যমে নিজেদেরকে বিষয় ভিত্তিক দক্ষ ইন্টারনেট ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করার সুযোগ পাবে, যা ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

তিন দিনব্যাপী এই কর্মশালায় প্রশিক্ষক থাকছেন আর্ন্তজাতিক ট্রেনিং বিশেষজ্ঞ অ্যাপনিক ডেভিড মিচেল পালান, মো. আব্দুল আউয়াল, মো. আব্দুল্লাহ আল নাছের ও কাজী শামসাদ তাহমিদ। কর্মশালার মাধ্যমে অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি আইসিটি সেক্টরের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে এবং নিরাপদে তথ্যপ্রযুক্তি সেবা প্রান্তিক মানুষের নিকট সহজেই পৌঁছে দেয়ার মাধ্যমে র্স্মাট বাংলাদেশ বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে যাবে। ১২ আগস্ট ২০২২ তারিখে সকল প্রশিক্ষনার্থীদের মাঝে সার্টিফিকেট  বিতরনের মধ্য দিয়ে এই প্রশিক্ষণের সমাপ্তি ।

উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন