টিভি প্রতিবেদক: সরকারের মাইগভ প্ল্যাটফর্মের আওতায় র্যাপিড ডিজিটাইজেশন কার্যক্রমের মাধ্যমে আজ 0৮ নভেম্বর ২০২০ তারিখ অনলাইনে আয়োজিত এক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং এর আওতাধীন সংস্থাসমূহের ১৬২টি ডিজিটাল সেবার উদ্বোধন করা হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক, এমপি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মাইগভ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং এর আওতাধীন সংস্থাসমূহের রূপান্তরিত ডিজিটাল সেবাসমূহের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন। এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, এমপি; বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম, এমপি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, পিএএ। পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার-এর সভাপতিত্বে এটুআই-এর চীফ টেকনোলজি অফিসার মোহাম্মদ আরফে এলাহী ‘পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সেবাসমূহকে মাইগভের আওতায় র্যাপিড ডিজিটাইজেশন কার্যক্রম সম্পর্কিত’ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং এর আওতাধীন সংস্থাসমূহের সেবাগুলো ডিজিটাইজেশনের ফলে পানি সম্পদ সংশ্লিষ্ট সেবাগ্রহীতাগণ যেমন: শিক্ষার্থী-গবেষক, সাংবাদিক, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সকলে খুব সহজেই ডিজিটাল পদ্ধতিতে সেবার আবেদন, সেবা সংশ্লিষ্ট পেমেন্ট, সেবার অগ্রগতি, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কার্যক্রম মাইগভ ওয়েব, মাইগভ অ্যাপ, ৩৩৩ কলসেন্টারে কল করে অথবা ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে সম্পাদন করতে পারবেন। এই প্ল্যাটফর্ম থেকে সেবাগ্রহীতাগণ সকল সেবার সকল ধরনের তথ্য পাবেন এবং উক্ত সেবার আবেদনের অগ্রগতিও ট্র্যাক করতে পারবেন। অপরদিকে সেবা প্রদানকারী কর্মকর্তাগণও একক জায়গা থেকে সকল সেবা প্রদান করতে পারবেন।
এর ফলে সেবাগ্রহীতা ও প্রদানকারী উভয়ের সময় ও অর্থের অপচয় কমে আসবে, যা শুধুমাত্র পানি সম্পদ খাত নয়, সমগ্র বাংলাদেশের ডিজিটাল অগ্রযাত্রার পথে এক যুগান্তকারী মাইলফলক। ‘মাইগভ’-এর মাধ্যমে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ৩৩টি এবং এর আওতাধীন সংস্থাসমূহের ১২৯টি সেবাসহ মোট ১৬২টি সেবা ডিজিটাল সেবায় রূপান্তর করা হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেন, নাগরিকদের জীবনমান সহজ ও আরামদায়ক করার লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এরই লক্ষ্যে এই ডিজিটাল সেবাগুলোর শুভযাত্রা। আমরা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোতে আমাদের কর্মপরিধি আরো বাড়াতে চাই। ইতোমধ্যে সরকারের বিভিন্ন সেবা ডিজিটাইজেশনের ফলে মানুষের ভোগান্তি অনেক কমেছে। এছাড়া মানুষের মধ্যে সচেতনতাও বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের আরো আন্তরিক হতে হবে। কেননা, সেবার মাধ্যমেই মানুষ আমাদের অবস্থান ও কাজের মূল্যায়ন করবে। এভাবেই আমরা ২০২১ সালে স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তীতে আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য পরিপূর্ণ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারবো।
প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ২০০৮ সালে যখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনী ইশতেহারের আলোকে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের কাজ শুরু করি, তখন আমাদের ওয়ার্ল্ড ই-গভর্নেন্স র্যাংকিং ছিল ১৬২। মাত্র হাতেগোনা কয়েকটি ওয়েবসাইট ছাড়া আমাদের কোন মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন বা ডাটাসেন্টার ছিল না, ঢাকার বাইরে কোন ব্রডব্যান্ড সংযোগ ছিল না। বর্তমানে আমাদের সেই অবস্থান থেকে ৪৩ ভাগ অগ্রগতি হয়েছে।
২০০৮ সালে বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ছিল মাত্র ৫৬ লাখ এখন সেটা ১১ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। এসময় তিনি প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব আহমেদ জয়-এর পরিকল্পনা ও নির্দেশনার আলোকে অদম্য গতিতে বাংলাদেশের ডিজিটাল অগ্রযাত্রার কথা তুলে ধরে ২৮০০ সরকারি সেবার ডিজিটাইজেশনের পরিকল্পনার কথা বলেন এবং এরই মধ্যে আজকের ১৬২টি সেবার মধ্য দিয়ে সর্বমোট ১৪০৯টি সেবা ডিজিটাইজেশনের পরিসংখ্যান তুলে ধরেন। তিনি আরো বলেন, অচিরেই আমরা ২০০০ সেবাকে ডিজিটাইজেশনের আওতায় নিয়ে আসবো।
উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম, এমপি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা মানুষের দোরগোড়ায় সেবা প্রদানের লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী সবসময়ই আগামী প্রজন্মের জন্য ভাবেন। আগামী প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় নাগরিকদের জীবনযাত্রাকে আরো সহজ করার লক্ষ্যে এই অনলাইন সেবাগুলোর যাত্রা।
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মোঃ আজাদুর রহমান মল্লিক-এর সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে এটুআই-এর প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. মো. আব্দুল মান্নান, পিএএ; এটুআই-এর যুগ্ম-প্রকল্প পরিচালক ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্মসচিব (ই-গভর্নেন্স) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর, এটুআই-এর যুগ্ম-প্রকল্প পরিচালক জনাব সেলিনা পারভেজ, এটুআই-এর পলিসি অ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরীসহ পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, এটুআই-এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ এবং গণমাধ্যমকর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন।