যুক্তরাষ্ট্রের মোবাইল অপারেটর প্রতিষ্ঠান এটিএন্ডটি বড় ধরনের হ্যাকিং-এর শিকার হয়েছে। গতকাল শুক্রবার প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে হ্যাকিংয়ের কারণে প্রায় ১০৯ মিলিয়ন গ্রাহক অ্যাকাউন্টের কল ও টেক্সট মেসেজ সম্পর্কিত রেকর্ড চুরি হয়ে গেছে। তবে কল ও টেক্সট মেসেজ এর কন্টেন্ট সুরক্ষিত আছে বলে জানিয়েছি তারা। খবর আইটিভি।
এটিএন্ডটি-এর মতো প্রতিষ্ঠানের এতো বড় ‘ডেটা ব্রিচ’ হওয়ার ঘটনাটিকে গুরুত্বের সাথে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই ইতোমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে এবং জড়িত সন্দেহে অন্তত একজন ব্যক্তিকে আটকও করেছে।
হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে হ্যাকার এটিএন্ডটি-এর ওয়ার্কস্পেস থেকে প্রতিষ্ঠানটির কল লগ একটি থার্ড-পার্টি ক্লাউড প্ল্যাটফর্মে কপি করে নেয়। এই সাইবার অ্যাটাকের বিষয়টি প্রথম এটিএন্ডটি-এর নজরে আসে গত এপ্রিলের ১৯ তারিখে, যখন হ্যাকারের পক্ষ থেকে বেআইনিভাবে ডেটা অ্যাকসেস ও চুরি করার বিষয়টি দাবী করা হয়।
অবৈধভাবে ডাউনলোড করে নেয়া ডেটার মধ্যে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির সেলুলার ও ল্যান্ডলাইন সার্ভিসের প্রায় সকল কাস্টমারের ২০২২ সালের মে থেকে অক্টোবর পর্যন্ত সময়ের কল ও টেক্সট মেসেজ রেকর্ড। অর্থাৎ, এই ছয় মাসে এটিএন্ডটি-এর কাস্টমাররা কাকে কল করেছে এবং কাকে টেক্সট মেসেজ পাঠিয়েছে- এই সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য চুরি করে নিয়েছে হ্যাকার। তবে এই কলগুলোর কথোপকথনের রেকর্ড এবং টেক্সট মেসেজের যাবতীয় কন্টেন্ট সুরক্ষিত রয়েছে।
এছাড়া ২০২৩ সালের ২ জানুয়ারি তারিখের কিছু কাস্টমারের একই ধরনের ডেটাও চুরি হয়েছে বলে জানিয়েছে এটিএন্ডটি।
সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে বেশ কয়েকটি বড় ধরনের হ্যাকিং-এর ঘটনায় গ্রাহক তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়টি বেশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠেছে কর্তৃপক্ষের জন্য। গত ফেব্রুয়ারিতে ইউনাইটেডহেলথ গ্রুপের চেঞ্জ হেলথকেয়ার ইউনিটে র্যান্সমওয়্যার অ্যাটাকের (সাইবার আক্রমণ) ঘটনায় দেশটির এক-তৃতীয়াংশে সাধারণ মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য বেহাত হওয়ার ঝুঁকির মধ্যে পড়ে।
গত এক দশকে যুক্তরাষ্ট্রে বেশ কয়েকটি বড় সাইবার হামলার ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ২০১৮ সালে ম্যারিয়ট হোটেল ডেটা ব্রিচ, ২০১৪ সালের ইয়াহু অ্যাটাক এবং ২০১৩ সালের অ্যাডব সাইবার অ্যাটাক।
তবে শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই নয়, সাইবার অ্যাটাক বিশ্বজুড়েই উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে সাম্প্রতিক সময়ে। এতে করে সাধারণ মানুষের ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা যেমন হুমকির মুখে পড়েছে তেমনি দেশের জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়েও বড় ধরণের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় আমরা প্রতিনিয়ত এগিয়ে যাচ্ছি ঠিকই, কিন্তু প্রযুক্তির নিয়ন্ত্রিত ও নিয়মতান্ত্রিক ব্যবহার যে কতটা জরুরি সেটাই যেন আমাদেরকে মনে করিয়ে দিয়ে যায় সাইবার হামলার মতো ঘটনাগুলো।