টেকভিশন২৪ ডেস্ক: স্যাটেলাইট ভিত্তিক ইন্টারনেট নীতিমালা সম্পর্কে গণশুনানির আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন। আজ সংগঠনের সভাপতি স্বাক্ষরিত বিটিআরসির নিকট সংগঠনের পক্ষ থেকে মতামত তুলে ধরা হয়। মতামতে গ্রাহকের সাধ্য সামর্থ্য এবং সামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে পাশাপাশি রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, ব্যক্তিগত তথ্য নিরাপত্তা সম্পর্কিত অধিকতর মতামত গ্রহণের জন্য একটি গণশুনানির আয়োজনের প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রস্তাবে বলা হয়, স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা ও নতুন নতুন প্রযুক্তিগত সেবাকে আমরা সবসময় আমন্ত্রণ জানাই। তবে তা যদি হয় নাগরিকদের কল্যাণার্থে এবং গ্রাহকদের সাধ্য সামর্থ্য ও সামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে। একই সাথে রাষ্ট্রের স্বার্থ ও নিরাপত্তা যদি অক্ষুন্ন থাকে। বাংলাদেশে যদিও ১৩ কোটি ২০ লক্ষ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী কিন্তু বাস্তবতার চাইতেও কম। অর্থাৎ বিভিন্ন পরিসংখ্যান মতে দেশে এখনো ৫০ শতাংশ জনগোষ্ঠী ইন্টারনেট ব্যবহারের বাইরে রয়েছে। অর্থাৎ ইন্টারনেট ব্যবহারে একটি বৈষম্য বিদ্যমান রয়েছে।
এই বৈষম্য নিরসন করতে বাংলাদেশে এই প্রথম স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা সম্পর্কিত আমাদের মতামত নিম্নরূপ:
১. সামাজিক অর্থনৈতিক ও পারিপার্শ্বিক বিশেষ করে গ্রাহকের সাধ্য ও সামর্থ্য বিবেচনা করে স্যাটেলাইটভিত্তিক ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের মূল্য নির্ধারণ করতে হবে। এবং প্রতিটা সংযোগ থেকে ইন্টারনেট শেয়ারিং অর্থাৎ গ্রাহক থেকে গ্রাহক কতজন হবে বা কি পরিমান হবে তাস সুস্পষ্ট উল্লেখ করতে হবে।
২. বাংলাদেশে এখনো নাগরিকের ডাটা সুরক্ষা আইন প্রণয়ন হয়নি। তাই নাগরিকের ডাটা সুরক্ষায় কি ব্যবস্থা বিদ্যমান থাকবে তা জনস্বার্থে জাতীয়ভাবে কমিশন ও স্টারলিংক স্যাটেলাইট কোম্পানিকে ঘোষণা করতে হবে।
৩. এই নীতিমালায় চাহিবা মাত্র গ্রাহকের তথ্যে সরকারি গোয়েন্দা সংস্থা এবং কমিশনকে প্রবেশ অধিকার চাওয়া হয়েছে যা সম্পূর্ণভাবেই সংবিধান পরিপন্থী বলে আমরা মনে করছি। তবে রাষ্ট্র ও প্রচলিত আদালত এবং আইন-শৃঙ্খলার স্বার্থে কেবলমাত্র আদালতের নির্দেশিত ব্যক্তির ডাটায় প্রবেশ করতে পারবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা বিটিআরসি অন্যথায় নয়।
৪. ডিটিএইচ সেবা সম্পুর্ন বিটিআরসির নিয়ন্ত্রণাধীন হতে হবে। সেই সাথে বাংলাদেশে বর্তমানে ডিটিএইচ সেবা সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে হবে।
৫. প্রস্তাবিত নীতিমালা সম্পর্কে একটি গণশুনানির অনুষ্ঠান আয়োজন আবশ্যক। বাংলাদেশে এলএনজি আমদানির প্রাক্কালে নীতিমালা প্রণয়ন ও মূল্য নির্ধারণের জন্য বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন একটি গণশুনানি আয়োজন করেছিল।
সেই সাথে আমাদের দেশীয় নিয়ম-নীতি ও দেশীয় উদ্যোক্তারা যাতে কোনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেই বিষয়টি সামনে রেখে নীতিমালা প্রণয়ন করা হোক। আবার এটিও লক্ষ্য রাখতে হবে এই নীতিমালায় বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতা ইতিমধ্যে বিদ্যমান রয়েছে যার ফলে স্যাটেলাইটভিত্তিক প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগে আগ্রহ হারাতে পারে। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় নিয়ে নীতিমালা সংশোধনের প্রয়োজন রয়েছে।