ই-কমার্স দিবসে মানুষের পাশে থাকার অঙ্গীকার ই-ক্যাবের

0
122

অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ই-ক্যবের সামাজিক সহযোগিতা প্লাটফরম মানবসেবা ডট কম (Manobsheba.com) উদ্ধোধন করা হয়।


আজ দুপুর ১টায় ই-কমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ই-ক্যাবের উদ্যোগে ৭ এপ্রিল ই-কমার্স দিবস উপলক্ষ্যে একটি অনলাইন আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশগ্রহণ করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এমপি, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার,  আইসিটি সচিব এন এম জিয়াউল আলম, ডব্লিইটিও সেলের পরিচালক জনাব হাফিজুর রহমান,  ডাক বিভাগের মহাপরিচালক সুধাংশু শেখর ভদ্র,  এটুআই এর পলিসি এডভাইজার আনির চৌধুরী, একশপের টিম লিডার রেজওয়ানুল হক জামি ও ই-ক্যাবের সভাপতি শমী কায়সার।

আলোচনা সভায় বক্তারা এই সময়ে ব্যবসার চেয়ে দেশের মানুষের সমস্যা ও তাদের পাশে বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। ই-ক্যাবের পক্ষ থেকে ই-কমার্স দিবসের প্রতিপাদ্য ‘‘মানবসেবায় ই-কমার্সের ডাক‘’ স্লোগানকে সামনে কাজ করার অঙ্গীকার করা হয়, এভাবে মধ্যে দিয়ে অনলাইন আলোচনায় মধ্য দিয়ে ই-কমার্স দিবস পালিত হয়।  ই-ক্যাবের পক্ষ থেকে উদ্ভোধন করা হয় একটি মানবিক সেবামূলক পদক্ষেপ মানবসেবা ডট কম। আলোচনা সমন্বয় করেন ই-ক্যাবের সেক্রেটারী জেনারেল মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহেদ তমাল। সভাপতিত্ব করেন সাবেক সচিব নজরুল ইসলাম খান। 

বাণিজ্য মন্ত্রী বলেন, এই সময়ে ই-কমার্স লেনদেন তুলনামূলক নিরাপদ। কারণ ১০০ মানুষ ঘর থেকে বের হওয়ার পরিবর্তে যদি একজন তাদের জরুরী পণ্য ঘরে পৌছে দিতে পারে এটা একটা ভালো দিক। করোনার এই সময়ে ই-কমার্স বিস্তৃত হয়ে সাধারণ মানুষের পর্যায়ে সেবা দিচ্ছে এটা একটা বড় সহযোগিতা। সরকার এবং বানিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে আমরা এই সেবাদাতাদের পাশে থাকব।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যখন ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নের রুপরেখা প্রকাশ করেন, তখন অনেকে কাছে এটা হাস্যকর মনে হয়েছে। কিন্তু সময়ের সাথে প্রমাণ হয়েছে ডিজিটাল প্রযুক্তি সেবার বাস্তবতা। করোনা পরিস্থিতি আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল যে আজকের দুনিয়ায় ডিজিটাল সেবা কতটা অপরিহার্য, যেখানে চাল ডাল তেল নুন পর্যন্ত লোকেরা অনলাইন থেকে কেনাকাটা করছে সেখানে আর এই বিষয়ে বলার অপেক্ষা রাখেনা। বর্তমান সময়ে যখন সবকিছু বন্ধ হয়েছে তখন ই-কমার্স এবং ইন্টারনেট সেবা দেশের লাইফ লাইনে পরিণত হয়েছে। তিনি এত অল্প সময়ের মধ্যে ই-ক্যাবের বিস্তৃতি ও সক্ষমতা অর্জনের প্রশংসা করেন। 

বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল এর কো-অডিনেটর জনাব শফিক জামান বলেন, বাংলাদেশের মানুষের কাছে এই সময়ে ই-কমার্স একটা স্বস্তির নাম। একসময়ে আমরা শুধু বিলাসীপন্য ক্রয় করলেও এখন আমরা তেল নুন ডাল এসব ই-কমার্স থেকে কিনতে পারছি। বাংলাদেশে বর্তমান যে চাহিদা ও কাঠামো আছে এটা দিয়েও ব্যাপক মানুষের কাছে সেবা পৌছে দেয়া সম্ভব। প্রয়োজনে এই সাপ্লাইচেইনকে আরো বিস্তৃত ও সুসজ্জিত করা যেতে পারে।

হাফিজুর রহমান বলেন, আজকের এই বিপদের দিনে আমরা যে ই-কমার্সের সেবা পাচ্ছি সেজন্য অনেক লম্বা একটা যাত্রা পার হয়ে আসতে হয়েছে। এজন্য বানিজ্য মন্ত্রণালয় ই-ক্যাবের সাথে মিলে ডিজিটাল কমার্স নীতিমালা প্রণয়ন করেছে, ১৪০০ নবীণ উদ্যোক্তাকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। ৫ হাজার লোকের প্রশিক্ষণ চালু রয়েছে যা অনলাইনে আয়োজনের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। এই সময়ে কি পরিমাণ লজিস্টিক সেবা চলছে তা জানার জন্য একটি লজিস্টিক ডেটাবেজ ইতোমধ্যে ই-ক্যাবের মাধ্যমে তৈরী করা হয়েছে। এছাড়া লজিস্টিক সেবাদাতা কর্মীদের চলাচলের সুবিধার জন্য লিখিত অনুমতি দিয়ে তার কপি সকল ডিসি ও এসপি অফিসে প্রেরণ করা করা হয়েছে।

আনির চৌধুরী বলেন, গত ৫ বছরে ই-ক্যাবের সহায়তায় ই-কমার্স যেভাবে এগিয়েছে তা চোখে পড়ার মতো, সম্ভবত সবচেয়ে দ্রুত গতিতে এই সেক্টর বিকাশ লাভ করেছে।  এই বিপদের সময় ই-কমার্স উদ্যোক্তারা সেবা দিয়ে যেভাবে মানুষের পাশে দাড়িয়েছে তা অভাবনীয়। এই সেবাকে আরো সহজ নিরাপদ ও বিস্তৃত করার জন্য সকলকে এগিয়ে আসা উচিত। 

ই-ক্যাবের সভাপতি শমী কায়সার বলেন, এই দূর্যোগপূর্ণ সময়ে ই-ক্যাবের সদস্যদের নিয়ে জনগনের পাশে রয়েছে ই-ক্যাব। ই-ক্যাবের পক্ষ থেকে আমরা এই সময়ে ব্যবসাকে প্রাধান্য না দিয়ে মানুষের সেবাকে প্রাধান্য দিয়েছি। করোনা পরিস্থিতিতে ই-ক্যাবের সদস্যদের মাঝে একটি ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কিত জরিপ চালানোর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রায় কয়েক হাজার কোটি টাকার ব্যবসায়িক ক্ষতির মধ্যে পড়েও ই-ক্যাবের কর্মীরা প্রতিদিন ৪০ হাজার পরিবারের কাছে জরুরী নিত্যপণ্য পৌঁছে দিচ্ছে এবং এর পরিসর ক্রমশ বেড়ে চলেছে। তিনি এই সময়ে ই-ক্যাব সদস্য কোম্পানীগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান বিশেষ করে যারা তাদের সেবা অব্যাহত রেখেছে।

 ভিডিও কনফ্যারেন্স

আব্দুল ওয়াহেদ তমাল বলেন, এই জরুরী পরিস্থিতিতে ই-ক্যাব মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। ই-ক্যাবের পক্ষ থেকে মানবসেবা নামে একটি প্লাটফরর্ম তৈরী করা হয়েছে। যার মাধ্যমে দরিদ্র ও দিন এনে দিন খাওয়া মানুষদের পাশে দাড়াচ্ছে ই-ক্যাব। এই জরুরী মুহুর্তে বিভাগীয় কমিশনার, বানিজ্য মন্ত্রণালয় এটুআইসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের সাথে যোগাযোগ করে লজিস্টিক ও জরুরী পন্যসেবা দেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য অনুমতি নিয়ে তাদের সেবা অব্যাহত রাখার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল এর কো-অডিনেটর শফিক জামান বক্তব্য রাখেন।

বাক্যোর সভাপতি ওয়াহিদুর রহমান শরীফ, ই-ক্যাবের পরিচালনা পরিষদের সদস্যদের মধ্যে মোহাম্মদ আব্দুল হক অনু, আশীষ চক্রবর্তী, সাহাব উদ্দীন শিপন, নাসিমা আকতার নিশা, সাইদ রহমান ও আসিফ আহনাফ,  আলোচনায় অংশ নেন।

টেকইকম ডেক্স

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here