টেকভিশন২৪ ডেস্ক: স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহী করে তোলার লক্ষ্যে প্রতিবছরের মত এবারো শুরু হল বাংলাদেশ জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াড (বিডিজেএসও)। গত ৯ আগস্ট খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে পর্দা উঠলো আল – আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক ১১ তম বাংলাদেশ জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াড (বিডিজেএসও ২০২৫) এর আঞ্চলিক পর্বের। আজ পৃথক দুটি আয়োজনে অংশগ্রহণ করে খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের সহস্রাধিক শিক্ষার্থী।
এর আগে গত ৬ আগস্ট অনলাইনে বাছাই অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই পর্বের উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা যার যার জন্য নির্ধারিত আঞ্চলিক অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ করবে। এরই প্রেক্ষিতে খুলনা ও রাজশাহী অঞ্চলের অনলাইন বাছাইয়ে উত্তীর্ণদের নিয়ে দুইটি পৃথক আয়োজনে অনুষ্ঠিত হল এই আসরের প্রথম আঞ্চলিক বাছাই পর্ব। সারাদেশের ৫০টিরও বেশি জেলা শহরের শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরাসরি প্রচারণা ও প্রস্তুতি কর্মশালার আয়োজন করা হয়। অনলাইন ও অফলাইন মিলিয়ে মোট ১৭,০০০-এর বেশি শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণের মাধ্যমে রেকর্ড সংখ্যক নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে, যা বিডিজেএসও ইতিহাসে অন্যতম বড় অংশগ্রহণ হিসেবে বিবেচিত।
রাজশাহী আঞ্চলিক পর্বে অংশগ্রহণ করে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, নওগাঁ ও সিরাজগঞ্জ জেলার শিক্ষার্থীরা। রাজশাহী অঞ্চলের আঞ্চলিক পর্বের উদ্বোধন হয় সকাল ৮ টা ৩০ মিনিটে। এরপর এক ঘন্টা পনেরো মিনিটের পরীক্ষা পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড সরকারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক প্রফেসর মোয়াজ্জেম হোসেন, রাজশাহী অঞ্চলের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সহকারী পরিচালক মোঃ আলমাছ উদ্দিন, অনন্যা শিশু শিক্ষালয়ের প্রতিষ্ঠাতা মো. মাসুদ রানা এবং প্রথম আলোর রাজশাহীর প্রতিবেদক আবুল কালাম মুহাম্মদ আজাদ।
এদিকে সকাল ৯ টায় খুলনা আঞ্চলিক পর্বের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের খুলনা ব্রাঞ্চের ম্যানেজার মোহাম্মদ ফেরদৌস হাসান, খুলনা জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ ফারুকুল ইসলাম এবং বাংলাদেশ বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. ফারসীম মান্নান মোহাম্মদী। এতে অংশগ্রহণ করে খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, নড়াইল, মাগুরা, পিরোজপুর ও ফরিদপুর জেলার শিক্ষার্থীরা। এখানেও এক ঘন্টা পনেরো মিনিটের একটি পরীক্ষা পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। এরপর শুরু হয় বিশেষ আকর্ষণ প্রশ্নোত্তর পর্ব। যেখানে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছে বিজ্ঞান বিষয়ক বিভিন্ন প্রশ্ন করার সু্যোগ পায়।
শিক্ষার্থীদের নানান প্রশ্নের উত্তর দেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. ফারসীম মান্নান মোহাম্মদী, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী মো. দিদারুল ইসলাম ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো: তারিকুল ইসলাম। এরপর আঞ্চলিক পর্বে বিজয়ীদের মেডেল এবং সার্টিফিকেট বিতরণের মাধ্যমে শেষ হয় খুলনা আঞ্চলিক অলিম্পিয়াড। খুলনায় প্রাইমারী ক্যাটাগরিতে ১২ জন, জুনিয়র ক্যাটাগরিতে ২২ জন এবং সেকেন্ডারি ক্যাটাগরিতে ২৭ জন শিক্ষার্থীকে পুরস্কৃত করা হয়।
বিডিজেএসও আঞ্চলিক পর্বের বিজয়ীরা অংশ নিবে ঢাকায় অনুষ্ঠিত জাতীয় পর্বে। জাতীয় পর্ব থেকে নির্বাচিত সেরা প্রায় ৬০ জন শিক্ষার্থীকে নিয়ে আয়োজন করা হবে বিডিজেএসও ক্যাম্প, যেখানে তারা নিবিড় প্রশিক্ষণ ও প্রস্তুতির সুযোগ পা্বে। ক্যাম্পের বিভিন্ন পারফরম্যান্স অনুযায়ী বাছাই করা হবে সেরা ৬ জন প্রতিযোগীকে, যাদের নিয়ে গঠিত হবে ডিসেম্বরে রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত ২২তম আন্তর্জাতিক জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াড(আইজেএসও)-এর বাংলাদেশ দল ২০২৫। ২০১৫ সাল থেকে বাংলাদেশ বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ সমিতি নিয়মিত ভাবে এই অলিম্পিয়াডে দল পাঠিয়ে আসছে।
বরাবরের মতো এবারও বিডিজেএসএও যৌথভাবে আয়োজন করেছে বাংলাদেশ বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ সমিতি ও বাংলাদেশ ফ্রিডম ফাউন্ডেশন। প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে আছে আল আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড। ম্যাগাজিন পার্টনার হিসাবে আছে কিশোর আলো ও বিজ্ঞানচিন্তা। আয়োজন সহযোগী হিসেবে আছে ম্যাসল্যাব এবং রকমারী।
বিডিজেএসও-২০২৫ সম্পর্কিত সকল তথ্য, রেজাল্ট এবং তারিখ জানা যাবে https://bdjso.org/ ওয়েবসাইট থেকে।


