সহজ মারপ্যাচে ভোগান্তিতে রেলের যাত্রী, সিস্টেম পরিবর্তনের আহ্বান

টেকভিশন২৪ ডেস্ক: সহজ মারপ্যাচে ভোগান্তিও প্রতারণার শিকার হচ্ছে রেলের যাত্রী। অনলাইন টিকেট সিস্টেমে তাই পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়েছে গ্রাহক স্বার্থ নিয়ে কাজ করা সংগঠন বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন।

আজ গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, দিন দিন রেলের যাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধি, দাঁড়িয়ে টিকেট কাটায় ভোগান্তি, কালোবাজারি বন্ধে ও হয়রানি প্রতিরোধে সরকার ডিজিটাল সেবায় অর্থাৎ অনলাইনে ঘরে বসে টিকিট কাটতে রেল সেবায় অনলাইন টিকিট সিস্টেম চালু করে। বর্তমানে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সহজ ডট কম বাংলাদেশ রেলওয়ের সাথে অনলাইন টিকেট বিক্রিতে যুক্ত হয়।

কিন্তু এই প্রতিষ্ঠানটি দায়িত্ব নেবার পর থেকেই নানা ধরনের অনিয়ম ও অভিযোগ করতে থাকে অনলাইন সেবা প্রাপ্তির যাত্রীরা।

বিশেষ করে গত ৬ই জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মহিউদ্দিন রনির অনলাইনে টিকিট কাটতে গিয়ে তার কাছ থেকে টাকা কেটে নিলেও টিকিট না দেওয়ায় সে প্রতারণার অভিযোগ এনে আন্দোলনের পাশাপাশি ভোক্তা অধিদপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেন। এবং গত বুধবারে ভোক্তা অধিদপ্তর রনির অভিযোগ এর সত্যতা প্রমাণিত করেন এবং সহজ ডট কম কে দুই লাখ টাকা জরিমানা করেন। আন্দোলনকারীর রনির রেল সেবা নিয়ে আরো বেশ কিছু অভিযোগ থাকায় তার আন্দোলন এখনও অব্যাহত রেখেছে।

আমাদের পর্যবেক্ষণে আমরা লক্ষ্য করি যে সহজ ডট কমে টিকিট প্রদানের ক্ষেত্রে যে মারপ্যাচ রয়েছে তা যাত্রীরা সহজে না বুঝার কারণে প্রতারনার অভিযোগ ও হয়রানির বিষয়টি দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। যদিও বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা আছে যদি কোন গ্রাহক এর কাছ থেকে টিকিটের টাকা কেটে নেয়া হয় এবং টিকেট প্রদান করা না হয় তবে সেই গ্রাহককে ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে কেটে নেওয়া টাকা ফেরত প্রদান করা হবে। কিন্তু অনেক গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা কেটে নেওয়ার পর টিকিট না দেওয়ায় এবং তার কাছে অতিরিক্ত অর্থ না থাকায় জরুরি প্রয়োজনেও ওই যাত্রী অন্য কোন পরিবহনে যাত্রা করতে পারে না।

দেখা যায় একজন যাত্রী যখন অনলাইনে টিকিট কাটতে সহজ ডটকমের লগ ইন করে তখন তার তথ্য ফর্ম পূরণ করার পর সিট এর মূল্য বাবদ টাকা চাওয়া হয়। গ্রাহক টিকিটের মূল্য পরিশোধ অপশনে তার পিন নাম্বার দিলে টাকা কেটে নেয়া হয়। কিন্তু দেখা যায় তার টিকেটটি আর কনফার্ম হয়নি। কারণ হিসেবে অনুসন্ধান করে জানা যায় তার তথ্য পূরণ এবং অর্থ প্রদান করার ক্ষেত্রে তার সর্বোচ্চ সময়ে নির্ধারণিত ছিল ১৫ মিনিট। কিন্তু তার এই সময় অতিরিক্ত হওয়ায় সেই যাত্রী টিকিটটি পাচ্ছে না।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় সাইডে প্রবেশ করতে সময় ক্ষেপণ, নেটওয়ার্ক দুর্বলতা, এবং অতিরিক্ত যাত্রীদের একই সাথে সাইটে প্রবেশ করার কারণে নির্দিষ্ট সময়ের অতিরিক্ত সময় বেশিরভাগ যাত্রীদের লেগে যাচ্ছে। মূলত এ সকল বিরম্বনার কারণেই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা কেটে নেয়া হলোও যাত্রীরা কাঙ্খিত টিকিট পাচ্ছে না। অনেক যাত্রীদের আবার অভিযোগ রয়েছে যে সহজ ডট কম নিজেই টিকেট ব্লক করে রেখে কালোবাজারিতে বিক্রি করছে। এই বিষয়টি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্ত করতে পারে বলে আমরা মনে করি। তবে আমাদের পরামর্শ থাকবে সহজ ডট কম এর বর্তমান সিস্টেম পরিবর্তন করে আরও সহজতর করতে।

যেমন সাইটে প্রবেশ করার পর যাত্রী তার কাঙ্খিত আসন আগে নিশ্চিত করবে, তারপর তার কাছ থেকে সিটের মূল্য পরিশোধ করতে অর্থ চাওয়া হবে। অর্থ পরিশোধ এর সাথে সাথেই যাত্রীকে টিকিট কনফার্ম করতে হবে। অর্থ কেটে নেবার পর কোনভাবেই যাত্রীকে টিকিট থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। আর যদি কোন কারণবশত নেটওয়ার্ক বা সিস্টেমে বিলম্ব দেখা যায় তাহলে তাৎক্ষণাৎ যাত্রীকে মেসেজ দিয়ে কারন ব্যাখ্যা করতে হবে।

উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন