টেকভিশন২৪ ডেস্ক: মাল্টি-মোডাল ট্র্যাভেল প্ল্যাটফর্ম ‘যাত্রী’ সম্প্রতি গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিল (জিসিসি) দেশগুলোতে ‘সাফির’ নামে আত্মপ্রকাশ করেছে এবং ইতোমধ্যে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। যেখানে ‘সাফির’ এর মূল লক্ষ্য এই অঞ্চলের গ্রাহকদের একটি সমন্বিত ও পরিপূর্ণ পরিবহণ সেবা ব্যবস্থা প্রদান করা। যাত্রী তাঁদের প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে এ পর্যন্ত ২৩ কোটিরও বেশি টিকিট বিক্রয় করেছে,পাশাপাশি ৬,০০০ বাস ৬০,০০০ চালক, ৪০টি লঞ্চ সার্ভিস এবং ১৯ লক্ষ নিবন্ধিত ব্যবহারকারী বর্তমানে তাঁদের সেবার আওতাধীন রয়েছে।
বাংলাদেশের পরিবহন খাতকে ডিজিটাইজ ও প্রযুক্তিবান্ধব হিসেবে গড়ে তুলতে কার্যকক্রম শুরু করে যাত্রী। এরই মধ্যে তারা একটি সম্পূর্ণ প্রযুক্তি নির্ভর নিজস্ব পূর্ণাঙ্গ ইনভেন্টরি সিস্টেম তৈরি করেছে, যা বাস ও লঞ্চ ব্যবসা পরিচালনাকে আরও স্বচ্ছ ও ঝামেলাহীন করেছে। এর পাশাপাশি, এই প্রতিষ্ঠান দেশজুড়ে বিভিন্ন রুটে অনলাইন বাস টিকিটিং সেবা এবং গাড়ি রেন্ট সেবা প্রদান করছে । এসব সেবা প্রদানের মাধ্যমে যাত্রী এখন তার গ্রাহকদের পছন্দ ও সুবিধার ওপর ভিত্তি করে সর্বোচ্চ মানসম্মত ভ্রমণ সেবা নিশ্চিত করতে সক্ষম।
‘জিসিসি’ অঞ্চলের ০৬টি দেশের জন্য অভিন্ন ভিসা নীতি প্রণয়নের যে পরিকল্পনা সেই অঞ্চল সংশ্লিষ্টদের রয়েছে, তা যাত্রীর জন্য একটি বিশাল সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে এধরণের মাল্টিমোডাল ট্র্যাভেল প্ল্যাটফর্মের যেরকম সফল কার্যক্রম দেখা যায়, জিসিসিতে-ও রয়েছে তা বাস্তবায়নের উজ্জ্বল সম্ভাবনাময় সুযোগ। জাতিসংঘের বিশ্ব পর্যটন সংস্থার তথ্য অনুযায়ী- ২০২৩ সালে জিসিসি অঞ্চলে অভ্যন্তরীণ পর্যটন খাতের ব্যয় ছিলো ১০০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি; অন্যদিকে, বহির্গামী পর্যটনের ব্যয় ৭০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়। ২০৩০ সালের মধ্যে ২০০ মিলিয়ন গ্রাহককে ভ্রমণ সেবা প্রদান করার উদ্দেশ্যে এই অঞ্চলে যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়েছে, তা বাস্তবায়ন ও অর্জনে এই অঞ্চলের পরিবহন অবকাঠামোকে আরও সুদৃঢ় ও সুসংগঠিত করতে গুরুতপূর্ণ ভূমিকা রাখবে যাত্রী। যার ধারাবাহিকতায়, ইতোমধ্যেই জিসিসি অঞ্চলের পরিবহন সেবা নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করা অন্যতম প্রযুক্তিনির্ভর প্রতিষ্ঠান Eilago এর সাথে যৌথ কার্যক্রম পরিচালনার উদ্দেশ্যে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে যাত্রী।
এর পাশাপাশি, এই অঞ্চলে বেশকিছু উল্লেখযোগ্য সেবা চালু করেছে যাত্রী। যেখানে তারা সৌদি আরব জুড়ে ওমরাহ যাত্রীদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ উমরাহ সার্ভিস এবং রিয়াদ ও দুবাইয়ের হোটেল এবং কর্পোরেট ক্লায়েন্টদের জন্য প্রাইভেট শোফার সার্ভিস চালু করেছে। গ্রাহকদের জন্য একটি পরিপূর্ণ, ঝামেলাহীন সার্বিক সুবিধা সম্পন্ন উমরাহ সার্ভিস ব্যবস্থা প্রদানের কথা মাথায় রেখেই শুরু হয়েছে যাত্রীর এ গ্রাহকবান্ধব সেবা কার্যক্রম। খুব সহজেই saafir.co ওয়েবসাইট সাইট থেকে একজন গ্রাহক এই সেবাটি গ্রহণ করতে পারবে। যেখানে, বাড়ি থেকে গন্তব্য পর্যন্ত পরিবহন, আবাসন, এবং যাত্রাপথে প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যক্তিগত যেকোনো সহায়তা পাবার সুযোগ রয়েছে। স্বল্প মূল্য এবং সহজ বুকিং সিস্টেম ব্যবস্থার মাধ্যমে এই প্যাকেজ পরিকল্পনাগুলো এমনভাবে করা হয়েছে, যা সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের সাধ্যের মধ্যে ওমরাহর মতো প্রার্থনামূলক পবিত্র কাজগুলকে আগের চেয়ে আরও সহজ , সাশ্রয়ী ও নিরাপদ করে তুলবে।
ভবিষ্যতের রূপরেখা অনুযায়ী, যাত্রীর এই সেবা কার্যক্রমগুলো মধ্যপ্রাচ্যের পরিবহন খাতকে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো বড় পরিকল্পনার সূচনা কারযক্রম মাত্র। ভ্রমণকারীদের জন্য প্রযুক্তিনির্ভর, উচ্চ মানসম্মত, স্বল্প সময়ে ঝামেলাহীন ভ্রমণ সেবা প্রদানের লক্ষ্য নিয়েই তারা তাঁদের কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।