টেকভিশন২৪ ডেস্ক: নির্বাচন ঘিরে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে ভুয়া তথ্য ছড়ানো ঠেকাতে একজোট হয়েছে আমাজন, গুগল ও মাইক্রোসফটসহ বিশ্বের ২০টি বড় প্রযুক্তি কোম্পানি। ‘ডিসেপটিভ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স’ বা প্রতারণামূলক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ঠেকাতে কোম্পানিগুলোর মধ্যে চুক্তি হয়েছে বলে বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।
কোম্পানিগুলো বলেছে, এই ধরনের কনটেন্ট শনাক্ত ও প্রতিহত করতে নতুন প্রযুক্তি স্থাপন করা হবে। তবে এই স্বেচ্ছা চুক্তি ক্ষতিকর কনটেন্ট ছড়ানো বন্ধে খুব কম কার্যকরী হবে বলে প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ সংশয় প্রকাশ করছেন।২০২৪ সালের নির্বাচনে এআইভিত্তিক প্রতারণামূলক তথ্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের এই চুক্তি গত শুক্রবার মিউনিখের নিরাপত্তা সম্মেলনে ঘোষণা করা হয়। চলতি বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ভারতের নির্বাচনে ৪০০ কোটি মানুষ ভোট দেবেন বলে এই বিষয়ের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে।এই চুক্তির অঙ্গীকারগুলোর মধ্যে রয়েছে—এআই দিয়ে তৈরি প্রতারণামূলক নির্বাচনী কনটেন্ট সম্পর্কিত ‘ঝুঁকি কমানোর’ জন্য প্রযুক্তি বিকাশের প্রতিশ্রুতি এবং কোম্পানিগুলো যে পদক্ষেপ নিয়েছে, সেই বিষয়ে জনসাধারণের কাছে স্বচ্ছতা বজায় রাখা।অন্যান্য পদক্ষেপগুলোর মধ্যে রয়েছে কোম্পানিগুলো একে অপরের সঙ্গে সর্বোত্তম প্রযুক্তিগুলো ভাগ করে নেওয়া ও প্রভাব বিস্তারকারী কনটেন্ট চিহ্নিত করা সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন করা।
চুক্তির স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে এক্স (টুইটার), স্ন্যাপচ্যাট, অ্যাডোবি, মেটা, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো রয়েছে।এই চুক্তির কিছু ত্রুটি রয়েছে বলে কুইন্স ইউনিভার্সিটি বেলফাস্টের কম্পিউটার বিজ্ঞানী এবং নির্বাচন ও এআই বিষয়ক গবেষক ড. দীপক পদ্মনাভন মনে করেন।বিবিসিকে তিনি বলেন, এআইয়ের মাধ্যমে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি হওয়ার বিষয়টি কোম্পানিগুলো যে স্বীকার করছে তা ইতিবাচক দিক।তিনি আরও বলেন, এসব কনটেন্ট পোস্ট করার জন্য অপেক্ষা করে এবং এরপর এগুলো সরিয়ে ফেলার পরিবর্তে তাদের আরও ‘প্রোঅ্যাকটিভ অ্যাকশন’ বা সক্রিয় পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
সুস্পষ্ট নকল কনটেন্ট শনাক্ত ও সরানো সহজ কাজ। অপরদিকে বাস্তবসম্মত ক্ষতিকর এআই কনটেন্ট প্ল্যাটফর্মে বেশিক্ষণ থাকতে পারে।তবে এই চুক্তির কার্যকারিতা নিয়ে সংশয় প্রকাশের কারণ ব্যাখ্যা করে ড. পদ্মনাভন বলেন, ‘চুক্তিতে গুরুত্ব দিয়ে ক্ষতিকারক কনটেন্ট সংজ্ঞায়িত করা হয়নি।পাকিস্তানি রাজনীতিবিদ ইমরান খানের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, কারাগারে থাকাকালীন বক্তৃতা দেওয়ার জন্য তিনি এআই ব্যবহার করেছেন।চুক্তি স্বাক্ষরকারীরা বলছেন, তারা এমন কনটেন্টকে টার্গেট করবেন, যা নির্বাচনের প্রধান ব্যক্তিত্বদের ‘প্রতারণামূলকভাবে নকল চেহারা, কণ্ঠস্বর বা কর্মকাণ্ড’ পরিবর্তন করে। ভোটাররা কখন, কোথায় ও কীভাবে ভোট দিতে পারবে সে বিষয়ে মিথ্যা তথ্য দেওয়া অডিও, ছবি বা ভিডিও প্রতিরোধ করার চেষ্টা করবে কোম্পানিগুলো।
মাইক্রোসফটের প্রেসিডেন্ট ব্র্যাড স্মিথ বলেন, এআই টুল যাতে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত না হয়, তা নিশ্চিত করার আমাদের দায়িত্ব।এর আগে রাজনৈতিক বিজ্ঞাপনে এআই দিয়ে তৈরি ছবি ও ভিডিওগুলোর বিষয়ে নীতিমালা করেছে গুগল ও মেটা। বিজ্ঞাপনদাতাদের এআই দিয়ে তৈরি কনটেন্টগুলো লেবেল করতে হবে। এই লেবেল করা না হলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করবে মেটা।