পীরগঞ্জে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং সেন্টারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন

ভিত্তিপ্রস্তর ফলক স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে উন্মোচন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি।

টেকভিশন ডেস্ক:  রংপুরের পীরগঞ্জে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এমপি।

আজ (বৃহস্পতিবার)  বেলা ১২টায় ঢাকা থেকে অনলাইনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত হয়ে তিনি ভিত্তিপ্রস্তর ফলক উন্মোচন করেন। আইটি খাতে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির লক্ষ্যে দেশের আটটি স্থানে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন করছে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ। এরই অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম, সিলেট, রংপুর, নাটোর, কুমিল্লা, নেত্রকোণা, বরিশাল ও মাগুরায় স্থাপন করা হচ্ছে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার। বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে প্রায় ৫৩৩ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পের কাজ ২০১৭ সালে শুরু হয়।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এমপি উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, প্রতিযোগিতার এই যুগে আমাদের তরুণদের টিকে থাকতে হলে প্রযুক্তি শিক্ষার বিকল্প নাই। আর এজন্যই আমরা একটি প্রযুক্তি নির্ভর জাতি গড়ে তুলতে চাই। এখন সবার হাতে হাতে মোবাইল ফোন। আমরা দৈনন্দিন অনেক কাজই এখন মোবাইল ফোনের মাধ্যমে করতে পারছি। আমাদের রপ্তানি খাতেও ডিজিটাল ডিভাইস অবদান রাখতে পারে। তিনি বলেন, রংপুর সবসময়ই অবহেলিত এলাকা ছিলো, এখানে কখনো শিল্পায়ন হয়নি। রংপুরবাসীর উন্নয়নে সরকার নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। ‘শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার’ থেকে ট্রেনিং নিয়ে এখানকার তরুণ-তরুণীরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবে, অনেক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এখন থেকে আর চাকুরির পেছনে ছুটতে হবে না, নিজেরাই উদ্যোক্তা হয়ে মানুষকে চাকুরি দিবে।

ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ এর ব্রেইন চাইল্ড এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে একদিকে যেমন বেকারত্ব দূর হবে, একইসাথে তথ্যপ্রযুক্তিতে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে একরকম উল্লম্ফন সৃষ্টি হবে। মূলত এস.এস.সি ও এইচ.এস.সি পর্যায়ে ছাত্র-ছাত্রীদের আইটিতে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলার মাধ্যমে মানবসম্পদ উন্নয়নের লক্ষ্যে এই প্রকল্প গৃহীত হয়। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরি করে একাডেমিয়া এবং আইটি ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে সেতুবন্ধন প্রতিষ্ঠা করা হবে এই প্রকল্পের মাধ্যমে। ফলে আইটি/আইটিইএস খাতে বাংলাদেশের যুব সমাজের আত্ম-কর্মসংস্থানের ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি হবে।

বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন প্রকল্প ও কর্মসূচির মাধ্যমে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত ১৬,০০০ জনকে আইটির বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে এবং ১৩ হাজারের অধিক তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমান সরকার চট্টগ্রামে সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক, শেখ হাসিনা ইন্সটিটিউট অব ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি এবং আরো ১১টি জেলায় শেখ কামাল আইটি ইনকিউবেটর ও ট্রেনিং সেন্টার স্থাপনের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে দেশের প্রতিটি জেলায় আইটি ইনকিউবেশন ও ট্রেনিং সেন্টার স্থাপন করা হবে।

বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সচিব) হোসনে আরা বেগম এনডিসি জানান, দেশে এই মুহূর্তে ৫টি হাই-টেক পার্ক বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুত। গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ইতোমধ্যে বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটিতে ৩৫৫ একর জমিতে বিভিন্ন কোম্পানি কাজ করছে। এখান থেকে উৎপাদিত পণ্য বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন পার্কগুলোতে বেসরকারি খাত থেকে প্রায় ৩২৭ কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে। এর বিপরীতে ২০১৬ সাল থেকেই হাই-টেক পার্ক থেকে আয় শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যেই হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ ৫০ কোটি টাকার বেশি আয় করেছে।

রংপুর জেলা প্রশাসক মো. আসিব আহসানের সভাপতিত্বে উক্ত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন